ভূগোল, জীবন বিজ্ঞান ও ভৌত বিজ্ঞান— পর পর তিনটে পরীক্ষা। মাঝে এক দিনও বিরতি নেই। পরীক্ষা দিয়ে ফিরে কিছু ক্ষণ বিশ্রাম নিয়েই পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। তবে এই সময়টা হবে কেবল রিভিশনের। নতুন করে কোনও বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে গেলেই সমস্যা হবে। পর পর যখন এমন পরীক্ষা পড়ে, তখন স্বাভাবিক ভাবেই পরীক্ষার্থীদের উদ্বেগ বেড়ে যায়। কখন কোনটি পড়া উচিত, কোন বিষয়টি আগে পড়া উচিত, কী ভাবে একটি সন্ধ্যায় সম্পূর্ণ রিভিশন শেষ করা যাবে— এই সব কিছু নিয়েই চিন্তার শেষ থাকে না। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি কেমন হবে, ঠিক কী কী মাথায় রেখে চললে পরীক্ষা ভাল হবে, সে নিয়ে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকের জন্য রইল কিছু পরামর্শ।
শেষ মুহূর্তটাই কাজে লাগাতে হবে নিয়ম মেনে—
১) সিলেবাসে কী কী আছে, বিষয় অনুযায়ী তার একটা লিস্ট তৈরি করে নিতে হবে সবচেয়ে আগে। অভিভাবকেরা সাহায্য করতে পারেন। এর পর তালিকা ধরে দেখে নিন, পাঠ্যবইয়ের কোন অংশটিতে প্রস্তুতি ভাল রয়েছে। সেই অংশটি আগে রিভিশন করে নিতে হবে। যে অংশটি তেমন ভাবে পড়া নেই বা তৈরি নেই, সেটি একদম শেষে সময় পেলে তবেই ধরবে।
২) পরীক্ষার আগের রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে জটিল বিষয়গুলি হয়তো একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিল। পর দিন সকালে উঠে পরিষ্কার মাথায়, সেটা আগে পড়ল। এতে বিষয়টি আয়ত্তে আনা সহজ হবে।
আরও পড়ুন:
৩) পাঠ্যবইয়ের কোনও অংশ নতুন করে পড়তে যাওয়া বা মুখস্থ করার চেষ্টা না করাই ভাল। কারণ, অল্প সময়ের মধ্যে প্রস্তুতিও ঠিকমতো হবে না, অযথা সেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা বাড়বে। শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছ থেকে যদি কিছু বুঝে নিতে হয়, তা হলে জানা বিষয়গুলি বা কঠিন বিষয়গুলিই জেনে নেওয়া ভাল। নতুন কোনও বিষয়ে শেখার চেষ্টা না করাই শ্রেয়।
৪) ছেলেমেয়েকে কোনও বিষয় নিয়েই অত্যধিক চাপ দেওয়া ঠিক হবে না। অনেক সময়ে দেখা যায়, মা-বাবারা প্রথমেই ধরে বসে আছেন সন্তান সব পারবে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ‘ও তো পারবে না’ ধরনের নেতিবাচক কথাবার্তাও হয়। দুটোই কিন্তু সন্তানের মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। সব উত্তরই দারুণ লিখে আসবে এটা ভাবা ঠিক নয়। এতে একটি পরীক্ষা আশানুরূপ না হলে পরবর্তী পরীক্ষায় তার প্রভাব পড়বে।
৫) পরীক্ষার আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া খুব জরুরি। পরীক্ষার আগে হঠাৎ করে ফোন, টিভি দেখতে বারণ করলে বা স্ক্রিন টাইম কমাতে বললে সন্তান শুনবে না। কাজেই নিষেধের বোঝা না চাপিয়ে, খেয়াল রাখতে হবে সন্তান যেন তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যেতে পারে। রাতের খাওয়াও হালকা হতে হবে।
৬) পরীক্ষা দিতে বসে আগে ভাল করে প্রশ্নপত্র পড়ে দেখে নিতে হবে, কোন কোন প্রশ্নের উত্তর ভাল করে জানা আছে। সন্তানকে সেই ব্যাপারে ভাল করে শিখিয়ে দিতে হবে অভিভাবকের। জানা উত্তর আগে লিখে ফেলতে হবে। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এর পর স্বল্প জানা প্রশ্নগুলি ধরতে হবে। যেটুকু জানা আছে, তা-ই সঠিক ভাবে লিখলে লাভই হবে।
৭) পরীক্ষার সময়সীমার কিছুটা সময় হাতে রাখতে হবে। লেখা মিলিয়ে উত্তরপত্র জমা দিতে হবে। বাড়িতে যদি ঘড়ি ধরে অভ্যাস করিয়ে পারেন বাবা-মায়েরা, তা হলে খুব ভাল হয়।
৮) আরও একটি বিষয় মাথায় রাখলে ভাল হয়। খেয়াল রাখবেন, পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে বন্ধুদের সঙ্গে খুব বেশি আলোচনা করা অথবা কার কোন বিষয়ে প্রস্তুতি বেশি, তা নিয়ে কথাবার্তা বেশি বললে অহেতুক উদ্বেগ বাড়বে। সন্তান যেন নিজের পরীক্ষার দিকেই মন রাখে, তা দেখে নিতে হবে বাবা-মাকেই।