Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Rakhi

raksha bandhan 2022: রাখি পরে, পরিয়ে মূল স্রোতে ফেরার প্রত্যয়

বৃহস্পতিবার সকালে অন্য মুহূর্ত তৈরি হল সরকারি মানসিক হাসপাতালের প্রাক্তন আবাসিকদের জীবন সহায়তা কেন্দ্রে (অ্যাসিস্টেড লিভিং সেন্টার)।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২২ ০৮:০২
Share: Save:

রাখি-পূর্ণিমার অনুষ্ঠানে গাইতে উঠেছেন হোমের সকলের প্রিয় গায়ক অভিজিৎদা, ওরফে অভিজিৎ সেন। অন্য আবাসিকদের আবদার, ‘এক হাজ়ারোঁ মে মেরা বহনা হ্যায়’টাই আজ হয়ে যাক! অভিজিৎ অবশ্য ‘ও বন্ধু তুমি শুনতে কি চাও’ ধরলেন। তাঁর তানকারিতে জমে গিয়ে হোমের আধিকারিক অভিজিৎ রায়ও জেম্বে ড্রামটায় সঙ্গতে মাতলেন।

রাখির রঙিন সুতোর বাঁধনে বৃহস্পতিবার সকালে অন্য মুহূর্ত তৈরি হল সরকারি মানসিক হাসপাতালের প্রাক্তন আবাসিকদের জীবন সহায়তা কেন্দ্র (অ্যাসিস্টেড লিভিং সেন্টার) ‘প্রত্যয়’-এর অন্দরে। মূল স্রোত থেকে ছিটকে যাওয়া একদা মনোরোগীরা পুরোভাগে। মেয়েরা ছেলেদের, ছেলেরাও মেয়েদের রাখি পরালেন! উদ্যোগটির শরিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক দিদি রাখিতুতো বোন মধুশ্রী সরকারকে বললেন, ‘‘এর মানে তোমাকেও আমায় দেখতে হবে! জীবনে কখন কার কাকে দেখার দরকার হয়, বিষয়টা মোটেই একতরফা নয়!’’ শুনে উজ্জ্বল মধ্যবয়সিনী মধুশ্রীর চোখমুখ।

অন্যতম আবাসিক সৌভিক মুখোপাধ্যায় স্বরচিত কবিতা শোনালেন। ‘যেখানে এসে এক হয়ে যায় সব হৃদয়ের বন্ধন / আমাদের সকলের সেই উৎসব রাখিবন্ধন / বিশ্ব জুড়ে হচ্ছে যত হানাহানি, জাতি বিদ্বেষ / এসো আমরা এক হয়ে করি তাকে নিকেশ!’ পম্পা, রুবিনা, ফতিমা, লালি, স্বাতী, প্রদীপরা উতলা, ‘‘আমাদের তৈরি রাখি কেমন লাগল!’’ প্রকল্প আধিকারিক অভিজিৎ বলছিলেন, ‘‘রাখিতে কে কে আসবেন, ১০০টা ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ডে কুলোবে তো— ওঁদের প্রশ্নের শেষ নেই। গোটা অনুষ্ঠানটাই আবাসিকদের ইচ্ছে এবং পরিকল্পনায়।’’

‘আয় তবে সহচরী’ নাচের পুরোভাগে থাকা কোয়েলের পরিবারের কাছে ফেরা এখনও দূর অস্ত্‌! এই সরকারি আশ্রয়ে থেকে চাকরি খুঁজছেন তিনি। পম্পা গুহ দৃঢ় স্বরে বললেন, ‘‘ব্যারাকপুরে বাড়িতে মা আছেন। কিন্তু আমায় কেউ ফেরাতে চান না। নার্সিংয়ের তালিম আছে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে একা থাকব।’’ সোনারপুরের স্বাতী রায়ের লড়াই বাবার পেনশন জোগাড় করার জন্য। এই প্রকল্পে যুক্ত সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় বলছিলেন, ‘‘সমাজকল্যাণ দফতরের প্রকল্পে এক বছরের মধ্যে এই আবাসিকদের স্বাবলম্বী করানো হবে। নিজেদের প্রাপ্য অধিকার নিয়ে ওঁদের বোধ কিন্তু টনটনে।’’

পাভলভে সেন্টার অব এক্সেলেন্সেও রাখি পরা ও পরানোর আনন্দে শামিল শ’খানেক আবাসিক। মনোরোগ চিকিৎসক সৃজিত ঘোষের কথায়, ‘‘হাসপাতালের আবাসিকও সমাজের এক জন। এই বোধটা ছড়িয়ে দিতে উৎসব পালন জরুরি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rakhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy