জয়পুরের সাহিত্য উৎসবের মঞ্চে সেই জাভেদ আখতারকে পাশে নিয়েই আড্ডায় মজলেন শাবানা আজমি। — নিজস্ব চিত্র।
বিয়ের আগেই মা বলেছিলেন, কবিদের ‘চক্করে’ না পড়তে! শুক্রবার ভরা সভায় ফাঁস করলেন শাবানা আজমি। মেয়ে যে মায়ের কথা শোনেননি, তা বলাই বাহুল্য। জয়পুরের সাহিত্য উৎসবের মঞ্চে সেই কবিকেই পাশে নিয়ে আড্ডায় মজলেন অভিনেত্রী।
কবি কইফি আজমির লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ করে তৈরি হয়েছে নতুন বই। একসঙ্গে কাজ করেছেন কন্যা শাবানা ও জামাই জাভেদ আখতার। সে সব লেখার অনুবাদ নিয়েই চলছিল আলোচনা। উর্দুতে লেখা গজল অনুবাদ করা কি আদৌ সহজ, চলছিল চর্চা। জাভেদ বোঝাতে থাকেন ইংরেজি আর উর্দু ভাষার চলনের পার্থক্য। সে সবেরই মাঝে খুনসুটিতে মাতেন ঘরনি শাবানা। বলেন ব্যক্তিগত গল্পও।
বিয়ের অনেক আগে এক দিন একসঙ্গে গাড়ি করে যেতে যেতে ফুলের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে একটি ফুল দেখে ভাল লাগে শাবানার। বলেও ফেলেন সে কথা। গাড়ি থামান জাভেদ। গোটা দোকান কিনে গাড়িতে তোলেন। শাবানা বলেন, ‘‘এখানে কিন্তু গল্পের শেষ নয়। কবিরা সাংঘাতিক হয়। ঠিক কবিতার মতোই।’’ দু’দিন পর ঝগড়া হয়। কথা বন্ধ। কবি লিখে পাঠান এক লাইন। নিজের নয়। অন্যের। বার্তা যায়, ‘‘একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। ফুলওয়ালা অবাক। ভাবছেন কী যে হল!’’
কমবয়সি শাবানার মন গলে। হেসে সে গল্প মাকে বলেন। তখনই মা বলেন, ‘‘আমি এক কবির পাল্লায় পড়েছি। তুমি আর এক কবির কথার প্যাঁচে ফেঁসে যেও না। এরা বড়ই কথায় কথায় মন গলায়।’’ অনুবাদ প্রসঙ্গে ফেরেন শাবানা। বলেন, ‘‘কবিদের ভাষা অনুবাদ করা যায়। কিন্তু ভাব তো আলাদাই। কে কখন কী ভেবে লিখবেন, তা অনুবাদ করা অবশ্যই কঠিন।’’
কথার মোড় শ্বশুরমশাইয়ের দিকে ঘোরান জাভেদ। মনে করান, কইফির থেকে শুধুই কথার প্যাঁচ শেখেননি তিনি। কবির কাছে পাঠ নিয়েছেন উর্দুর চলনেরও। নজ়ম লেখা, প্রকৃত গজল লেখা, শিখেছেন তাঁর থেকে। সে সবের পাঠ দিলেন ‘জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল’-এর দর্শকেও। বললেন, ‘‘শুধু দু’টো ভাষা জানলেই কাব্য অনুবাদ করা যায় না। এক ভাষার কবিতা অন্য ভাষায় বলার জন্য কবিতাকে বুঝতে হয়।’’ সকাল সকাল কবিতার ক্লাসে তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভিড়ও জমতে থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy