প্রিয় মানুষটি কষ্টে থাকলে, কী করে তাঁর মন ভাল রাখবেন? ছবি: ফ্রিপিক।
কর্মক্ষেত্র থেকে ব্যক্তিজীবন, নানা সময়ে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন জীবনটা বড্ড কঠিন মনে হয়। কী করণীয় বোঝা যায় না। কারও জীবনে অবসাদ বাসা বাঁধতে থাকে, কারও আবার উৎকণ্ঠা। এমন সময় প্রয়োজন হয় একটা ভরসার হাত। বিপদের সময় একজন বিবাহিত মানুষ কিন্তু খোঁজেন তাঁর জীবনসঙ্গীকেই। সেই সময়ে কী ভাবে প্রিয় মানুষটির পাশে থাকবেন? মনো-সমাজকর্মী মোহিত রণদীপ এবং মনোরোগ চিকিৎসক শর্মিলা সরকার এই ব্যাপারেই পরামর্শ দিলেন।
কথা শুনুন
মোহিত রণদীপ বলছেন, যে মানুষটি সমস্যায় রয়েছেন তাঁর কথা মন দিয়ে শুনতে হবে। হাবেভাবে বোঝাতেও হবে, আপনি তাঁর জন্য সমব্যথী, সহমর্মী। অন্য মানুষটির অনুভূতি আপনি বুঝতে পারছেন, সেটাই তাঁকে সাহস-ভরসা, দুই-ই জোগাবে। সর্বোপরি, মানুষটিকে বাড়তি সময় দেওয়া দরকার।
পাশে থাকা
শর্মিলা বললেন, ‘‘‘ভয় নেই, আমি তো আছি। সব সময় থাকব’— এই ভরসাটুকু যদি অন্য মানুষটিকে দেওয়া যায়, তা হলে তিনি মনে জোর পাবেন। সমস্যা নানা রকমের হয়। অফিসের সমস্যা হতে পারে, কেউ কিছু খারাপ কথা বললেন বা ক্রমাগত বলে চলেছেন, তা নিয়ে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। কেন সমস্যা, সেই অনুযায়ী তাঁর সমাধানের পথ খোঁজা প্রয়োজন।’’ মোহিতের মতে, সমস্যার কারণ যদি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয় হয়, তা হলে অন্য মানুষটির মনঃকষ্টের কারণ বুঝে কী করা যায়, ভাবতে হবে। আবার কারণ যদি বাহ্যিক হয়, সে ক্ষেত্রে কিছু করতে পারেন কি না, দেখতে হবে। সমস্যার সম্ভাব্য সমাধানগুলি খুঁজে কোনটি উপযুক্ত, তা স্থির করা প্রয়োজন।
কথা বলতে উৎসাহ
অনেক সময় উদ্বেগ বা কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষ নিজেকে গুটিয়ে নেন, জানাচ্ছেন শর্মিলা। সেই সময় তিনি যদি একা থাকতে চান, সেই সময়টা তাঁকে দিতে হবে। পাশাপাশি মোহিতের বক্তব্য, কষ্টে থাকা মানুষটি যাতে মন খুলে কথা বলতে পারেন সেই পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।
মন ভাল করার চেষ্টা
শর্মিলার পরামর্শ, কিছুটা সময় ঘুরে আসা যেতে পারে। কোনও রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়া যেতে পারে। কোনও বন্ধুর বাড়িতেও ঘুরে আসা যায়। মনের মধ্যে নিরন্তর চলতে থাকা নেতিবাচক ভাবনাগুলি এ ভাবে কিছুটা সময় অন্তত ভুলিয়ে দিতে পারেন কাছের অন্য মানুষটি। জীবন যে শুধু খারাপ নয়, অনেক ভাল লাগাও দৈনন্দিন জীবনে থাকে, সে বিষয়ে তাঁকে উৎসাহী করা যেতে পারে।
শখকে গুরুত্ব
শর্মিলা বলছেন, ‘‘মনখারাপের কারণ খুঁজে সেই মতো ব্যবস্থা নিতে হবে। মন ভাল রাখতে সেই মানুষটিকে তাঁর শখ-শৌখিনতা নিয়েও উৎসাহ দেওয়া যেতে পারে। কেউ হয়তো গান গাইতে ভালবাসতেন, কারও শখ ছিল অন্য কিছু। যদি তাঁদের সেই পরিবেশগুলি আবার ফিরিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে উৎকণ্ঠা হোক বা মনখারাপ, কিছুটা হলেও কমতে পারে।’’
স্পর্শে সান্ত্বনা
প্রিয়জনের স্পর্শটুকু অনেক সময় কঠিন সময়ে বড় সান্ত্বনা হয়ে দাঁড়ায়। যে মানুষটি কোনও কারণে দুঃখে রয়েছেন, ভেঙে পড়েছেন বা কান্নাকাটি করছেন তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া, হাতে হাত রাখা, বুকে জড়িয়ে ধরার মাধ্যমেও ভরসা দেওয়া যায়।
তবে যদি প্রিয় মানুষটির কথাতেও, সাধ্য মতো ভরসা জোগানোর পরেও পরিস্থিতির বদল না হয়, অবসাদ ঘিরে ধরতে থাকে বা জীবন অর্থহীন মনে হতে শুরু করে, তা হলে কাউন্সেলিং করানো প্রয়োজন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy