বাড়তি ওজন ডেকে আনে নানা অসুখকে। ছবি:শাটারস্টক
আমাদের দেশের সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ ওবিস অর্থাৎ অল্পস্বল্প নয়, বেশ ভাল রকমের বাড়তি ওজন বয়ে চলেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীতে ওবিস মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৯০ কোটি। না এখানেই শেষ নয়, বরং গল্পের শুরু বলা যায়। শুধুমাত্র ওবেসিটির কারণে প্রতি বছরে মারা যান ২৮ লাখ মানুষ।
পেটে মেদ জমতে থাকলেই ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজের মতো নানা অসুখ এসে বাসা বাঁধতে শুরু করে শরীরে। রক্তচাপ বেড়ে যায়। সেখান থেকে হৃদরোগের সূত্রপাত হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজের সঙ্গেও ওবেসিটির সংযোগের কথা বলছেন চিকিৎসকরা। কোভিড আবহে বাড়িতে বসে ওজন বাড়লেও ওজম কমানো নিয়ে খানিকটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে।
ওবেসিটির সূত্রপাত কিন্তু ছোটবেলাতেই। এই প্রসঙ্গে মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাবা-মা চাকুরিরত। তাই অনেক সময়েই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ক্যান্টিন বা বাইরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে। ১১ বছর বয়সে সূত্রপাত চাইল্ডহুড ওবেসিটির। এ দেশে বাচ্চাদের মধ্যে এবং পরবর্তীতে প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও ট্রান্স-ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়। দোকানে একই তেলে বার বার ভাজা স্ন্যাক্স, রোল-চাউমিন ইত্যাদি।’’
আরও পড়ুন: করোনা থেকে সেরে উঠছেন? ভাল থাকতে কী কী খেতেই হবে
বার্গার, পিৎজা, প্যাটিস থেকে অগোচরেই ট্রান্স ফ্যাট শরীরে প্রবেশ করে। ভিসারাল ফ্যাট বা অ্যাবডমিনাল ফ্যাট (পেটের মেদ), দুটোই ক্ষতিকারক, এমনই জানান অরিন্দম।
কেন?
ফল খেতে হবে গোটা, চিবিয়ে। প্যাকেটজাত ফলের রস খাওয়া যাবে না। ছবি: শাটারস্টক
তাঁর কথায়, ‘‘শরীরের নানা জায়গায় জমা ফ্যাটের সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশনের মতো অসুখের সম্পর্ক রয়েছে। যতটা খাবার খাওয়া হচ্ছে, ততটাই ক্যালরি বা এনার্জি খরচ করে ফেলতে হবে। নইলে শরীরে ফ্যাট সেল হিসেবে থেকে যাবে।’’
ধমনীর প্রাচীরে ফ্যাট জমে আথেরোস্কেলোরোসিসের মতো মারাত্মক সমস্যাও দেখা দিতে পারে ওবেসিটি থেকে, হৃদযন্ত্রের ভেসেলে ফ্যাট জমতে পারে, ফ্যাটি লিভার হতে পারে, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, হার্ট অ্যাটাক-- সবকিছুই পারে, তাই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:সুস্থ থাকতে জল খাওয়া নিয়ে কী কী মানতেই হবে
কর্মব্যস্ততা, খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম, ব্যায়াম করার অবকাশ না মেলায় সব মিলিয়ে শরীরে রোজ যেটুকু ক্ষতি হয়, ডায়েট মেনে খানিক হাঁটাহাঁটি করে সেটুকু পুষিয়ে দেওয়ার কিছুটা চেষ্টা করি আমরা। তাতেও অনেক সময় দেখা যায়, কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। হয়তো নিয়ম মেনে ডায়েটের পরেও কমছে না মেদ।
একুশ শতকের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ চাইল্ড ওবেসিটি বা শিশুদের স্থূলত্বের সমস্যা। হু বলছে, ২০১৯ সালেই ৩ কোটি ৮০ লক্ষ শিশু সারা বিশ্বে ওবেসিটিতে ভুগছে, এদের প্রত্যেকেরই বয়স ৫-এর নীচে। তার মানে এই সংখ্যা এ বছরে আরও বেড়েছে। অরিন্দম এ প্রসঙ্গে জানালেন, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জোর করে খাওয়ানোটা একেবারেই ঠিক না। খিদে পেলে নিজে থেকেই খাবে। কারণ ওবেসিটির বীজ কিন্তু ছোট থেকেই তৈরি হচ্ছে।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা প্রয়োজন।ছবি: শাটারস্টক
পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তীর মত, শরীরের ওজনই শুধু নয়, ডায়েট নির্ণয়ের সময় শরীরের বিপাক হার, অন্য কোনও অসুখ রয়েছে কি না— এমন অনেক কিছুই খেয়াল রাখতে হয়।সে সব মানলে ওজনও কমে।
আরও পড়ুন:থাকে মৃত্যুর আশঙ্কাও,হবু মায়ের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এ সব মনে রাখতেই হবে
কী কী মাথায় রাখতে হবে
খাবারের তালিকা থেকে বাদ পড়ুক তেল ও ভাজা জাতীয় খাবার। স্যুপ, স্টু ও সিদ্ধ খাবারে স্বাস্থ্যের হাল ফেরান। যথাসম্ভব কম তেল দিয়ে রান্না করুন ও এড়িয়ে চলুন অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy