Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Parenting Tips

শিশুর মোবাইলের প্রতি আসক্তি দিন দিন বাড়ছে? এই অভ্যাসে রাশ টানবেন কী ভাবে?

‘ডিজিটাল ডিভাইসে’ মুখ গুঁজে বসে থাকার অভ্যাস খুদের মনোযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিশুরা অনেক বেশি হিংসাত্মক আচরণ করে— এর পিছনে অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল-আসক্তিই দায়ী।

শিশুর মোবাইল-আসক্তি কাটানোর আগে নিজের দিকে তাকান।

শিশুর মোবাইল-আসক্তি কাটানোর আগে নিজের দিকে তাকান। ছবি: শাটারস্টক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ১১:২২
Share: Save:

কোভিড-পরবর্তী সময়ে খুদেরা মোবাইলের প্রতি এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে যে, তার কুপ্রভাব পড়ছে ওদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর। স্কুলের পড়াশোনাই হোক কিংবা খেলাধুলা— শিশুদের গোটা জগৎটাই এখন মোবাইল-নির্ভর হয়ে গিয়েছে।

যত দিন এগোবে ততই ‘ডিজিটাল ডিভাইসের’ ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অতিমারিতে তালাবন্ধ বিশ্বে অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলি সচল থেকেছিল এর মাধ্যমেই। পরবর্তী কালেও যে সেই নির্ভরতা কমে যাবে না, তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। কিন্তু অল্পবয়সিদের মধ্যে ডিজিটাল-আসক্তির ক্ষতিকর প্রভাবটি উপেক্ষা করার নয়।

আগেকার মতো বিকেল হলেই বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে ঘুরে বেড়ানো বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে নয়, স্মার্টফোনের ভার্চুয়াল ‌বন্ধুত্বেই অধিক স্বচ্ছন্দ এখনকার বেশির ভাগ শিশু। আপাতদৃষ্টিতে এই পরিবর্তনগুলি নগণ্য বোধ হলেও সমাজজীবনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী।

সমাজ ও সামাজিকতা— ধীরে ধীরে এই দুই বিষয় থেকেই অনেকটাই দূরে চলে যাচ্ছে খুদেরা। কেউ অজান্তেই, কেউ আবার জেনেবুঝেই অন্তর্জা‌লে জড়িয়ে নিচ্ছে নিজেদের। অন্য দিকে, মাত্রাতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে তাদের শরীরেরও ক্ষতি হচ্ছে। অত্যধিক মোবাইল-আসক্তির জন্য পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, চোখের সমস্যা বৃদ্ধির মতো নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে তারা। খোলা জায়গায় দৌড়নো, খেলার অভ্যাস হারিয়ে কায়িক পরিশ্রমহীন অলস জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে শিশুরা। ফলে ছেলেবেলাতেই স্থূলত্বের মতো সমস্যা গ্রাস করছে তাদের। ‘ডিজিটাল ডিভাইসে’ মুখ গুঁজে বসে থাকার অভ্যাস খুদের মনোযোগও কমিয়ে দিচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিশুরা অনেক বেশি হিংসাত্মক আচরণ করে— এর পিছনে অনেক ক্ষেত্রেই ডিজিটাল-আসক্তিই দায়ী।

কী ভাবে মোবাইল-আসক্তি কমাবেন?

১. যখন-তখন নয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিন। তবে তখন শিশু স্মার্টফোনে কী করছে বা কী দেখছে, সে দিকে নজর রাখতে হবে। খেলাধুলো, নাচগান— যে বিষয়ে শিশুর আগ্রহ আছে, সে সব বিষয়ে মন দিতে উৎসাহী করে তুলুন খুদেকে। পড়াশোনার জন্য খুদে ফোন ব্যবহার করলে, সেই সময়টা ও পড়াশোনার কাজই করছে কি না, সে দিকেও নজর রাখতে হবে।

২. শিশু যদি অনলাইনে ক্লাস করে, তা হলে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সে কী করছে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া স্মার্টফোন থেকে আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৩. শিশুর স্মার্টফোনের আসক্তি কাটাতে আপনাকে ওর জন্য সময় বার করে নিতে হবে। ওর জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। তখন শিশুর মনের কথা শুনুন, শিশুর সঙ্গে খেলুন, ওর সঙ্গে গল্প করুন।

৪. আপনি যদি খুব বেশি প্রযুক্তিতে আসক্ত হন, তা হলে স্বাভাবিক ভাবে আপনার সন্তানও সেই কাজই করবে। তাই আগে নিজের আসক্তি দূর করুন।

৫. ঘুমোনোর ঘণ্টাখানেক আগে শিশুকে ফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করতে নিষেধ করুন। প্রয়োজনে বলে বা বুঝিয়ে শাসন করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Parenting Tips Mobile Addiction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE