শিশুকে স্কুলে ভর্তি করানোর আগে বাড়িতেই হোক সহজপাঠ। ছবি: সংগৃহীত।
ইদানীং অনেক বাবা-মায়ের ধারণা, শিশুদের পড়াশোনা যত কম বয়স থেকে শুরু করা যায়, ততই ভাল। এক সময় পাঁচ বা ছয় বছর বয়সে শিশুদের প্রথম স্কুলে পাঠানো হত। তার আগে বাড়িতেই চলত তাদের লেখাপড়ার প্রস্তুতিপর্ব। তবে এখন, বেশির ভাগ শিশুর বাবা-মা, দু'জনেই কর্মরত। তাই অবিভাবকদের মধ্যে তিন, দুই, এমনকি দেড় বছর বয়সেও বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তবে কেবল স্কুলে ভর্তি করে দিলেই তো হল না, শিশুদের সেই বিষয়ে মানসিক ভাবে প্রস্তুতও করতে হবে। স্কুলে অন্য শিশুদের সঙ্গে মানিয়ে চলতে গেলে কোন কোন জিনিস শেখাবেন শিশুকে?
১. প্রথম বার স্কুলে গিয়ে সব খুদেই কমবেশি কান্নাকাটি করে। তারা যখন প্রথম বার টলোমলো পায়ে স্কুলের চৌকাঠে হাজির হয়, তখন নিজের ইচ্ছে-অনিচ্ছে, প্রয়োজন বোঝানোর ক্ষমতাও তার তৈরি হয় না। তাই অপছন্দে কেঁদে ওঠাই একমাত্র পথ তার। এ সময়ে শিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। ভাবতে থাকে যে, বাবা-মাকে আর বুঝি কখনও দেখতে পাবে না। এ ক্ষেত্রে সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার আগে কিছু দিন একটু আলাদা ছেড়ে রাখার অভ্যাস করাতে হবে। কোনও আত্মীয় বা প্রতিবেশীর বাড়িতে খানিক ক্ষণ তাকে রেখে দেখতে পারেন। প্রথমে শিশুটি আপত্তি করতে পারে, তার পরে যখন সে দেখবে মা-বাবা, কিছু ক্ষণ পরে তাকে ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন, তখন তার ধারণা স্পষ্ট হবে, ভরসাও তৈরি হবে।
২. শিশুকে যত তাড়াতাড়ি ‘টয়লেট ট্রেনিং’ দিতে পারবেন, ততই ভাল। স্কুলে ভর্তি করানো আগে চেষ্টা করুন, সে যেন শৌচাগারে যাওয়ার কথা নিজে থেকেই বলতে পারে। ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন বা মূত্রনালির সংক্রমণের সমস্যাও দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। স্কুলে অনেক শিশু প্রস্রাব চেপে থাকে, আর সেই থেকেই বাড়ে সমস্যা। তাই বাড়ি থেকেই শুরু হোক টয়লেট ট্রেনিং।
৩. শিশুকে স্বনির্ভর হতে শেখান। বাড়িতে আপনি ওকে খাইয়ে দিলেও স্কুলে ওর টিফিনটা নিজেকেই বার করে খেতে হবে। তাই শিশু যাতে একা হাতে খেতে পারে, জুতো পরতে পারে, ব্যাগ গোছাতে পারে— সেগুলি খেয়াল রাখতে হবে। চকোলেট হোক বা পড়ার বই, প্রয়োজনে পাশে থাকা বন্ধুটির সঙ্গে ভাগ করে নিতে শেখান সন্তানকে। পাশাপাশি, নিজের আবেগ, অনুভূতি, চাহিদাও প্রকাশ করতে শেখান শিশুকে।
৪. প্রত্যেকের ব্যক্তিগত পরিসর রয়েছে। সেই পরিসরকে সম্মান করতে শেখাতে হবে। কোনও কথা বন্ধু বলতে না চাইলে, তাকে জোর করা উচিত নয়। সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু হলেও মজা করে তার গায়ে হাত দিয়ে কথা বলা যায় না, এই সব বিষয়ে সন্তানকে বুঝিয়ে বলতে হবে। মা-বাবা বা পরিবারের অন্য সকলের মতো স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শ্রদ্ধা করতে শেখান ছোট থেকেই। এমন কোনও কথা, যা সম্মানজনক নয়, সন্তানের সামনে সেগুলি ব্যবহার করা থেকে নিজেরাও বিরত থাকুন।
৫. স্কুলে গিয়ে অন্য বন্ধুদের মতো চটপট করে সব বিষয় অনুধাবন করতে না পারলে অনেক সময়ে শিশুর মনে হীনম্মন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই স্কুলে যাওয়ার আগে থেকেই শুধু মুখস্থ না করে যে কোনও বিষয়কে মন দিয়ে বুঝতে বা আত্মস্থ করতে শেখান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy