Advertisement
E-Paper

শীতে ঝুঁকি বাড়ে ফুসফুসে সংক্রমণের

শীতের শুরু থেকেই সাবধানে থাকলে এড়ানো যায় সংক্রমণ। জ্বর, সর্দি-কাশি দু’তিন দিনের বেশি ফেলে না রেখে চিকিৎসকের কাছে গেলে সহজেই হবে উপশম, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

An image of Cough and Cold

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অরিতা ধারা ভট্ট

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৪:৫৯
Share
Save

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত পেরিয়ে শীতের আগমন তেমন বোঝা যায় না এখন। বরং গ্রীষ্ম, বর্ষা আর খানিক শীত এটাই আবহাওয়ার প্রকৃতি। আবহাওয়া বদলের সঙ্গে শরীরের মানিয়ে নিতে খানিক সময় লাগে। বিশেষত শীতের শুরুতে আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে সর্দি, কাশি, জ্বর যেন আঁকড়ে ধরছে ছোট থেকে বড় সকলকে। কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে ফুসফুসেও। বয়স্ক ও ছোটদের ক্ষেত্রে এর সম্ভাবনা বেশি। তবে একটু সাবধানে থাকলে, জ্বর, সর্দি-কাশি দু’তিন দিনের বেশি ফেলে না রেখে চিকিৎসকের কাছে গেলে সহজেই হবে উপশম, জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

পালমোনোলজিস্ট অনির্বাণ নিয়োগীর কথায়, “প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় বয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। সে ক্ষেত্রে গোড়া থেকেই সাবধান থাকতে হবে। ঠান্ডা জল না খাওয়া, এই মরসুমে অনুষ্ঠান বাড়িতে আইসক্রিম এড়িয়ে চলা, বেশি রাতে বা ভোরে না বেরোনো মেনে চলা উচিত সকলের। যাঁদের প্রয়োজন ইনহেলার নেওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামও নিয়মিত করা ভাল।”

সংক্রমণের ধরন

তিনি আরও বললেন, “ফুসফুসে সংক্রমণের কয়েকটা ধাপ হয়। ভাইরাস বা ব্যাক্টিরিয়া থেকে সংক্রমণ হতে পারে। আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে সমস্যা হলে সাধারণত পাঁচ-সাত দিনে কমে যায়। গরম জলে ভাপ নেওয়া, গার্গল করা, ঈষদুষ্ণ জল খাওয়া, চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। তবে অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া একেবারেই খাওয়া উচিত নয়।” জ্বর না এলে, কফ হলুদ না হলে অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়াই ভাল, পরামর্শ তাঁর।আর লোয়ার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে সংক্রমণ হলে কাশি বাড়ে। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, কফ দেখা যায়। কফের রং হলদে বা সবজে হতে পারে। আবার ফ্যারিনজাইটিস, সাইনাইটিসের মতো সংক্রমণের নানা ধরনও নজরে আসে। আর একটু বেশি সংক্রমণ হলে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস হতে পারে। জলও জমতে পারে ফুসফুসে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাড়াবাড়ি হলে অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সারতেও অন্তত সাত থেকে দশ দিন সময় লাগবে। এ ছাড়াও অ্যালার্জি বা অন্য কারণেও সর্দি, কাশি হতে পারে। দুই থেকে তিন দিন নাক দিয়ে জল পড়া, গলা ব্যথা, জ্বর ভাব থাকতে পারে নানা কারণে। তার বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কফ, রক্ত পরীক্ষা, এক্সরে করাতে হতে পারে। ছোটদের ক্ষেত্রে অনেকক্ষণ ধরে গরম জামা পরে থাকায় ঘাম হলে মুছিয়ে দিতে হবে। জামা ভিজে গেলে তা দ্রুত বদলে দিতে হবে। ঠান্ডা জলেও স্নান করানো যাবে না।

সাবধানতাই শেষ কথা

চিকিৎসকেরা জানান, ফুসফুসের বাইরে দুটো স্তর থাকে। সেখানে জল জমার প্রবণতা থাকে। আগে প্রায়ই টিউবারকিউলোসিসের কথা শোনা যেত। সেটাও হত বুকে জল জমার কারণে। আর প্লুরায় সংক্রমণ ছড়ালে শ্বাস নিলে বুকে, পিঠে ব্যথা হতে পারে। কোভিড পরবর্তী সময়ে বয়স্কদের জন্য বেশ কিছু ভ্যাকসিন নেওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সিওপিডি থাকলে ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোকক্কাল, কোভিড, চিকেন পক্স (সিঙ্গল), হুপিং কাফ ভ্যাকসিন নিতে হবে তাঁদের। অন্য রোগ থাকলে বা ‘হাই রিস্ক’ রোগী যাঁরা, তাঁদের বাইরে বার করার আগে মাস্ক পরারও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।এক কথায়, সাবধানে থাকলে তবেই শীতের আনন্দ উপভোগ করা যাবে। ঋতুবৈচিত্র বোঝা না গেলেও শীতের নলেন গুড়, পিঠেপুলি, মুখরোচক খাবারের স্বাদের বৈচিত্র পেতে সুস্থ থাকতে হবে ছোট থেকে বড় সবাইকেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Winter care Health Care Tips Winter cough and cold Fever Respiratory problems

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}