গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বর্ষশেষের রাত। হোটেল-রেস্তরাঁয় যখন পার্টির হররা চলছে, তখন ঘরমুখোও হয়েছিলেন ১৪৫ কোটির একটা বড় অংশ। ‘সুবোধ বালক’ বলে নয়। বরং বাড়ির আরামে থেকেই বছরের শেষ ফূর্তির স্বাদ পেতে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ৩১ ডিসেম্বর বাড়িতেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘরোয়া পার্টির আয়োজন করেছিলেন অনেকে। সেই সব পার্টি যে হোটেল-রেস্তরাঁর থেকে কোনও অংশে কম ছিল না, তার আন্দাজ পাওয়া যায় অনলাইন বিপণিগুলিতে আসা কিছু অর্ডারের ফিরিস্তিতে চোখ বোলালেই।
ইনস্টামার্ট, ব্লিঙ্কিট, বিগ বাস্কেটের মতো অনলাইন সরবরাহের প্ল্যাটফর্মগুলির বিশেষত্ব হল এরা ঝটতি দরকারে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয় প্রয়োজনীয় জরুরি সামগ্রী। বর্ষশেষের সন্ধ্যায় ওই প্ল্যাটফর্মগুলির প্রত্যেকটিতেই অর্ডারের ঢল নেমেছিল। ইনস্টামার্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফণী কিষণ, ব্লিঙ্কইটের সিইও অলবিন্দ্র ঢিংসা সমাজমাধ্যমে সেই সব অর্ডারের কিছু পরিসংখ্যান দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বর্ষশেষের রাতে যে সব জিনিসের চাহিদা আচমকাই বেড়ে গিয়েছিল তার মধ্যে যেমন অন্তর্বাস রয়েছে, তেমন রয়েছে আঙুরও।
সেরার সেরা
বর্ষশেষের রাতে অনলাইন অর্ডারের শীর্ষে ছিল আলুর চিপ্স আর ভুজিয়া। ব্লিঙ্কইট জানাচ্ছে, রাত ৮টা পর্যন্ত সে দিন প্রায় আড়াই লক্ষ প্যাকেট আলুর ভুজিয়া বিক্রি করেছে তারা। সুইগি ইনস্টামার্টের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি মিনিটে গড়ে ৮৫৩ প্যাকেট করে আলুর চিপ্স বিক্রি হয়েছে। অর্থাৎ, ঘরোয়া হলেও পার্টি যথেষ্ট মুচমুচে ছিল।
ঠান্ডার ফান্ডা
শীতের সন্ধ্যা, তবু বরফের চাহিদা তুঙ্গে উঠেছিল। সন্ধ্যা ৭-৮টার মধ্যে ৬৮৩৪ প্যাকেট বরফ সরবরাহ করেছে ব্লিঙ্কইট। সুইগি ইনস্টামার্টে আবার সবচেয়ে বেশি বরফ বিক্রি হয়েছে ৭টা ৪১ মিনিটে। এক মিনিটে ১১৯ কেজি বরফ সরবরাহ করেছে তারা। বিগ বাস্কেটের দাবি, তাদের প্ল্যাটফর্মে বরফের অর্ডার ১২৯০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল সে দিন। ঘরোয়া পার্টিতে তরল জলই যে কঠিন জলের চাহিদা বাড়িয়েছিল, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই!
পানভোজন ও পাত্র
ঘরোয়া পার্টি শেষে বাসন মাজার ঝক্কি কে সামলাবে। তাই চাহিদা বেড়েছিল, এক বার ব্যবহারের থালা-গ্লাস-বাটিরও। বিগবাস্কেটের কাগজের কাপ-প্লেটের মজুত ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল একটা সময়ে। পরিসংখ্যান বলছে, এর পাশাপাশি অ্যালকোহল বর্জিত পানীয়ের চাহিদাও বেড়েছিল। নরম পানীয়ের বিক্রি বেড়েছিল ৩২৫ শতাংশ। সোডা বিক্রি বেড়েছিল ৫৫২ শতাংশ।
সামলেসুমলে
ঘরোয়া পার্টির দৌলতে আরও একটি জিনিসের বিক্রি প্রতি বছরের মতো এ বছরও ছিল চোখে পড়ার মতো— কন্ডোম। ব্লিঙ্কইট জানিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার প্যাকেট কন্ডোম বিক্রি করেছে তারা। তার মধ্যে চকোলেট ফ্লেভারের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি— ৩৯ শতাংশ। মোট বিক্রির ৩৭ শতাংশ ছিল স্ট্রবেরি ফ্লেভারের কন্ডোমও। অন্য দিকে, সুইগি ইনস্টামার্ট জানিয়েছিল, তারা শুধু দুপুরেই ৪৭৭৯ প্যাকেট কন্ডোম বিক্রি করেছে। তবে ঘরোয়া পার্টির ঘনিষ্ঠতার মাত্রা কত দূর পৌঁছতে পারে তার প্রমাণ মিলেছে ইনস্টামার্টে রাত এগারোটা নাগাদ এসে পৌঁছনো একটি অর্ডারে। খরিদ্দার একটি হ্যান্ড কাফ এবং চোখ বাঁধার কাপড় অর্ডার করেছিলেন!
বিশেষ পুরস্কার!
তবে বর্ষশেষের পার্টির অর্ডারের দুই অভাবনীয় তারকা হল আঙুর আর অন্তর্বাস। নববর্ষের আগে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল একটি ‘ট্রেন্ড’। নাম ‘টুয়েলভ গ্রেপস’ অর্থাৎ, ১২টি আঙুর। এক-একটি আঙুর এক-একটি মাসের প্রতিভূ। বর্ষশেষের রাতে টেবিলের তলায় বসে নিজের ইচ্ছে জানিয়ে সেই ১২টি আঙুর খেলে ইচ্ছাপূরণ হবে। এমনই বিশ্বাস। দেখা গিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর ঘরোয়া পার্টির অর্ডারে দিনভর প্রচুর আঙুর বিক্রি হয়েছে। ব্লিঙ্কিটের সিইও অলবিন্দ্র জানিয়েছেন, তাঁরা প্রতি দিন যা আঙুর বিক্রি করেন, তার ১৭ গুণ বেশি আঙুর বিক্রি হয়েছে ৩১ ডিসেম্বর রাতে। আর বিক্রি বেড়েছে পুরুষের অন্তর্বাসের। অলবিন্দ্র জানিয়েছেন। সাধারণ দিনে তাঁদের প্ল্যাটফর্মে পুরুষের অন্তর্বাস বিক্রির যে পরিসংখ্যান, তার দ্বিগুণেরও বেশি অন্তর্বাস বিক্রি হয়েছে বছরের শেষ দিনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy