সম্পর্কে মাধুর্য কী ভাবে বজায় রাখবেন? ছবি: সংগৃহীত।
বিবাহের অনুষ্ঠান নিয়ে মাতামাতির শেষ নেই। বিয়ের আগে ফোটোশুট। বিয়ের অনুষ্ঠানেও জাঁকজমক। খরচ-খরচা করে অনেকেই ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’-ও করছেন। এ দিকে মধুচন্দ্রিমার রেশ কাটতে না কাটতেই অশান্তি! ইদানীং বিয়ে হলেই লোকে কানাঘুষো শুরু করে দেন, এই যে এত ঘটা, বিয়ে টিকবে তো! বিশেষত তারকাদের বিয়ে হলে তো কথাই নেই! যেমন অভিনেতা যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে স্ত্রী নীলাঞ্জনার সম্পর্ক এখন চর্চায়।
কিন্তু তার মানেই কি সুখী দাম্পত্য জীবন সত্যি হারিয়ে যাবে? একসঙ্গে এক ছাদের তলায় থাকতে থাকতে সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টাতে থাকে। তবে তার মানেই ভাঙন ধরা অনিবার্য নয়। বিয়ে পুরনো হলেও সুখী জীবন কাটানো যায়। খেয়াল রাখতে হবে বিশেষ কয়েকটি দিকে।
সমস্যা কোথায়?
পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব, সম্মানের অভাব, একে অন্যকে বোঝার চেষ্টা না করা, সময়ের অভাব, আর্থিক অনটন, শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বনিবনার অভাব, দাম্পত্য সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি, এমন নানা কারণে সম্পর্কে ফাটল ধরে। কখনও কখনও বিষয়টা এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, ভাল থাকতে বিচ্ছেদের পথ বেছে নিতেই হয়। কিন্তু সেই পরিস্থিতি আসার আগেই সাবধান হতে পারেন।
পুরনো দাম্পত্যেও মাধুর্য বজায় থাকবে কী ভাবে?
ভালবাসা ও গ্রহণযোগ্যতা
কোনও মানুষই নিখুঁত হন না। কেউ শুধুই ভাল, কেউ একেবারেই খারাপ, তেমনটা কিন্তু হয় না। ভাল-খারাপ মিলিয়ে সব মানুষ। দীর্ঘ দিন প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর বিয়ে। সেই বিয়েও কিন্তু ভেঙে যায়। কারণ, বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই অন্যের দোষত্রুটিগুলি বড় বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। সামান্য জিনিস নিয়ে খিটমিট শুরু হয়। সম্পর্কে ঝগড়া জরুরি। কিন্তু অন্যের ত্রুটিগুলি ক্রমাগত তুলে ধরলে, সম্পর্কে ক্রমশ তিক্ততা বাড়বে। ভালবাসলে খারাপ-ভাল দুই-ই গ্রহণ করতে হবে। তার চেয়ে বরং একে অন্যের ভাল দিকগুলিকে শ্রদ্ধা করুন।
বিশ্বাস ও সততা
সম্পর্কে ভালবাসা ও বিশ্বাস খুব জরুরি। বিশ্বাস তৈরি হতে যত সময় লাগে, ভাঙতে তার এক কণাও নয়। আর বিশ্বাস এক বার ভাঙলে তা ফেরা কঠিন। তাই সম্পর্কের ভিত যেন কখনও আলগা না হয়, দু’জনকেই দেখতে হবে। ভিত মজবুত হলে জীবনের ঝড়ঝাপটা যত কঠিন হোক না কেন, ঠিক এগিয়ে যাওযা যাবে। এই বাঁধনটুকু সম্পর্কে সুখ-শান্তি দুই-ই এনে দিতে পারে।
পুরনো ভাল লাগা বজায় রাখুন
মধুর প্রেম পর্ব বিয়ে হলেই শেষ! এমনটাই অভিযোগ থাকে বেশির ভাগ সম্পর্কে। বিশেষত স্বামীর প্রতি অনেক স্ত্রীর অনুযোগ থাকে, তিনি আর আগের মতো নেই। আগে একসঙ্গে ঘুরতে যেতেন। বাইরে খেতেন, সিনেমা দেখতেন। কখনও এমনটাও স্ত্রীর মনে হয় স্বামী বুঝি আগের মতো ভালবাসেন না। সংসার করতে গিয়ে দৈনন্দিন নানা চাপে হয়তে প্রেম পর্বের দিনে ফিরে যাওয়া যায় না। তা বলে একেবারেই কি যায় না! সম্পর্ককে ভাল রাখতে গেলে প্রিয় মানুষটির সঙ্গ, যত্ন দুই-ই জরুরি। সারা সপ্তাহের চাপ, কাজ নিয়ে উদ্বেগ ভুলে কয়েকটা ঘণ্টা স্বামী-স্ত্রী নিজেদের মতো সময় কাটালে, পানসে না হয়ে সম্পর্ক মধুর হবে।
খোলামেলা কথোপকথন
বিবাহিত সম্পর্কে মধুচন্দ্রিমা পর্ব মিটতে না মিটতেই সাংসারিক, কর্মক্ষেত্রের চাপে কথা বলার পরিসর কমে যায়। ক্লান্ত শরীরে হয়তো দিনের শেষে কথা বলতেও ইচ্ছে করে না। এই কথা বলতে চেয়েও না পারা, কিংবা অন্য মানুষটির কথা শোনার ধৈর্যের অভাব দিনের পর দিন চলতে থাকলে সম্পর্কে ফাঁক তৈরি হতেই পারে। তাই দু’জনেই যাতে খোলা মনে কথা বলতে পারেন, সেই পরিবেশটা বজায় রাখা জরুরি। হতেই পারে, নিত্যনৈমিত্তিক জীবনে সেই সুযোগ হচ্ছে না। সে জন্যই ছুটির দিনে কিছুটা সময় নিজেদের জন্য রাখুন। বাইরে কোথাও যান। সেই সময়েও দু’জনে কথা বলতে পারেন।
লক্ষ্য ও প্রয়োজনেও বোঝাপড়া থাক
সংসার করতে গিয়ে সন্তান, পরিবার সামলানোর দায়দায়িত্ব থাকেই। বিষয়টা মোটেও সহজ নয়। সঞ্চয়, সন্তানের পড়াশোনা, প্রয়োজনে মাথা গোঁজার আস্তানার ব্যবস্থা করা, ভাল থাকার জন্য বেড়ানো, অসুস্থতার জন্য খরচ জোগাতে গিয়ে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা হয়। সংসারে এক জন রোজেগেরে হলে চাপ বেশি হয়। এ ক্ষেত্রে স্বামী একমাত্র রোজগেরে হলে সঞ্চয়ের পরিকল্পনায় স্ত্রীকেও এগিয়ে আসতে হব। সংসারের খরচ-খরচা কোথা থেকে বাঁচিয়ে টাকা জমানো যায়, ইএমআই দেওয়া যায় দেখতে হবে। দু’জনেই রোজগেরে হলে একসঙ্গে অর্থনৈতিক দায়িত্বও ভাগ করে নিতে পারেন। হয়তো স্বামী গাড়ি কেনার খরচ দিয়েছেন, স্ত্রী গাড়িচালকের খরচ বা জ্বালানির খরচ বহন করলেন। এটা নিজস্ব বোঝাপড়া।
শারীরিক সম্পর্ক
সুখী, সুন্দর জীবনের জন্য সুস্থ শারীরিক সম্পর্ক জরুরি। এতে মন ভাল থাকে। সম্পর্কও মজবুত থাকে। এই শারীরিক সম্পর্ক মানে কিন্তু শুধু শারীরিক সঙ্গম নয়। একে অপরকে জড়িয়ে ধরাও। প্রয়োজনে অন্যের বুকে মাথা রেখে আস্থা খোঁজা। স্পর্শের মধ্যেও নির্ভরতা থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy