প্রেমের পথে কোনও কিছুই যে বাধা হতে পারে না, তাই-ই যেন শেখালেন বঙ্গতনয়া। ছবি: সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রাক্তন আইপিএল কর্তা ললিত মোদীর টুইটারে পোস্ট করা ছবি নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছে গোটা দেশে। ছবির সঙ্গে তাঁর সগর্ব ঘোষণা— প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতা সেনের সঙ্গে প্রেম করছেন তিনি। দু’জনে বাঁধতে পারেন ঘরও। সুস্মিতাকে অর্ধাঙ্গিনী বলে স্বীকার করেন ললিত। বিনোদন ও ক্রীড়া জগতের এই দুই বর্ণময় চরিত্রের প্রেমের সম্পর্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে রসিকতা করে অনেকেই বলছেন, আইপিএল কেলেঙ্কারিতে জড়িত ললিত মোদীর সঙ্গে বিশ্বসুন্দরী সুস্মিতার প্রেম, তাঁদের কোথাও আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে? শুধুই চেহারা নিয়ে রসিকতা? না কি ফারাক আছে অন্যত্রও?
বাঙালি কন্যে সুস্মিতা পার করেছেন ৪৬। প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরীকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। এখনও ধরে রেখেছেন কিশোরীর লালিত্য। অন্য দিকে ললিত মোদীর ৫০ পার করে ফেলেছেন বছর ছয়েক আগে। প্রসঙ্গত হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজের বয়স এখন ৬০। জর্জ ক্লুনির ৬১। তবে ললিত মোদীর সঙ্গে এঁদের চেহারার সে ভাবে মিল নেই বললেই চলে। বয়স ধরে রাখার প্রয়াস বোধহয় খুব একটা করতে হয়নি শিল্পপতিকে। স্থূলতা নিয়েও যে খুব একটা চিন্তিত নন তিনি, তা তাঁকে দেখলেই বোঝা যায়। চিরসবুজ বিশ্বসুন্দরীর পাশে তিনি বেমানান, এমনই মতামত অধিকাংশ মানুষের। আর সেই নিয়ে জোর আলোচনা, রসিকতা এবং মিম তৈরি শুরু হয়ে গিয়েছে চারদিকে। কেউ বলছেন, তা হলে আর জিমে গিয়ে এত ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে কী হবে? কেউ বলছেন, ললিত মোদীর ভাগ্যে যদি সুস্মিতা সেন জুটতে পারে, তা হলে আমাদের হীনমন্যতায় ভোগার কোনওই কারণ নেই।
তবে শুধু চেহারার জন্য এত রসিকতা বোধহয় হচ্ছে না। সুস্মিতা সেনকে বরাবরই দৃঢ়, আত্মনির্ভর, স্বাধীন নারী হিসেবে চিনেছেন তাঁর অনুগামীরা। ১৯৯৪ সালে বিশ্বসুন্দরীর মুকুট মাথায় ওঠে ভবানীপুরের মেয়ের। তার পর বলিউডে অভিষেক। প্রভাবশালীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া। তিন বার বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছিলেন বলে। শেষমেশ আর হয়নি অবশ্য। তবে তাতে মা হওয়ার সাধ থেকে নিজেকে বঞ্চিত রাখতে নারাজ ছিলেন তিনি। তাই একাই কন্যাসন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। এক বার নয়, দু’বার। বহু বার তিনি নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন। হয়তো শেষ পর্যন্ত মনের মিল হয়নি। তাই ভেঙেও গিয়েছে। কিন্তু নিজের মেয়েদের নিয়ে চুটিয়ে জীবন উপভোগ করেন সুস্মিতা। বহু বার বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আনন্দে থাকার জন্য অন্য কোনও ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল নন তিনি। অনেকে আবার মনে করেন, তিনি এতটাই আত্মনির্ভর যে কোনও সম্পর্কের সে ভাবে প্রয়োজন কখনওই পড়েনি বিশ্বসুন্দরীর।
সুস্মিতা নিজেকে মন থেকেও তরুণ রেখেছেন। নিয়মিত যোগাসন করেন। নতুন নতুন ব্যায়াম শেখেন। তাঁর ইনস্টাগ্রামের পাতায় উঁকি মারলে হামেশাই সেই সব ছবি দেখতে পাওয়া যায়। যেখানেই থাকুন, যত কাজই থাক সুস্মিতা নিজেকে ফিট রাখতে ভুলে যান না। অন্য কাজ না থাকলে দিনের মধ্যে কয়ের ঘণ্টা জিমেই কাটান তিনি। শুধু নিজে নয়, মেয়ে রেনে আর আলিশাও মাঝেমাঝেই তাঁর যোগাসনের সঙ্গী হয়।
সুস্মিতা বহু পুরুষের ‘স্বপ্নসুন্দরী’। পছন্দের নায়িকার প্রেমিক হিসাবে ৫৬-এর ললিতকে মেনে নিতে যেন কষ্ট হচ্ছে। বয়সের ভারে কিছুটা হলেও ন্যুব্জ ললিত। সেখানে সুস্মিতার সৌন্দর্য এখনও ঝড় তোলার ক্ষমতা রাখে বহু পুরুষের মনে। ললিতে কেন মজলেন সুস্মিতা? এ প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। কিন্তু চেহারা নিয়ে কটাক্ষ ছাড়াও সুস্মিতার এই দ্বাদশতম সঙ্গীকে যেন একটু বাঁকা চোখেই দেখছেন তাঁর অনুরাগীরা। আর্থিক দুর্নীতি, ক্রিকেট বোর্ড থেকে নির্বাসন, বিদেশে পালিয়ে যাওয়া— অতীতের কর্মকাণ্ডের কারণে অনেকেরই অপছন্দের মানুষ ললিত।
কথায় বলে, প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে। কে কখন কার প্রেমে মজবেন, তা কে বলতে পারে। প্রেমের পথে কোনও কিছুই যে বাধা হতে পারে না, তাই-ই যেন শেখালেন বঙ্গতনয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy