দিনের প্রতিটি খাবারে কার্বোহাইড্রেট কম ও উপকারি ফ্যাট বেশি থাকলে ওজন ও ভুঁড়ি, সব-ই কমবে৷ ছবি: আইস্টক।
এই ডায়েট মানলে ব্যায়াম না করা সত্ত্বেও ভুঁড়ি কমে৷ নিয়ম মানলে ভুঁড়ি সঙ্গেই কমবে ওজনও৷ ৩২ দিনে সুস্থ শরীরে প্রায় ৬–৬.৫ কেজি ওজন কমানোর ক্ষমতা রাখে এই খাদ্যাভ্যাস৷ প্রথম চার দিন একটু কষ্ট করে ১২০০ ক্যালোরির মতো খেতে হয়৷ তার পর থেকে ১৬০০ ক্যালোরি৷ পুরুষ হলে আরও ১০০–২০০ ক্যালোরি বেশি৷ তবে রোগা হওয়ার অন্য ডায়েটের চেয়ে এর নিয়ম একদম আলাদা। অন্যগুলিতে কার্বস প্রায় থাকেই না, ফ্যাট জাতীয় খাবার থাকে কম। এতে আবার কার্বোহাইড্রেট খেতে হয় কম, আর ফ্যাট বেশি৷
ভাবছেন, ফ্যাট খেলে আর ফ্যাট কী ভাবে কমবে? পুষ্টিবিদদের আশ্বাস, কমবে৷ পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহর মতে, দিনের প্রতিটি খাবারে কার্বোহাইড্রেট কম ও উপকারি ফ্যাট বেশি থাকলে ওজন ও ভুঁড়ি, সব-ই কমবে৷ কাজেই মোট ক্যালোরির ৩০ শতাংশ যেন ফ্যাট থেকে আসে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে৷ যার অধিকাংশই হবে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড বা মুফা৷ স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকবে ১০ শতাংশের মধ্যে৷ কোলেস্টেরল ৩০০ মিলিগ্রার কম৷ বাদ যাবে ট্রান্স ফ্যাট৷
তাই ভাজা মিষ্টি, প্রসেস করা খাবার, রেড মিটের বদলে দেশি মুরগির মাংস, মাছ, ডিম, টাটকা সব্জি, বিনস, বীজ, অ্যাভোক্যাডো, ডাল, বাদাম, ক্যানোলা অয়েল, বাদাম তেল, পিনাট মাখন, অলিভ, কুমড়ো–তিষি–সূর্যমুখী ইত্যাদির বীজ, ডার্ক চকোলেট, অলিভ অয়েলের সঙ্গে অল্প ব্রাউন রাইস, হোলহুইট ব্রেড–পাস্তা খেতে হবে৷
আরও পড়ুন: রোজ এই সব খাবার রাখুন পাতে, রক্তে প্লেটলেটের পরিমাণ বাড়বে সহজে
ইয়োগার্টে মেশান চকোলেট চিপস৷
কী খাব, কী ভাবে খাব, কী কী বাদ?
প্রথম চার দিন দিনে চার বার ৩০০ ক্যালোরি করে মোট ১২০০ ক্যালোরির এমন খাবার খেতে হবে যাতে পেটের গোলমাল না হয়। এই সময় প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিন–ব্রকোলি–পেঁয়াজ থেকে শুরু করে যা যা খেলে গ্যাসট্রিকের সমস্যা হয় সে সব বাদ থাকবে৷ নুন কম খেতে হয়৷ বাদ থাকে ভাত–রুটি–পাস্তা–কলা ইত্যাদি৷ দিনে কম করে দু’লিটার জল খেতে হয়, আদা, শশা, লেবু, পুদিনা মিশিয়ে৷ ইচ্ছে হলে এক এক বোতল জলে এক একটা মিশিয়ে খেতে পারেন৷ চার ঘণ্টার বেশি খালি পেটে থাকা বারণ৷
এ বার মূল ডায়েটিং৷ মেয়েরা দিনে চার বার ৪০০ ক্যালোরি আর ছেলেরা ৪৫০ ক্যালোরি করে চার সপ্তাহ খাবেন৷ ব্যায়াম করলে আর একটু বাড়াতে হবে৷ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনার নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী এই ডায়েট সাজিয়ে নিন৷ তার পাশাপাশি মেনে চলুন খাবারে মুফা বাড়ানোর সহজ হিসেব৷ যেমন:
সালাড বা পরিজে মেশান এক চামচ বাদাম ও বীজ৷ সব রকম মিলিয়ে মিশিয়ে৷ সালাডে ড্রেসিং হিসেবে মেশান অলিভ অয়েল৷ হোলহুইট ব্রেডে মাখনের বদলে লাগান অলিভ অয়েল৷ ৫–৬টা আমন্ড এক চা চামচ অলিভ অয়েলে সতে করে মেশান সেদ্ধ সবজিতে৷ ইয়োগার্টে মেশান চকোলেট চিপস৷ দিনে এক টুকরো ডার্ক চকোলেট খান৷ হোল হুইট পাস্তা বা স্যালাডে মেশান অলিভ৷
আরও পড়ুন: টিকায় রুখে দেওয়া যায় এমন রোগ নিয়ে নতুন করে কী ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা?
অলিভ অয়েলের ভূমিকা এই ডায়েটে গুরুত্বপূর্ণ।
কতটা কাজ হয়
ওজন ও ভুঁড়ি তো কমেই সঙ্গে কমে লিভার, হার্ট ও প্যানক্রিয়াসের চারপাশে জমা ফ্যাট৷ ব্যায়াম করতে পারলে আরও ভাল কাজ হয়৷ কার্বোহাইড্রেট ও ক্ষতিকর ফ্যাট কমিয়ে ভাল ফ্যাট খাওয়া হয় বলে কমে প্রদাহের প্রবণতা৷ ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ক্যানসার ও শিরা–ধমনির অসুখ-সহ আরও কিছু জটিল অসুখের আশঙ্কা কমে যায়৷ নিয়ন্ত্রণে থাকে হাই প্রেশার, কোলেস্টেরলও৷ একই ক্যালোরির লো ফ্যাট ডায়েটে কিন্তু এতটা কাজ হয় না৷
এই ডায়েট খেলে গ্যাসট্রিকের কোনও সম্ভাবনা তৈরি হয় না বলে পেটে অহেতুক ফোলাভাব থাকে না৷ নুনও কম খেতে হয়৷ ফলে শরীরে জল জমার আশঙ্কাও কমে৷ সে কারণেও পেট একটু পাতলা লাগে৷ সব মিলিয়ে এর গ্রহমযোগ্যতা দেশে ও বিদেশে অনেক বেশি। ফ্যাট, বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্যও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy