সারমেয় শাবক ঘরে এনেছেন। দিব্যি ঘুরেফিরে বেড়ায় সে। খাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই। তবে জানেন কি, আদরের পোষ্যের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে এক বছর পর্যন্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়?
ছটফটে পোষ্য দু’দিনের অসুখেই প্রাণ হারাতে পারে। নানা রকম সংক্রণ তাদের হতে পারে, বিষাক্ত কিছু খেয়েও ফেলতে পারে। তাকে সুস্থ এবং নীরোগ জীবন দেওয়ার জন্যই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রয়োজন।
মনুষ্যসন্তানকে যেমন নির্দিষ্ট সময় অন্তর চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়, জন্মানোর পর থেকেই টিকাকরণ শুরু হয়, পোষ্যের ক্ষেত্রেও কিন্তু একই নিয়ম খাটে। শুধু শাবকই নয়, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সারমেয়দের নানা রকম রোগব্যাধি হতে পারে। সব সময় যে অসুখের লক্ষণ চট করে বোঝা যায়, এমনটাও নয়। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরুতেই রোগ নির্ণয়ের সহায়ক হতে পারে।
১ বছর বয়স পর্যন্ত
সারমেয় শাবককে ঘরে আনা থেকে এক বছর সময় খুব গুরুত্বপূ্র্ণ। ৬-৮ সপ্তাহ থেকে ১৬-১৮ সপ্তাহ পর্যন্ত কুকুরদের টিকাকরণ চলে। এ ছাড়াও পেটের নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষার দরকার হয়। ফলে সারমেয় শাবককে বাড়িতে আনার পরেই দেরি না করে পশুচিকিৎসককে দেখিয়ে নেওয়া দরকার। কত দিন অন্তর, কোন টিকা দিতে হবে, তা চিকিৎসক ঠিক করে দেবেন। অ্যান্টির্যাবিস, পারভোভাইরাস, হেপাটাইটিস, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা— এই ধরনের কয়েকটি টিকাকরণের পরামর্শ দেওয়া হয় এই সময়।
আরও পড়ুন:
সারমেয় শাবকদের কৃমি হয়। তাদের লোমে এঁটুলিও হয়। এ জন্য নির্দিষ্ট দিন অন্তর অন্তর ওষুধ খাওয়াতে হয়। পশুচিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই তা করা উচিত।
কত দিন অন্তর চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
সারমেয়র বয়স ৬ মাস হওয়া পর্যন্ত মাসে এক বার চিকিৎসকের কাছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেলে ভাল।
১-৭ বছর
সারমেয় আরও একটু বড় হলে বছরে অন্তত এক বার তাকে পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার। ওজন ঠিক আছে কি না, হজম বা অন্য কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, দেখে নেওয়া দরকার। কৃমি, পরজীবী, এঁটুলির সমস্যা হতে পারে। দাঁতও পরীক্ষা করানো দরকার। পাশাপাশি খাবারের পরিমাণ ঠিক আছে কি না, ডায়েট বুঝে নেওয়া প্রয়োজন।
৭ বছরের বেশি হলে
বয়স্ক মানুষের শরীর যেমন অশক্ত হয়ে পড়ে, রোগব্যাধি বেড়ে যায়, পোষ্যের ক্ষেত্রেও তেমনটা হতে পারে। সারমেয়র ক্ষেত্রে ৭ বছর অনেকটাই বয়স। প্রয়োজন বুঝলে বছরে দু’বার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো যেতে পারে। কোনও অসুখ শুরুতেই ধরা পড়লে তার চিকিৎসা করাটা সহজ হবে। তাদের অস্থিসন্ধিতে ব্যথা হতে পারে, প্রস্রাবে সংক্রমণ ঘটতে পারে, এ ছাড়াও নানা ধরনের সমস্যা বয়স বাড়লে হয়। দাঁত এবং মুখের স্বাস্থ্যের বাড়তি খেয়াল রাখারও দরকার হয় এই সময়।