জলে নামতে অনেকেই স্বচ্ছন্দ না হলেও জেনে রাখা জরুরি, সাঁতারের মতো ভাল ব্যায়াম খুব কমই আছে। দিনের জন্য বরাদ্দ নানা রকম ব্যায়ামের পরিবর্তে সাঁতার কাটলেই অনেকটা কাজ সারা হয়ে যায়। পাশাপাশি সাঁতার নানা রোগ থেকে শরীরকে ভালও রাখে। দেখে নেওয়া যাক, সাঁতার কেন উপকারী।
• সাঁতার কাটলে হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস অনেক বেশি সুস্থ থাকে। নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা রোজ সাঁতার কাটেন, তাঁদের হার্টের সমস্যাও কমে অনেকখানি।
• আর্থ্রাইটিসের সমস্যা কিংবা হাঁটু, পায়ের ব্যথা থাকলেও সাঁতার কাটতে পারেন। অনেক সময়ে এই ধরনের রোগে ব্যায়াম করতে সমস্যা হলেও সাঁতারে সাধারণত তা হয় না। অস্টিয়োআর্থ্রাইটিসের মতো রোগে অস্থিসন্ধির যন্ত্রণা, আড়ষ্ট ভাবও কমাতে সাহায্য করে সাঁতার।
• হাঁপানির মতো রোগে সাঁতার খুব ভাল ফল দেয়। আবার সাইনাসের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে সাঁতার। তবে এই দু’টি ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। সাধারণ সুইমিং পুলের জলে ক্লোরিনের মাত্রা কম-বেশি হলে তা কিন্তু রোগের কষ্ট বাড়িয়ে তোলে।
• অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করতে চাইলে সুইমিং অদ্বিতীয়। সাধারণত কোনও মানুষের ওজন এবং ধাতের উপরে নির্ভর করে, এক ঘণ্টা সাঁতারে তাঁর কত পরিমাণ ক্যালরি খরচ হবে। তবে সার্বিক ভাবে অন্যান্য সাধারণ ব্যায়ামের তুলনায় সাঁতারে ক্যালরি বার্নের হার বেশি।
সাঁতারের সতর্কতা
• সাঁতার কাটতে গিয়ে অনেক সময়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। একই সুইমিং পুল একাধিক মানুষ ব্যবহার করার ফলে ত্বকে অ্যালার্জি, র্যাশ বেরোতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
• অত্যধিক ক্লান্ত থাকলে, ঠান্ডা লাগলে কিংবা প্রচণ্ড গরম থেকে তেতেপুড়ে এলে তক্ষুনি সাঁতার কাটা ঠিক নয়। সামান্য বিশ্রাম নিয়ে করুন
• সাঁতার কাটার সময়ে কখনওই মুখে চিউয়িং গাম জাতীয় কিছু রাখবেন না। এতে বিপদের আশঙ্কা থাকে
• রাতে সাঁতার কাটতে হলে পুলের অপেক্ষাকৃত আলোকিত জায়গায় সাঁতার কাটাই শ্রেয়
• বিদ্যুৎ চমকালে বা মেঘ ডাকলে জল থেকে উঠে পড়ুন। সেই সময়ে সাঁতার কাটা থেকে বিরত থাকাই উচিত
• সাঁতার কাটার সময়ে লাইফগার্ডের নিয়মাবলি মেনে, তাঁর কথা শুনেই এগোনো ভাল
• সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যজনিত অনিদ্রাও দূর করে সাঁতার। ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা নিয়মিত সাঁতার কাটলে ভাল থাকবেন। আবার ঘুমও হবে ভাল।
• স্ট্রেস, হতাশা কাটিয়ে সাঁতার মুডও ভাল করে তোলে। ডিমেনশিয়া জাতীয় নানা মানসিক সমস্যায় মস্তিষ্ক ও মন ভাল রাখার অন্যতম উপায় হিসেবে সাঁতারকে বেছে নেন বিশেষজ্ঞরা।
• সাঁতার সাধারণত বেশির ভাগ মানুষের জন্যই উপকারী। তবে সোরিয়াসিস জাতীয় ত্বকের রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের সুইমিং পুলের জলে সাঁতার কাটা উচিত নয়। এতে সমস্যা বাড়তে পারে। আবার অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা ঠিক কত দিন পর্যন্ত সাঁতার কাটতে পারবেন, সে বিষয়েও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পদ্মশ্রী খেতাবজয়ী সাঁতারু বুলা চৌধুরী বলছেন, ‘‘মাথা থেকে পায়ের আঙুল... সাঁতার গোটা শরীরের ব্যায়াম করিয়ে নেয়। এমনকি শুধু জলে ভেসে থাকলেও শরীরের জন্য ভাল। আর অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সাঁতার কাটলে ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগও সেরে যায়।’’ এক কথায় সাঁতার আপাদমস্তক খেয়াল রাখে। পেশি মজবুত করা, জোর বা স্ট্রেংথ বাড়ানো, শক্তি বৃদ্ধি... সাঁতারের দ্বারা সম্ভব সবই। সাঁতারের বেসিক শিখে নানা ধরন রপ্ত হলে সুইমিং রেজিমে ব্রেস্টস্ট্রোক, ব্যাকস্ট্রোক, সাইডস্ট্রোক, বাটারফ্লাই রাখতে পারেন।
নেহাতই হাইড্রোফোবিয়া (জলে ভয়) না থাকলে সাঁতারকে সঙ্গী করতে পারেন। প্রশিক্ষিতের সাহায্যে ভয়কে জয় করাও সম্ভব। দেখবেন, কী ভাবে যেন ভালবেসে ফেলেছেন জলকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy