Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
liver

ফ্যাটি লিভার, সিরোসিসকে ভয়? কেবল খাদ্যাভ্যাসে বদল যথেষ্ট নয়, মানতে হবে এ সবও

লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী? চিকিৎসক জানালেন তাঁর পরামর্শ।

লিভারকে সুস্থ রাখতে ছেঁটে ফেলতে হবে কিছু বদভ্যাস। ছবি: শাটারস্টক।

লিভারকে সুস্থ রাখতে ছেঁটে ফেলতে হবে কিছু বদভ্যাস। ছবি: শাটারস্টক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ১২:২৮
Share: Save:

অনিয়ন্ত্রিত জীবন, খাদ্যাভ্যাসে বদল, নিত্য ইঁদুরদৌড়ে শরীরের দিকে খেয়াল না রাখা, অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান— এগুলোই যদি আধুনিক জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকে, তা হলে তার ফল অবশ্যই ফ্যাটি লিভার, বা লিভার সিরোসিসের মতো অসুখ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্ব জুড়েই লিভারের রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চিকিৎসকরাও শঙ্কিত।

গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ভাস্কর পালের মতে, ‘‘লিভারের অসুখ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কিছু বদভ্যাস ও ভুলের কারণেই ডেকে আনি আমরা। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাদের বাবা-মায়েরা যদি প্রথম থেকেই সচেতন হন, তা হলে জীবনশৈলীর উপর ছোটবেলা থেকেই একটা নিয়ন্ত্রণ তৈরি হবে। বড়দেরও উচিত লিভার ভাল রাখার উপায়গুলি আয়ত্তে আনা। লিভার সংক্রান্ত যে সব জটিল রোগ চিকিৎসা শাস্ত্রে রয়েছে, তার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা, চিকিৎসকদের পরামর্শ সবই নেবেন, কিন্তু প্রচলিত ও সাধারণ সমস্যাগুলি আটকানোর জন্য নিজেরা আর একটু সাবধান হলেই সুস্থতার পথে অনেকটা এগিয়ে থাকা যায়।’’

অনেকেই মনে করেন, কম তেল-মশলার খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, মদ ছেড়ে দেওয়া এগুলোই লিভারকে ভাল রাখার অন্যতম উপায়। কথাটা ভুল নয়। তবে এগুলোই শেষ কথা নয়। লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী? চিকিৎসক জানালেন তাঁর পরামর্শ।

আরও পড়ুন: ঘাড় গুঁজে কাজ ডেকে আনছে স্পন্ডিলোসিস, বিপদ বাড়ার আগেই সুস্থ থাকুন এ সব উপায়ে

ডায়েটে রাখুন টকদইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।

সাপ্লিমেন্ট: আধুনিক জীবনে এই বিষয়টির চাহিদা তুঙ্গে। অনেকেই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া নিজের ইচ্ছে মতো সাপ্লিমেন্ট বেছে নেন। লিভারের কথা তখন আমরা আর মনে রাখি না। প্রোটিন বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় তাই সতর্ক থাকুন। লিভার ডিটক্সিফাই করে এমন সাপ্লিমেন্ট বাছুন।

বেদনানাশক: পেনকিলারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বেশ কিছু পেনকিলার লিভারের উপর সরাসরি কুপ্রভাব ফেলে। টাইলেনল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে। তাই নিজেই ডাক্তার হয়ে নিজের চিকিৎসা করবেন না।

ফুড ইন স্ট্রেস? ‘না’: আধুনিক জীবনে এটিও একটা নতুন সমস্যা। মানসিক চাপ, বা মন খারাপ ভুলতে অনেকেই খাবার বা মদের মধ্যে নিজেদের মুক্তি খুঁজে পান। এই অভ্যাস দ্রুত তাড়ান। লিভার সুস্থ রাখতে স্ট্রেসের সময় মদ বা খাবার ছোঁবেন না একেবারেই। এই সময় হজম ঠিক মতো হয় না। দিনের পর দিন এমনটা করতে করতে এক দিন কিন্তু লিভার জানান দেবেই।

লো ফ্যাট, কৃত্রিম চিনি এড়ান: সহজে রোগা হতে চেয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট বানিয়ে নেন ও মনে করেন ফ্যাট আটকাতে প্যাকেটজাত লো ফ্যাট ফুড ও চিনি এড়াতে কৃত্রিম চিনির উপরেই ভরসা করা উচিত। এই মনোভাব আগে বর্জন করুন। এতেই আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। রোগা তো হচ্ছেনই না, লিভারও শেষ হচ্ছে তিলে তিলে। কারণ এ সব খাবারে ফ্যাট বাদ দিতে গিয়ে কৃত্রিম ভাবে যোগ করা হয় অ্যাসপার্টেম জাতীয় কৃত্রিম চিনি, যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। মনে রাখবেন, শরীরে ফ্যাটেরও প্রয়োজন আছে। শুধু কতটুকু খাবেন, পরামর্শ নিন পুষ্টিবিদের থেকে। মানুন সেটুকু ডায়েট। বরং পাতে রাখুন অলিভ, ওয়ালনাট জাতীয় খাবার। এ সবে হেলদি ফ্যাট থাকে।

টক্সিন: শরীর থেকে যতটা টক্সিন বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। দিনে কয়েক বার গরম জলে পাতিলেবুর রস দিয়ে সেই জল খান। ডায়েটে রাখুন টকদইয়ের মতো প্রোবায়োটিক। টুকটাক অনিয়ম সামাল দিতে এরাই আপনার সহায়। কোনও কোনও দিন ভারী খাওয়াদাওয়া হলেই ডায়েটে এদের উপস্থিতি বাড়িয়ে দিন।

আরও পড়ুন: টিভি-মোবাইলের আসক্তি তো বটেই, এ সব অভ্যাসও কিন্তু আপনার দৃষ্টিশক্তি কমায়

আমাদের দেশের আবহাওয়ায় মদ্যপান একেবারেই লিভারের বন্ধু নয়।

মদ্যপান: একটু আধটু মদ খেলে কিছু হয় না অথবা দামি মদে ক্ষতি নেই— এ সব নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আর কিচ্ছু নয়। স্রেফ পছন্দ, ভাল লাগা, নেশা থেকে সরতে না চাওয়ার জন্য নিজেরই তৈরি করা আপ্তবাক্য। তাই যত দ্রুত পারেন মদ খাওয়ার অভ্যাস ছাড়ুন। প্রতি দিন নিয়ন্ত্রিত মদ্যপানও কিছুটা ক্ষতি করে লিভারের। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় মদ্যপান একেবারেই লিভারের বন্ধু নয়। লিভারে টক্সিন জমানো, শরীরকে ভিতর শুকনো করে দেওয়া এগুলোকে প্রশ্রয় দেবেন না।

খাবার: ডায়েট মানতে পারুন বা না পারুন অন্তত শাকসব্জি খাওয়াটা বাড়ান। টকদই থাকপাতে। আর বাদ দিন রেড মিট, মদ। কোনও কোনও দিন একান্তই রেড মিট খেতে হলে চেষ্টা করুন দু’ সপ্তাহে এক দিন লিন কাট মাংস কিনতে। তাও দু’টুকরোর বেশি নয়। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী জল খান। এতে লিভার টক্সিনমুক্ত হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Fitness Tips Health Tips Liver Diseases Liver
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy