প্রোটিনের অন্যতম সেরা উৎস ডিম। ছবি: শাটারস্টক।
প্রাতঃরাশেই লুকিয়ে সারা দিনের স্বাস্থ্য, এমন কথা নতুন নয়। কিন্তু জলখাবারে নিত্যনতুন কী রাখলে শরীর ও পেট দুইয়েরই ‘মন’ রাখা যায়, তা নিয়ে প্রতি দিনই নতুন করে ভাবতে হয় আমাদের। সকালের জলখাবারে ডিমের প্রাধান্য অধিকাংশ ঘরেই। অমলেট থেকে শুরু করে পোচ বা স্ক্রাম্বেলড এগ জলখাবারের ক্ষেত্রে বেশ জনপ্রিয়।
তবে পুষ্টিবিদদের মতে, জলখাবারের খাবার বাছাইতে ভুল থেকেই শরীরে জমে মেদ। তাই প্রাতঃরাশ থেকে তেলে ভাজা ডিম বাদ দেওয়ার পক্ষপাতি তাঁরা। আসলে পুষ্টিগুণে ভরপুর ও প্রোটিনের সবচেয়ে সস্তা উৎস হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা প্রাতঃরাশে ডিম রাখার পক্ষেই সওয়াল করেন। ডিম থেকে কোলেস্টেরল বাড়ার ভয়কেও নস্যাৎ করে দিচ্ছে আধুনিক গবেষণা। বরং আধুনিক গবেষণার দাবি, ডিম শরীরে গুড কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
পুষ্টিবিদ সুমেধা সিংহের মতে, ‘‘ডিমের প্রোটিন অত্যন্ত উচ্চমানের। এই প্রোটিন আমাদের মস্তিষ্ক আর পেশি গঠনে এবং রোজকার ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। ডিমে আছে এমন কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্থিরতা বাড়ায়।’’ তাই অ্যালার্জির ভয় না থাকলে ডিমের মতো সুপার ফুডের উপস্থিতি আপনার রোজকার ডায়েটে থাকাটা আবশ্যিক।
আরও পড়ুন: পুরুষদের জন্য বিশ্বে প্রথম কন্ট্রাসেপটিভ ইনজেকশন আনতে চলেছে ভারত
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক কী উপায় ডিম খেলে আপনি তার পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ ভাবে উপভোগ করতে পারবেন? প্রাতঃরাশে কী ভাবে ডিম রান্না করলে তার থেকে মিলবে পূর্ণ পুষ্টিগুণ তা জেনে নেওয়াটা ভীষণ জরুরি।
হাফ বয়েল বা সফট বয়েল: পুষ্টিবিদদের মতে, ডিম সেদ্ধ করুন এমন ভাবে, যাতে ডিমের সাদাটি সুসিদ্ধ হয়ে যায় অথচ কুসুমটি থাকে নরম তুলতুলে। এই ভাবে ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী। এই উপায় সেদ্ধ করলে ডিমের মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণু মরে যায় সেই সঙ্গে অটুট থাকে ডিমের কুসুমের সমস্ত গুণাগুণ। ফুটন্ত নুন জলে চার থেকে পাঁচ মিনিট ডিম সেদ্ধ করে নিলেই তৈরি হয়ে যায় পারফেক্ট হাফ বয়েলড এগ। তবে সে ক্ষেত্রে ডিমের খোসা ছাড়াতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। ডিম সেদ্ধ হয়ে গেলে গরম জল থেকে তুলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন। এই উপায় খুব সহজেই ডিমের খোসা ছাড়ানো যাবে।
পোচ: ঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে সেই পোচ রান্না হবে জলে, তেলে একেবারেই নয়। একটা পাত্রে ডিমটা ভেঙ্গে তাতে সামান্য নুন আর গোলমরিচ গুঁড়ো যোগ করুন। খেয়াল রাখবেন দিমের কুসুমটা যেন আস্ত থাকে। এরপর একটা বড় পাত্রে সামান্য ভিনিগার দিয়ে জল ফুটিয়ে নিন। এ বার খুব সাবধানে ফুটন্ত জলে ডিমটা ছেড়ে দিন। দুই থেকে তিন মিনিটেই তৈরি হয়ে যাবে পোচ। ঝাঁঝরি দিয়ে পোচটি তুলে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিন। তবে এই পোচ বানানোর কায়দায় বেশ দক্ষতা লাগে। এক দিনেই আপনি পারফেক্ট পোচ বানিয়ে ফেলতে পারবেন, এমনটা নয়।
আরও পড়ুন: ডায়েট করেও কমছে না মেদ? এ সব বিষয়ে সতর্ক থাকলেই ফল মিলবে হাতেনাতে
বয়েলড এগ: অনেকেই হাফ বয়েল ডিমে আঁশটে গন্ধ পান। তাদের জন্য পুরো সেদ্ধ ডিমই সেরা। আট থেকে দশ মিনিট জলে ফুটিয়ে নিলেই তৈরি হবে ‘পারফেক্ট বয়েলড এগ’। চাইলে সেদ্ধ ডিম নুন আর মরিচ দিয়েই খেয়ে নিতে পারেন। এ ছাড়াও সেদ্ধ ডিম দিয়ে চাইলেই বানিয়ে ফেলতে পারেন এগ স্যালাড কিংবা এগ স্যান্ডউইচ।
কেবল ব্রেকফাস্টেই নয়, এই সকল উপায় মেনে চললে ডিম থাকতেই পারে আপনার লাঞ্চ কিংবা ডিনারে। ইচ্ছে করলে এক আধ দিন আপনি স্ক্রাম্বলড এগ অথবা অমলেটও খেতে পারেন। তবে রোজকার ডায়েটে বাদ দিন ভাজা ডিমের পদগুলি। অনেকেই আবার অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচেতন। তারা ডিমের কেবল সাদা অংশ খেয়েই ভাবেন অনেকটা প্রোটিন ঢুকছে শরীরে। তারা কিন্তু অজান্তেই ডিমের স্বাদ আর গুণাগুণ উভয়ই হারান কিছুটা। তাই নিশ্চিন্তে খান কুসুম-সহ গোটা ডিম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy