দাঁতের সমস্যা সারিয়ে তুলুন বিশেষ কিছু নিয়মে। ছবি: আইস্টক।
দাঁত সম্পর্কে বাংলা প্রবাদ সর্বৈব সত্য। সময় থাকতে সত্যিই আমরা দাঁতের মর্যাদা বুঝি না। দাঁতের কোনও সমস্যা যে মুহূর্তে কাতর করে তোলে, একমাত্র তখনই মনে পরে সারা দিনে কুলকুচি আর ব্রাশটুকু ছাড়া দাঁতের জন্য নিয়মমাফিক আলাদা কোনও যত্ন সে ভাবে আর নেওয়াই হয়নি।
দন্তবিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁতের যাবতীয় সমস্যার মূল কারণ দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার। প্রসেসড ফুড বা প্রিজারভেটিভযুক্ত খাবারে অতিরিক্ত সুগার থাকে। এই চিনি খুব তাড়াতাড়ি দাঁতের ক্ষয় করে। যাঁদের বেশি কফি খাওয়ার নেশা, তাঁদেরও দাঁত ক্ষয়ও হয় তাড়াতাড়ি। ছোপও পড়ে।
‘‘আমাদের দাঁতগুলো টানা একটা সমতল স্ট্রাকচার নয়, তার মধ্যে ভাঁজ আছে, ফাঁক আছে। এর ফাঁকে ফাঁকেই এই ধরনের খাবার থেকে গিয়ে একটি পাতলা স্তর তৈরি করে। এই আঠালো স্তরটি পরতের মতো আটকে থাকে দাঁতের গায়ে। খুব ভাল করে ব্রাশ না করলে এই স্তরটি ওঠে না। দিনে দু’বার ব্রাশ করার পাশাপাশি যে কোনও স্টার্চ জাতীয় খাবার খেলেই এক বার ভাল করে কুলকুচি করে নেওয়া প্রয়োজন। শুধু খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস বদলালেই চলবে না, দাঁত সুস্থ রাখার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও কিছু খাওয়ার পর ভাল করে মুখ ধোওয়া এবং নিয়মিত ওরাল হাইজিন মেনে চলা।’’— জানালেন দন্তবিশেষজ্ঞ আবির কুমার মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: যৌন সংসর্গ থেকেও সংক্রামিত হতে পারে ডেঙ্গি! বলছে গবেষণা
দাঁতের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার লক্ষণ
শ্বাসে দুর্গন্ধ এমন এক লক্ষণ যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন দাঁতের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। মাড়ি থেকে রক্তপাত হলেও সাবধান। অনেক সময় দাঁত তার গোড়া থেকে নড়ে যায়, কোনও কিছু খেলেই ফাঁকে ফাঁকে খাবার ঢুকে যায়। এর কোনওটাই সুস্থ দাঁতের লক্ষণ নয়।
এ ছাড়া অনেক সময় দাঁতের মাড়ি ফুলে যায়, ব্যথা হয়, ঠান্ডা কিছু খেলেই দাঁতে শিরশিরানি অনুভব হয়— এ সমস্ত কিছুই আপনাকে জানান দেয় আপনার দাঁতের সমস্যার কথা। দাঁতে কোনও সমস্যা থাক বা না থাক, তিন মাস অন্তর এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে কোনও সমস্যার পূর্বাভাস পেলেই সচেতন হওয়া যায়।
তিন মাস অন্তর এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দাঁতের সমস্যা এড়াতে মূল যত্ন
দাঁতের সমস্যাকে নিত্যজীবনে কাছে ঘেঁষতে দিতে না চাইলে কিছু মূল নিয়ম মেনে চলতেই হবে।
ফাস্ট ফুড বা সফ্ট ড্রিঙ্কের প্রতি যাঁদের আসক্তি আছে, তাঁরা অতি অবশ্যই নিয়ম করে ডাক্তার দেখান ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ব্যবস্থা করুন। তা না হলে সমস্যা কমবে না। তামাক জাতীয় বস্তুর প্রতি আসক্তি থাকলে, দাঁতের যতই যত্ন নিন কাজের কাজ কিছুই হবে না। মদ্যপানও দাঁতের স্বাস্থ্যহানির অন্যতম কারণ। খুব বেশি শক্ত ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজা কখনই উচিত নয়। একটা ব্রাশ কুড়ি দিন থেকে এক মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। ব্রাশ করার সঠিক পদ্ধতিও জানা দরকার। ব্রাশ করার সময় খুব বেশি চাপ যেমন নয়, তেমনই খুব আলগা চাপও নয়। নরম অথচ দাঁতের ফাঁকে পৌঁছতে পারে এমন ব্রাশ ব্যবহার করুন। দাঁতে গঠনগত কোনও ত্রুটি থাকলে কিংবা কোনও সমস্যা থাকলে প্রথম থেকে সতর্ক হোন। শিশুদের দাঁতে কম বয়সেই কোনও সমস্যা ধরা পড়লে তার জন্যও দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
আরও পড়ুন: শীত আসছে, গিজার রক্ষণাবেক্ষণ করুন এ সব উপায়ে
স্টার্চ জাতীয় খাবার, লজেন্স বা চকোলেট খেলে ভাল করে মুখ ধুয়ে এক বার ব্রাশ করে নিতে পারলে ভাল হয়। কোনও ব্রাশ বা মাউথ ফ্রেশনার ব্যবহার করলে তা বাজারচলতি ধারণা বা বিজ্ঞাপনী চমকের উপর ভরসা না করে চিরকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ব্যবহার করুন। প্রতি দিন একটা করে লবঙ্গ কিছু ক্ষণের জন্য মুখে রাখুন। শ্বাসের দুর্গন্ধ যেমন সরবে, তেমনই লবঙ্গের রসে দাঁতের টুকটাক সমস্যাও দূরে থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy