ছবি- ইন্সটাগ্রাম।
শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে দেহের উপরিভাগে অনেক সময়েই লোমের আধিক্য দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে চোখ, নাক, মুখ এবং সারা শরীর জুড়ে কুকুর কিংবা ভালুকের মতো লোম। আর সেই লোম এতটাই বড় যে, দু’পায়ে হেঁটে চলা মানুষের সারা দেহে এমনধারা লোম দেখলে সাধারণ মানুষ ভয়ই পান। বিশেষ করে শিশুরা।
এমনই একটি ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে সম্প্রতি। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা বছর ১৭-র যুবক ললিত পাতিহার ছোট থেকেই এমন অদ্ভুত শারীরিক জটিলতার শিকার। ললিত বলেন, “ছোটবেলায় আমাকে দেখলে ভয় পেয়ে অনেকে পাথর ছুঁড়ত। বন্ধুরা ভাবত আমি বোধ হয় ওদের কামড়ে দেব।”
এ যেন অমর কৌশিক পরিচালিত এবং বরুণ ধাওয়ান অভিনীত ‘ভেড়িয়া’ ছবির দৃশ্য। কিছু দিন আগেই মুক্তি পেয়েছে ছবির ট্রেলার। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রাতে ঘুমের মধ্যে বরুণের প্যান্ট ফুঁড়ে গজিয়ে উঠছে হিংস্র নেকড়ের মতো লেজ। সারা শরীরে খেলে যাচ্ছে বিদ্যুৎতরঙ্গ। বরুণের শরীরে ভর করছে কোনও এক মানুষখেকো নেকড়ে।
যদিও ললিতের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারেই আলাদা। কারণ, তার সারা গায়ে লোম ছাড়া আর ‘ভেড়িয়া’র কোনও লক্ষণই ললিতের মধ্যে নেই।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ললিত ‘হাইপারট্রিকোসিস’ নামক এক জটিল রোগে আক্রান্ত। এই রোগে পুরুষ এবং মহিলা, যে কেউই আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু কার শরীরে লোমের আধিক্য কেমন হবে, তা ব্যক্তিবিশেষে নির্ভর করে। কারও ক্ষেত্রে এই রোগ জিনগতও হতে পারে। তবে শরীরে লোমের আধিক্য কোনও কোনও ক্ষেত্রে ক্যানসারেরও লক্ষণ হয়। সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
এই ‘হাইপারট্রিকোসিস’ আবার দু’ধরনের হয়। কারও ক্ষেত্রে সারা দেহ জুড়ে লোমের আধিক্য দেখা যায়। আবার কারও ক্ষেত্রে দেহের নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলে। “আমার পরিবারের সকলেই আমাকে নিয়ে চিন্তায় পড়তেন। বাড়িতে কেউ এলে আমাকে তাঁদের থেকে দূরে রাখা হত। স্কুলের বন্ধুরা আমাকে ‘বাঁদর’ বলে ডাকত। তারা সকলেই ভাবত, আমি বোধ হয় অন্য গ্রহের প্রাণী। ওদের থেকে আলাদা।”
যদিও এ নিয়ে কোনও দিন হীনন্মন্যতা বা অবসাদে ভোগেননি ললিত। বরং নিজেকে লুকিয়ে না রেখে, তার এই আলাদা বৈশিষ্ট্যটি নিয়েই মানুষের সামনে তিনি নিজেকে তুলে ধরেছেন, নিজের করা বিভিন্ন ভ্লগের মাধ্যমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy