Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Live in

Live-in Relationship: লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন পল্লবী, এমন সহবাস নিয়ে কী বলছে ভারতীয় আইন, কতটা গ্রহণযোগ্য দেশে

কয়েক বছর আগেই একটি মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও যুগলের ‘লিভ টুগেদার’ করার অধিকার রয়েছে।

বৈধ কিন্তু সমাজে গ্রহণযোগ্য কি!

বৈধ কিন্তু সমাজে গ্রহণযোগ্য কি! গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ১৯:৫৭
Share: Save:

অভিনেত্রী পল্লবী দে-র মৃত্যুর পরে একের পর এক তথ্য আসতেই জানা যায় বন্ধুর সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। আর তার পর থেকেই নেটমাধ্যমে উঠছে এই সম্পর্ক নিয়ে নানা প্রশ্ন। আসলে ভারতীয় আইনে লিভ-ইন বৈধ হলেও সমাজ সে ভাবে মেনে নেয়নি আজও। নানা সময়ে আদালতেও শোনা গিয়েছে নানা মত।

কয়েক বছর আগেই একটি মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও যুগলের ‘লিভ টুগেদার’ করার অধিকার রয়েছে। সেই মামলায় একই সঙ্গে এটাও বলা হয় যে, ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে পুরুষের বিয়ে আইনত বৈধ নয়। কিন্তু সেই তরুণ যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকে তবে তা বৈধ।

ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন এক তরুণ। বয়স একুশের কম হওয়ায় ওই তরুণের বিয়েকে অবৈধ বলে কেরল হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান যুবক। সেখানে গিয়ে বিয়ের বৈধতা আদায় করেন তিনি। ২০১৮ সালের মে মাসে বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ বলে, বিয়ে অবৈধ হলেও কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যুগল একসঙ্গে থাকতেই পারেন। সেই অধিকার তাঁদের আছে।

অন্য একটি কারণ দেখিয়েও ওই তরুণের সম্পর্ককে বৈধতা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের বাল্য বিবাহ (রোধ) আইনে বলা হয়েছে, বিয়ের সময়ে পাত্রীর বয়স অন্তত ১৮ এবং পাত্রের বয়স অন্তত ২১ বছর হতে হবে। ওই মামলায় পাত্র ও পাত্রী দু’জনেই ছিলেন হিন্দু। আদালত বলে, প্রথমত হিন্দু বিবাহ আইনে বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। দ্বিতীয়ত, ছেলে এবং মেয়ে, দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। তাই তাঁরা বিয়ের জন্য বৈধ বয়সে না পৌঁছতে পারেন, কিন্তু বিয়ে না করেও একসঙ্গে থাকার জন্য বৈধ বয়স তাঁদের হয়ে গিয়েছে।

সামাজিক স্বীকৃতি থাকুক বা না থাকুক, আইনের চোখে লিভ-ইন সম্পর্কের অন্য স্বীকৃতিও রয়েছে। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য যে সব আইন রয়েছে তা বিয়ের পাশাপাশি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকলেও পাওয়া যায়। আদালতই জানায় যে, লিভ-ইন সম্পর্ককে গার্হস্থ্য হিংসা রোধ আইন (২০০৫)-এর আওতায় স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের মতো লিভ-ইন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরেও এক জন মহিলা খোরপোশের দাবিদার হতে পারেন। সন্তানদের ক্ষেত্রেও উত্তরাধিকার-সহ অন্যান্য আইন এক।

২০১৮ সালেই মুসলিম যুবক শাফিনের বিয়ে প্রসঙ্গে একই ধরনের রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। শাফিনের বিরুদ্ধে প্রেমিকার ধর্মবদল করিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ ছিল। তখনও সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছিল, কোনও প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে কার সঙ্গে থাকবেন, তা বেছে নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার মেয়েটির আছে। পরিবার, এমনকি আদালতও সেই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

তবে আদালতে এমন সম্পর্ক নিয়ে উল্টো কথাও শোনা গিয়েছে। ২০২১ সালেই ‘লিভ-ইন সম্পর্ক নীতিগত ও সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়’ জানিয়ে এক যুগলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট। ওই মামলায় ১৯ বছরের গুলজাকুমারী ও ২২ বছরের গুরবিন্দ্র সিংহ পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, এই মুহূর্তে তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে রয়েছেন এবং অল্প দিনের মধ্যেই বিয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে। কিন্তু গুলজাকুমারীর বাড়ির লোকেরা ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন। শুনানির সময় বিচারপতি এইচএস মাদান জানান, এই আবেদনের মাধ্যমে আখেরে লিভ-ইন সম্পর্ককেই মান্যতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু নীতিগত ও সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য নয় লিভ-ইন সম্পর্ক, যার জেরে এই আবেদন খারিজ করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Live in Pallavi Dey
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy