পর্যাপ্ত ঘুম কমিয়ে দেবে উৎপাতের মাত্রা, দাবি গবেষণার। ছবি: শাটারস্টক।
মন-মেজাজ ভাল রাখা, ফিটনেস বাড়ানো, মনোযাগ, কাজকর্মের দক্ষতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধি— সবেতে ঘুমের ভূমিকা মারাত্মক। এমনকি, ওজন কমাতে ও বয়স ধরে রাখতেও এর জুড়ি নেই। কিন্তু ভাল করে ঘুমোতে পারলে যে দুষ্টু বাচ্চাও শান্তশিষ্ট হয়ে যায়, তা নতুন খবর বটে!
ঘুম নিয়ে চলা বিভিন্ন দেশের নানা গবেষণায় উঠে এল, শিশুর দৌরাত্ম্য কমাতে এর ভূমিকার কথা। বিজ্ঞানীরা জানালেন, সন্তানের দৌরাত্ম্য কমাতেও ঘুম হতে পারে বড় অস্ত্র। এখন যা ঘুমোচ্ছে, তার চেয়ে মাত্র এক ঘণ্টা বেশি ঘুমোলেই সে অনেক বেশি শান্তশিষ্ট হয়ে যেতে পারে।
অনেকেই ভাবেন, ঘুম থেকে উঠেই নতুন তেজে বাচ্চা বেশি দৌড়াত্ম্য করবে। ‘আমেরিকান হেলথ অ্যাসোসিয়েশন’-এর বিজ্ঞানীদের দাবি, ব্যাপারটা এ রকম নয়। তাঁদের মতে, শিশু বেশি দুষ্টুমি করে তখনই, যখন সে ক্লান্ত ও বিরক্ত থাকে। মন খারাপ হলে কী ভাবে তা প্রকাশ করবে বুঝতে পারে না বলেই তার উৎপাতের মাত্রা বাড়ে। মনোযোগের আকর্ষণের বড় মাধ্যম দুষ্টুমি করা। ভাল করে ঘুমিয়ে উঠলে এ সব আর থাকে না বলে সমস্যা কমে।
আরও পড়ুন: বেকিং সোডা এ সব কাজেও লাগে! আগে জানতেন?
‘আর্লি টু বেড, আর্লি টু রাইজ’-এর অভ্যাস গড়ে তুলুন সকলে মিলে।
সাত সকালে ডাকাডাকি করে বাচ্চাকে ঘুম থেকে তুলে দেওয়ার অভ্যাস বদলাতেই পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। যাদের ভোরে স্কুলের জন্য তৈরি হতে হয়, তাদের বেলায় অন্তত এক ঘণ্টা আগে শুতে পাঠান।
শুধু তা-ই নয়, শিশুকে তাড়াতাড়ি ঘুম পাড়ানোর পাশাশাশি ‘আর্লি টু বেড, আর্লি টু রাইজ’-এর অভ্যাস গড়ে তুলুন সকলে মিলে। টিভি আর স্মার্ট ফোনে আসক্তি কমান। বাবা-মায়ের সঙ্গে সমান তালে জেগে থাকতে গিয়ে কম ঘুমের কারণে ক্লান্ত, খিটখিটে শিশু না পারবে পড়ায় মন দিতে, না পারবে দু’–পাঁচ মিনিট শান্ত হয়ে বসতে।
নানা পরীক্ষায় দেখে গিয়েছে, ‘অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিসর্ডার’ বা এডিএইচডি নামে চরম দুরন্তপনার যে মানসিক সমস্যায় কিছু শিশু ভোগে, তারাও অনেক ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে একটু বেশি ঘুমোতে পেলে। আমেরিকান হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞানীরা কয়েকশো শিশুর উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখান, মাত্র ৫ দিন এক ঘণ্টা কম ঘুমিয়ে বাচ্চাদের পড়াশোনা বা খেলাধুলার মান কত খারাপ হয়েছে!
আরও পড়ুন: অনিয়মে শরীরে ঢোকা ক্যালোরি আটকে মেদ রুখতে ভরসা রাখুন এ সবে
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অম্লান দত্তও এই গবেষণার সঙ্গে একমত। শিশুদের মস্তিষ্ক যত বেশি আরাম পাবে, ততই তাদের বুদ্ধির বিকাশ যেমন সম্ভব, তেমনই দুষ্টুমিতে রাশ টানাও স্বাভাবিক। স্নায়ুর যে কোনও ইরিটেশন থেকেই শিশুর দৌরাত্ম্য করার প্রবণতা বাড়ে। ঘুমোলে স্নায়ু আরাম পায়। তাই সেই প্রবণতাও অনেকটা কমে।’’ তাই শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানো বন্ধ করতে প্রয়োজনে তার রুটিনে পরিবর্তন আনাতেও সমর্থন করছেন চিকিৎসকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy