প্রবীণ নাগরিকের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি সুস্থ পরিবেশও। প্রতীকী ছবি।
রোগের চিকিৎসাই শুধু নয়। প্রবীণ নাগরিকের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি সুস্থ পরিবেশও। সেই বিষয়ে সমাজে এখনও সচেতনতার অভাব রয়েছে যথেষ্ট। সব স্তরের মানুষকে সেই সচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসার বার্তা দিলেন রাজ্যে ‘জেরিয়াট্রিক্স অ্যান্ড জেরেন্টোলজি’ নিয়ে কাজ করা চিকিৎসকেরা।
চিকিৎসকদের মতে, প্রবীণদের পরিচিত রোগের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাও থাকে। সেগুলি ভাল ভাবে জানতে হবে। রক্তচাপ, কিডনি বা হার্টের অসুখ-সহ বিভিন্ন রোগ নিয়েও এক জন প্রবীণ নিজের কাজ কতটা করতে পারছেন এবং মানসিক বা আর্থিক দিক থেকে তিনি কতটা স্বচ্ছন্দ, সে দিকে লক্ষ রাখা জরুরি।
‘জেরিয়াট্রিক সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’-র (জিএসআই) রাজ্য শাখার উদ্যোগে শুক্রবার থেকে কাল, রবিবার পর্যন্ত বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত হয়েছে বয়স্কদের রোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন। যেখানে চিকিৎসকেরা তুলে ধরতে চাইছেন, বয়স্কদের সমস্যা কত বড় এবং তার গভীরতা কতটা। গভীরতা বুঝে কী ব্যবস্থা নিলে ওই মানুষটিকে ভাল রাখা যাবে, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও ফিজ়িয়োথেরাপিস্টদের সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সম্মেলনের আয়োজক চেয়ারপার্সন, চিকিৎসক চিন্ময়কুমার মাইতি বলেন, ‘‘বয়স্ক মানুষের কাছে একাকিত্ব বড় মানসিক সমস্যা। আবার ৮০ শতাংশ প্রবীণ গ্রামে থাকেন। যাঁরা আর্থিক দিক থেকে দুর্বল। প্রবীণদের একটি অংশ উপেক্ষিত এবং মানসিক বা শারীরিক অত্যাচারের শিকারও হয়ে থাকেন।’’ তাঁর মতে, সরকার এবং সমাজের প্রতিটি স্তরকে এক জন প্রবীণকে সুস্থ রাখার তাগিদ বুঝতে হবে। দেখা যাচ্ছে, ৮০ শতাংশ প্রবীণ তাঁর পরিবারের উপর নির্ভরশীল। তাই এক জন শিশু যাতে পরিবারের বন্ধন শিখতে ও বুঝতে পারে, তার জন্য স্কুল স্তরে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
সম্মেলনের আর এক চেয়ারপার্সন চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, ‘‘প্রবীণদের বয়সজনিত সমস্যাগুলি ঠিক করতে না পারলে তিনি সমাজের কাছে বোঝা হয়ে উঠবেন।’’ তিনি আরও জানান, বয়স্কদের পড়ে যাওয়া, স্মৃতিভ্রংশ, ঘন ঘন প্রস্রাব-মল ত্যাগ এবং মানসিক হতাশার মতো সমস্যা এত দিন ঠিক ভাবে চিহ্নিত হয়নি। সম্মেলনের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর চিকিৎসক ধীরেশ চৌধুরী জানান, বয়স্কদের পরিষেবা প্রদানকারী একটি সংস্থার করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, প্রায় ২৩ শতাংশ ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রী একা থাকেন। শহরে থেকেও বাবা-মায়ের সঙ্গে না থাকার হার প্রায় ৯ শতাংশ।
তিন দিনের এই সম্মেলনে বয়স্কদের মানসিক, স্নায়ুঘটিত, হৃদ্রোগ ও শ্বাসজনিত সমস্যা এবং স্মৃতিভ্রংশ, ক্যানসার, ডায়াবিটিস ও পার্কিনসন্সে আক্রান্তদের চিকিৎসা এবং শুশ্রূষা নিয়ে আলোচনায় দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞেরা যোগ দিয়েছেন। সূচনা অনুষ্ঠানে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, অনেক কমবয়সিরাই বয়স্কদের দেখাশোনা বা পরিচর্যার কাজে উৎসাহী। তাঁদের প্রশাসনিক তদারকির মধ্যে রেখে ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাতে কমিশনও সহযোগিতা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy