Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Higher Secondary

Success: আমিও উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করেছিলাম! হতাশ পড়ুয়াদের চাঙ্গা করার লড়াই ‘স্পিকার’ রাহুলের

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করে হতাশ অনেক পড়ুয়া। ইতিমধ্যেই আত্মঘাতী এক ছাত্রী। এমন পরিস্থিতিতে উদ্যোগ নিতে চান রাহুল বসাক।

নিজের জীবনের কথা বলেই অপরকে চাঙ্গা করতে চান রাহুল বসাক।

নিজের জীবনের কথা বলেই অপরকে চাঙ্গা করতে চান রাহুল বসাক। নিজস্ব চিত্র

পিনাকপাণি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ০৯:৪৭
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন তিনি। গঙ্গারামপুরের ছেলে রাহুল বসাক অবশ্য ভেঙে পড়েননি। নতুন করে লেখাপড়া শুরু করেন। চাকরির চেষ্টা না করে কলকাতায় এসে ব্যবসায় উদ্যোগী হন। তবে নিজের জীবনের লড়াইটাকেই ব্যবসার অন্যতম অঙ্গ বানিয়েছেন। ব্যর্থতা যে অনেক সফল ব্যক্তির জীবনেও থাকে, সেটা তুলে ধরতেই চালু করেন ‘মাই ক্যানভাস টক’ নামে একটি প্লাটফর্ম। যেখানে অতীত জীবনের ব্যর্থতা, না পাওয়ার কথা বলেন কৃতীরা। আসলে রাহুল চান তাঁর মতো আর কাউকে যেন ব্যর্থতার হতাশা গ্রাস না করে। নিজেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণে গিয়ে পড়ুয়াদের চাঙ্গা হওয়ার পাঠ দেন। নিজের বক্তৃতায় বার বার বলেন, ‘‘আমিও উচ্চ মাধ্যমিকে ফেল করেছিলাম।’’

রাজ্যে সদ্যই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। অকৃতকার্যদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করতে না পারা ছাত্রী শম্পা হালদারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে শনিবার। মালদহের এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ। এমনই এক পরিস্থিতিতে নিজের উদ্যোগে একটি ‘ওয়েবিনার’ করতে চান। নিজের ওয়েবসাইট এবং ফেসবুকের মাধ্যমে শোনাতে চান জীবনের কাহিনি। কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আমন্ত্রণ জানালেও যেতে চান তিনি। আনন্দবাজার অনলাইনকে রাহুল বলেন, ‘‘নিজের জীবনের কাহিনি তুলে ধরে আমি বোঝাতে চাই, পরীক্ষায় ফেল করলেই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। গ্রামাঞ্চলের ছেলে হলেও লড়াই ছাড়ার কিছু নেই। আমি নিজে সফল হয়ে গিয়েছি এমনটা নয়, কিন্তু এটা ঠিক যে লড়াই ছাড়িনি।’’

দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিকে ভাল ফল করলেও উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করতে পারেননি রাহুল। হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন। শিলিগুড়ি চলে যান পলিটেকনিক পড়তে। একলা থাকতে শুরু করেন। কিন্তু তার পরে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে একদিন বি-টেক পাশ করেন। বাবা ব্যবসায়ী আর মা গৃহবধূ। রাহুল বলেন, ‘‘আমি ফেল করার পরে বাড়ির সবাই ভেবেছিল, এ বার কী হবে! আমিও তখন কোনও অনুষ্ঠান বাড়িতে যেতাম না। বিয়েবাড়ি গেলে সবাই বর-বৌ ছেড়ে আমায় দেখত। তার পর শুরু হয় আমার লড়াই। আসলে আমার নিজের সঙ্গেই লড়াই ছিল সেটা। আমি সেই লড়াইটাই আজকের পড়ুয়াদের চেনাতে চাই।’’

কলকাতায় এসে প্রথমে চিত্রশিল্পীদের আঁকা ছবি অনলাইনে বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। এর পরে বিশিষ্টদের মঞ্চে এনে তাঁদের কথা শোনানোর অনুষ্ঠান ‘মাই ক্যানভাস টক’। সেখানে যেমন খ্যাতনামীদের আনা হয়, তেমনই অ্যাসিড আক্রান্তেরা আসেন নিজেদের লড়াই শোনাতে। সেই সঙ্গে রাহুল নিজেও হয়ে ওঠেন ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’। যদিও নিজেকে তিনি ‘পাবলিক স্পিকার’ বলতে পছন্দ করেন। রাহুল বলেন, ‘‘যাঁরা পরীক্ষায় খারাপ করেছেন, তাঁদের মনে রাখতে হবে দশ বছর পরে কেউ মনেও রাখবে না কে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কত নম্বর পেয়েছিল।’’ তবে পরীক্ষায় খারাপ ফলের জন্য হতাশায় ভোগা পড়ুয়াদের পাশে অভিভাবকদেরও দাঁড়ানো দরকার বলে মনে করেন রাহুল। সেই কথা তিনি ওয়েবিনারেও বলতে চান। তিনি বলেন, ‘‘ছেলে বা মেয়ের যখন মনে হচ্ছে যে, তার জীবনের সব দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তখন বাবা-মায়েদের একটু হেসে বলতে হবে, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আমরা তো আছি। ২০ সেকেন্ডের এই কথাটাই জীবন বদলে দিতে পারে তাঁদের সন্তানদের। ওঁরা কোনও দিনই বাবা-মায়ের মুখে শোনা ওই কথাটা ভুলতে পারবেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Higher Secondary Depression Rahul Basak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy