করোনার প্রতিষেধক ঘিরে উড়ছে বহু ভুয়ো তথ্যও। ফাইল চিত্র
প্রতিষেধক শরীরে ভাইরাস ঢুকিয়ে দিচ্ছে। ফলে টিকা নিলে তা অসুস্থতার কারণ হতে পারে। এ কথা কি ঠিক? একেবারেই নয়। প্রতিষেধক নিয়ে এমন নানা কথা উড়ে বেড়াচ্ছে এখন। করোনার প্রতিষেধক নেওয়া উচিত হবে কি না, তা ঘিরে ধরেছে ভয়। উঠছে বহু প্রশ্ন। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সব কথা একই ভাবে বিশ্বাস করলে আতঙ্ক বাড়বে। তা অন্যদের মধ্যেও ছড়াবে। এমনটা যাতে না হয়, তাই কয়েকটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি।
একবার করোনা আক্রান্ত হয়ে গেলে কি আর প্রতিষেধকের প্রয়োজন নেই?
এমন ভাবনা ঠিক নয়। চিকিৎসকেরা মনে করাচ্ছেন, বহু মানুষই দ্বিতীয় বার সংক্রমিত হচ্ছেন। অনেকের ধারণা, করোনা থেকে সেরে ওটার পরে অন্তত ৬০-৯০ দিন পর্যন্ত প্রতিষেধকের প্রয়োজন পড়ে না। কারণ তখন শরীরে অ্যান্টিবডি থাকে। কিন্তু তার মানে একেবারেই এ রকম নয় যে, সেই অ্যান্টিবডি সারা জীবন করোনাভাইরাসের সঙ্গে শরীরকে লড়তে সাহায্য করতে সক্ষম। বরং চিকিৎসকেদের দাবি, এখনও ঠিক ভাবে জানা যায়নি, কতদিন শরীরে অ্যান্টিবডি থাকছে। ফলে প্রতিষেধক নেওয়া জরুরি।
প্রতিষেধক নেওয়ার পরে আর মাস্ক-স্যানিটাইজারের প্রয়োজন নেই?
এমন ভাবনা একেবারেই ঠিক নয় বলে মনে করিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। প্রতিষেধক নিলে সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে। তবে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকবেই না, তা নয়। প্রতিষেধক শরীরকে ভাইরাসের থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই নেওয়া। কিন্তু এখনও এমন সময় আসেনি যে বাকি সব সাবধানতার পথ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে। চিকিৎসকেদের পরামর্শ, প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও যথা সম্ভব বাড়িতে থাকতে হবে। বেরোতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। আর বারবার হাত স্যানিটাইজ করে নিতে হবে।
খুব কম সময়ে তৈরি হয়েছে প্রতিষেধক, তাই তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
এই চিন্তা ঘুরেফিরে এসেছে বহু জনের মধ্যে। আপৎকালীন ভিত্তিতে কম সময়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রতিষেধক। তবে দেশ-বিদেশের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে অনেক বেশি গবেষক কাজ করেছেন। যত্নে কোথাও ত্রুটি হয়েছে বলে মনে করছেন না চিকিৎসকেরা।
ঋতুস্রাব চলাকালীন নেওয়া যাবে না প্রতিষেধক?
ঋতুচক্রের কোনও দিনের সঙ্গে এই প্রতিষেধকের যোগ নেই। অনেকেই এই নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েদের শরীরের প্রতিরোধশক্তি কম থাকে। তাই সে সময়ে টিকাকরণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, টিকারণের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগ নেই ঋতুচক্রের।
বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে কি এই প্রতিষেধক?
তেমন কোনও আশঙ্কা নেই বলেই আশ্বাস দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অনেকে ভয় পাচ্ছেন, পরবর্তীকালে গর্ভপাত ঘটার আশঙ্কাও থাকবে। এ নিয়ে মতামত দেওয়া এখনই ঠিক নয় বলেই বক্তব্য অধিকাংশ চিকিৎসকের। আরও কিছু সময় কাটলে তবেই স্পষ্ট করে এর প্রমাণ মিলবে। তবে বেশির ভাগ চিকিৎসকের মত, প্রতিষেধক নেওয়ার ফলে বন্ধ্যাত্ব বা গর্ভপাত ঘিরে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ তেমন দেখা যাচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy