Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kids

ছড়া বললে তোতলামি থেকে রেহাই পাওয়া যায়

যাঁরা বাঁহাতি, ছোটবেলায় তাঁদের জোর করে ডান হাতে লেখানোর অভ্যাস করালেও তোতলামির প্রবণতা বাড়ে।

বাবা-মায়ের বকুনিতে বাড়ে তোতলামির প্রবণতা।

বাবা-মায়ের বকুনিতে বাড়ে তোতলামির প্রবণতা। ছবি: সংগৃহীত

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:২৩
Share: Save:

কোভিড পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ মানুষের জীবন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। এখন সামনাসামনি কথার থেকে ফোনে কথা বলার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তাতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন সেই সব মানুষ, যাঁদের জিভের জড়তা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আরও সমস্যায় পড়ছে শিশুরা। অনলাইন ক্লাসে পড়া বলতে গিয়ে বা বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে গল্প করতে গিয়ে শিশুদের অনেকেরই বার বার কথা আটকে যাচ্ছে জিভের জড়তার কারণে। তবে এই জড়তা বা তোমলামির সমস্যা সহজেই কাটানো সম্ভব। বলছেন সিনিয়র স্পিচ ল্যাঙ্গোয়েজ প্যাথোলজিস্ট বাবুল বসু।
বিশ্বখ্যাত স্পিচ ল্যাঙ্গোয়েজ প্যাথোলজিস্ট ওয়েন্ডার জনসনকে প্রথম জীবনে জিভের জড়তার কারণে নানা বিদ্রূপ ও পরিহাস সহ্য করতে হয়েছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এই সমস্যা আসলে শিশুদের নয়। এর পিছনে প্রধান ভূমিকা বাবা মায়েদের। তাঁদের অসহনশীল আচরণ, সন্তানদের বকাঝকা, সব মিলিয়ে ছোট বয়স থেকেই এই সমস্যা শুরু হয়।
বেশি বকুনি বা মারধরের কারণে জিভের জড়তার সমস্যা দিন দিন বাড়ে, বললেন বাবুল বসু। ছোটবেলার তোতলামির সমস্যা সাময়িক। বাড়ির শিশুর তোতলামির সমস্যা থাকলে, বাবা-মায়েদের উচিত ভয় না পেয়ে একজন বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নেওয়া। তবে অনেকের ক্ষেত্রে ছোটবেলায় সেরে যাওয়া জড়তা বড় হয়ে ফিরে আসে। এর পিছনে হেনস্থার একটা ভূমিকা আছে। বাবুল জানালেন, ‘‘আমাদের কথা বলার মধ্যে একটা সাবলীল ছন্দ থাকে। কথা বলতে গেলে ঠোঁট, মুখ, গলার পেশি, স্বরযন্ত্র, শ্বাসপ্রশ্বাস— এই সবের একটা সমন্বয় লাগে। এর অভাব হলেই কথা বলতে গেলে আটকে যেতে পারে।’’
তোতলামিকে অনেক বাবা মা মনের অসুখ বলে ভাবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মনের অসুখ নয়। তবে এর পিছনে কিছু মানসিক কারণ থাকতে পারে। যার মধ্যে প্রধান হল ভয় আর আত্মবিশ্বাসের অভাব। কিছু কিছু শারীরিক কারণও তোতলামির জন্যে দায়ী। যেমন যাঁদের মৃগী আছে, তাঁদের তোতলামির প্রবণতা থাকে। আবার যাঁরা বাঁহাতি, ছোটবেলায় তাঁদের জোর করে ডান হাতে লেখানোর অভ্যাস করালেও তোতলামির প্রবণতা বাড়ে। পরিসংখ্যান বলছে, ছেলেদের মধ্যে তোতলামির প্রবণতা মেয়েদের থেকে বেশি। জিভের জড়তা থাকা প্রতি ৫ জনের মধ্যে ৪ জনই ছেলে। তবে তোতলামির পিছনে সুনির্দিষ্ট ঠিক কী কারণ আছে, তা এখনও জানা যায়নি।
এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা মোটেই কঠিন কাজ নয়। নিয়মিত আবৃত্তি করে মনের মত ছড়া জোরে জোরে আউড়ে তোতলামির সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে স্পিচ ব্রিদিং এক্সারসাইজ অভ্যাস করলেও সমস্যা চলে যায় বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এক নজরে তোতলামি

  • বিশ্বের ১.৫% মানুষ জীবনের কোনও না কোনও সময় কথা বলতে গিয়ে আটকে যান।
  • ছোটবেলায় কথা শুরুর সময় (২ থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত) সাময়িক তোতলামি হতে পারে। বেশি বকাবকি করলে সমস্যা বাড়ে ও পাকাপাকি ভাবে থেকে যায়।
  • স্পিচ থেরাপির সাহায্যে এই জড়তা সম্পূর্ণ সারানো যায়।
  • তোতলামি মানে বুদ্ধি কম নয়। অ্যারিস্টটল, ডারউইন ও চার্চিল-সহ বহু বিশ্ববিখ্যাত মানুষের জিভের জড়তা ছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Kids
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy