ডোকরার এই মূর্তি উপহার দেওয়া হবে অতিথিদের। ছবি: রণজিৎ নন্দী
ভরদুপুরে ঠা ঠা রোদে ঘেমে কিংবা বৃষ্টিতে ‘স্নান’ করলেই বিপদ! আজ, দুপুর থেকে শহরে প্রাক্ পুজোর মিছিল ঘিরে এমনই সতর্কবার্তা দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, “আবেগে ভেসে যাতে শরীরের অযত্ন না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। না-হলে কয়েক দিনের ভোগান্তি এবং মাঝপথে আচমকা অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।”
শেষ দু’-তিন দিন ধরে কাঠফাটা রোদ আর তীব্র আর্দ্রতায় নাজেহাল হচ্ছেন মানুষ। সামান্য হাঁটাচলাতেই ঘামে ভিজছে শরীর। এমন অবস্থার মধ্যে আবার আচমকা কয়েক পশলা বৃষ্টি, পরক্ষণেই রোদ। এমন খামখেয়ালি আবহাওয়া মারাত্মক ক্ষতিকর বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ঐতিহ্যের স্বীকৃতিদানের উদ্যাপন মিছিলে যাতে সকলে মাস্ক পরেন, সেই আবেদনও রেখেছেন তাঁরা। তবে এটাও তাঁরা মানছেন, তীব্র গরমে মাস্ক পরে চার কিলোমিটার রাস্তা হাঁটা কঠিন। এক সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞের কথায়, “করোনা এখনও নিশ্চিহ্ন হয়নি। আবার ফ্লুয়ের সংক্রমণও রয়েছে। তাই যতটা সম্ভব মাস্ক পরে উৎসবে পা মেলাতে হবে।”
সিদ্ধান্ত হয়েছে, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির তোরণের সামনে থেকে দুপুর দুটো নাগাদ শুরু হবে শোভাযাত্রা। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ডোরিনা ক্রসিং,রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে মিছিল রেড রোড পর্যন্ত যাবে। থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী, বিভিন্ন পুজো কমিটির সদস্যেরা এবং স্কুলপড়ুয়ারা। এই জায়গাতেই সতর্ক থাকার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা।
যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের রোদে ঘেমে বা বৃষ্টিতে ভিজে সর্দি-গর্মি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “মনে রাখতে হবে, জনসমাগম করার মতো পরিস্থিতি কিন্তু এখনও আসেনি। তাই মিছিলে মাস্ক পরতে হবে। অস্বস্তিকর গরমের কারণে পেশিতে টান ধরতে পারে। তাই পর্যাপ্ত জল খেতে হবে।”
জ্বরের সমস্যা যে হেতু এখন বেশি, তাই বাচ্চা ও বয়স্কদের মাস্ক পরার উপরে জোর দিচ্ছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইও। তিনি আরও বলেন, “রোদে থাকার সময়ে ঢকঢক করে ঠান্ডা জল খাওয়া যাবে না। রোদে পুড়ে বা বৃষ্টিতে ভিজে আচমকা এসিতে ঢোকা বা গায়ের জামা শুকিয়ে নেওয়ার বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।” পুজো কমিটি ও প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখার আর্জিও জানাচ্ছেন তিনি।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, প্রখর রোদে কেউ অসুস্থ হলে পুরসভার তরফে বিভিন্ন কিয়স্কে ডিউটিরত কর্মীরা তৎক্ষণাৎ ওআরএস মিশ্রিত জল অসুস্থদের দেবেন। এ জন্য কয়েক হাজার প্যাকেট ওআরএস রাখা হচ্ছে।
নুন-চিনির জল বা ওআরএস খাওয়ার উপরে জোর দিচ্ছেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারও। রোদে কিছু ক্ষণ হাঁটার পরে শরীরে অস্বস্তি বোধ করলে রাস্তার ধারে বসে পড়তে হবে। সঙ্গে ছাতা, টুপি ব্যবহার করতে হবে। আবার রোদে থাকার সময়ে আইসক্রিম বা ঠান্ডা খেলে শরীর খারাপের ঝুঁকি বাড়বে বলেও জানাচ্ছেন ওই চিকিৎসক।
অন্য দিকে, ভারী বৃষ্টি হলে দ্রুত জমা জল সরাতে কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে পুরসভার নিকাশি বিভাগের ১৬টি গাড়ি-সহ বিশেষ দল মজুত থাকবে। প্রয়োজন মতো উত্তর কলকাতার বিভিন্ন পয়েন্টে যাতে ওই গাড়ি সহজে পৌঁছতে পারে, তার জন্য কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগকেও জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy