প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে রং করা শাড়ির পশরার সামনে শিল্পী বিশাল ভন্ড। ছবি: অভিষেক মিত্র
শাড়ি কি শুধুই পোশাক? নাকি এক ধরনের শিল্পও। সেই প্রশ্ন উস্কে দিচ্ছেন শিল্পী বিশাল ভন্ড। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক এবং তাঁর স্ত্রী বিজয়া হালদার লকডাউনের সময়ে শুরু করেছিলেন এক অভিনব প্রয়াশ। বিভিন্ন গাছের পাতা শাড়িতে শুকিয়ে যে প্রাকৃতিক রং এবং নকশা তৈরি করে, তা-ই বজায় রেখে তিনি নানা রকমের শাড়ি তৈরি করেছিলেন। সেই শাড়িগুলি একেকটা একেক রকম। পুরোটাই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ডাই করা এই শাড়ির সম্ভার এ বার পাওয়া যাচ্ছে সিমা আর্ট গ্যালারির ‘আর্ট ইন লাইফ’ প্রদর্শনীতে। আগামী সোমবার ৬ সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে। চলবে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত।
কী করে এমন অভিনব সৃষ্টির কথা মাথায় এল। ‘আনন্দবাজার অনলাইন’কে বিশাল জানালেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ছাত্র ছাত্রীদের এই ধরনের নানা টেকনিক তিনি শিখিয়ে থাকেন। কিন্তু লকডাউনের পর থেকে ক্লাস বন্ধ। তাই যে তাঁতীদের কাছ থেকে কাপড় কিনে এগুলি করা হত, তাঁদের রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই তাঁরা বিশালের দ্বারস্থ হন। ‘‘আমি ভাবলাম কিছু শাড়ি বানিয়ে দেখি, মানুষের পছন্দ হয় কিনা। সে কথা ভেবেই ইনস্টাগ্রামে কয়েকটি ছবি দিয়েছিলাম। তার পর দেখলাম ইউরোপ থেকে প্রচুর অর্ডার আসছে। নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, কারা এত শাড়ি পরছে ও দেশে। তার পর জানলাম শাড়িগুলো কেটে ওরা আসলে ড্রেস বানাচ্ছে,’’ হাসতে হাসতে বললেন বিশাল। বুঝিয়ে বললেন, ‘‘যেহেতু শাড়িগুলোর কোনও পা়ড় বা আঁচল নেই, তাই অনায়াসে এগুলো ওরা ড্রেস মেটিরিয়ালের মতো ব্যবহার করতে পারছে।’’
শাড়ি ছাড়াও রয়েছে শার্ট, একই পদ্ধতিতে তৈরি। একেকটা গাছের পাতা একেক রকম। সেগুলি শাড়ি বা শার্টের মধ্যে রেখে শুকোতে দিলে পাতার রং বেরিয়ে গোটা পোশাক রাঙিয়ে দিচ্ছে। নকশাও হচ্ছে হরেক রকম। বিশাল জানালেন, এই শাড়িগুলির কোনওটাই এক রকম হওয়া সম্ভব নয়। এবং অনেক শাড়ি একসঙ্গে তৈরি করাও অসম্ভব। কারণ কোন পাতা কী ভাবে রাখলে কেমন নকশা তৈরি হবে, তা শুধু শিল্পী নিজেই বুঝতে পারবেন।
এ বারের পুজোয় যদি তেমনই কোনও সৃষ্টি নিজের আলমারিতে রাখতে চান, তা হলে অবশ্যই এই প্রদর্শনী ঘুরে আসতে পারেন। যাঁরা পরিবেশ সচেতন এবং মেঠো রং পছন্দ করেন, তাঁদের মনে ধরবে এই পোশাকের সম্ভার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy