Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
NOVEL CORONAVIRUS

মাল্টিভিটামিন খেলেই কি করোনা-সংক্রমণ এড়ানো যাবে?

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

কোনও নিয়ম না মেনে মুঠো মুঠো কয়েকটা ক্যাপসুল, ট্যাবলেট খেয়ে কোনও লাভ নেই।

কোনও নিয়ম না মেনে মুঠো মুঠো কয়েকটা ক্যাপসুল, ট্যাবলেট খেয়ে কোনও লাভ নেই।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ১৫:১৯
Share: Save:

করোনা-ঠেকাতে প্রতি দিন মাল্টিভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে উপচে পড়ছে। কিন্তু আদৌ কি তার কোনও কার্যকারিতা আছে?

সংক্রমণ ঠেকাতে ভিটামিনের কোনও ভূমিকা নেই এমন একেবারেই নয়। অবশ্যই আছে। সুষম খাবারের অঙ্গ হিসেবে খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ভিটামিন-মিনারেল শরীরে এলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে। প্রয়োজনে ট্যাবলেট-ক্যাপসুল খেলেও কাজ হয়। সংক্রমণ ঢুকলেও কমে যায় রোগের আশঙ্কা।

তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমিত সেনগুপ্তর মতে, ‘‘দিনকয়েক ওষুধ খেলেই কাজ হবে এমন ভাবার মানে নেই। নিয়মিত এ সব না খেয়ে, আজ কেবল রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে বলে এ সব আঁকড়ে ধরলে কাজের কাজ খুব একটা হয় না। জীবনযাপনের কোনও নিয়ম না মেনে, অনিয়মিত ভাবে মুঠো মুঠো কয়েকটা ক্যাপসুল, ট্যাবলেট খেলে রোগ ঠেকানো যায়ও না। শরীরের রোদ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়াতে ওষুধ খান, তাই বরং সঙ্গে কঠোর ভাবে মেনে চলতে হবে জীবনযাপনের কয়েকটি নিয়ম।

আরও পড়ুন: করোনা-ভয় ঠেকাতে জিমে যাওয়ায় নিষেধ করল ‘হু’! শরীরচর্চার সময় সংক্রমণ এড়াতে মেনে চলুন এ সব

পাতে রাখুন সবুজ সব্জি ও ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার।

খান সংক্রমণ ঠেকানোর খাবার

• বাইরের তেল-মশলাদার খাবার, ভাজাভুজি বা মিষ্টিখাবারের বদলে অল্প তেলে ঘরে রান্না করা টাটকা খাবার খাওয়া শুরু করুন। প্রোটিনসমৃদ্ধ মাছ-মাংস-ডিম-দুধ যেমন খাবেন, পর্যাপ্ত শাকসব্জি-ফল, বাদাম, বীজ, ভাত, আটার রুটিও খেতে হবে। রোগ ঠেকানোর যাবতীয় কলকাঠি লুকিয়ে আছে এদের মধ্যেই। কোন ধরনের খাবারে কোন ভিটামিন-মিনারেল পাওয়া যায় ও তা থেকে ঠিক কী উপকার হয় তা জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ সুজাতা মুখোপাধ্যায়।

• সংক্রমণ ঠেকাতে ভিটামিন এ রয়েছে একেবারে সামনের সারিতে। কাজেই যে যে খাবারে এই ভিটামিন বেশি আছে, সে সব খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেমন, তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, চিজ, টোফু, সব রকম বাদাম, বীজ, হোল গ্রেইন বা খোসাওয়ালা শস্যদানা যেমন ব্রাউন রাইস, আটার রুটি, খোসাওয়ালা ডাল ইত্যাদি, রাজমা-ছোলা-বিনস। হলুদ ও কমলা সব্জিতে আছে বিটা ক্যারোটিন। শরীরে গিয়ে যা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। কাজেই কুমড়ো, গাজর ইত্যাদিও খাওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: তালু নয়, হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢাকুন বাহু দিয়ে

• শরীরে জীবাণু ঢুকলে তাকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লাগে বি ভিটামিন। বিশেষ করে বি-৬. বি-৯ ও বি-১২। বি-৬ আছে চাল, গম, জোয়ার, বাজরা, ডাল, বিন্স, সবুজ শাক-সবজি, ফল, বাদাম, মাছ, চিকেন ও রেড মিটে। বি-৯ বা ফোলিক অ্যাসিড আছে সবুজ শাকসব্জি, ডাল, বিনস, বাদাম, বীজে। আর বি-১২ আছে ডিম, দুধ, মাংসে। কাজেই এদেরও খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে মাপ মতো।

• ভিটামিন সি ও ই সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টায় কোষের যে ক্ষতি হয়, তা সামলায়। করে রোগ ঠেকানোর আরও অনেক কাজ। কাজেই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলা, লেবু, বেরি, কিউয়ি, ব্রকোলি, টমেটো, ক্যাপসিকাম খান। ভিটামিন ই পেতে খেতে হবে বাদাম, সবুজ শাক ও কিছু উদ্ভিজ্জ তেল।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা আছে ভিটামিন ডি-এরও। গায়ে ভাল করে রোদ লাগালেই এর চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়। বাকিটুকু পেতে খান ডিম, মাছ, দুধ।

• খাবারে পর্যাপ্ত আয়রন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম থাকাও খুব জরুরি। আয়রন পেতে খান চিকেন, মাছ, ডাল, বিন্স, খোসাওয়ালা শস্যদানা। জিঙ্ক পাবেন সামুদ্রিক মাছ, মাংস, চিকেন, শুকনো বিন ও বাদামে। অন্য দিকে বাদাম, বিশেষ করে ব্রাজিল নাট, মাংস, সিরিয়াল, মাশরুম থেকে পাওয়া যাবে সেলেনিয়াম। যদি কোনও কারণে এ সব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে না পারেন, ডাক্তারের পরামর্শ মতো সাপ্লিমেন্ট খেতে হতে পারে।

এর পাশাপাশি ফুসফুসকে বেশি কর্মক্ষম রাখতে হালকা ব্যায়াম করুন ও ধূমপান ছেড়ে দিন।ভাল করে ঘুমোন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ঘুমেরও ভূমিকা বিরাট।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy