কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন পোশাকশিল্পী মাসাবা গুপ্ত। সন্তানের পাশাপাশি নিজের শরীরেরও যত্ন নিতে হচ্ছে তাঁকে। সন্তান জন্মের পরে অতিরিক্ত ওজন কমাতে কী কী খেতেন মাসাবা, তা নানা সময়ে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। মাসাবা জানান, মেয়ের জন্মের পরে ওজন যেমন বেড়েছিল, তেমনই শারীরিক ক্লান্তিও বেড়ে গিয়েছিল। এর থেকে বেরোতে তিনি নিয়মিত চালকুমড়োর রস খেতেন। যদিও চালকুমড়োর রসের উপকারিতার কথা আগেও বহু সময়ে জানিয়েছেন নীনা-কন্যা। শুধু ওজন ধরে রাখতে নয়, পেট ভাল রাখতেও এই সব্জির রস নিয়ম করেই খেতেন তিনি।
এখন কথা হল, চালকুমড়োর রস কি সকলেই খেতে পারেন? কী স্বাস্থ্যগুণ আছে এই সব্জির? মাসাবার কথায়, আয়ুর্বেদেও চালকুমড়োর রসের উপকারিতার কথা বলা আছে। অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য চালকুমড়ো খুবই ভাল। মাসাবা জানাচ্ছেন, সায়াটিকার ব্যথা খুব ভোগাত তাঁকে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে চালকুমড়োর রস খাওয়ার পর থেকে সে ব্যথা অনেক কমেছে। পাশাপাশি, শরীর ঠান্ডা রাখতেও চালকুমড়োর জুড়ি মেলা ভার। চালকুমড়োর রসে সামান্য গুড় ও এক চিমটে নুন মিশিয়ে খেলে, নাকি দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি থাকে। ভাজাভুজি খাওয়ার ইচ্ছাও হয় না। ফলে বাড়তি ক্যালোরিও ঝরে যায়।
বাঙালির হেঁশেলে চালকুমড়োর তরকারি খুবই চেনা পদ। নারকেল কোরা বা পোস্ত বাটা দিয়ে চালকুমড়ো খেতে খুবই ভাল লাগে। একস ময়ে মা-ঠাকুমারা পেট ঠান্ডা রাখার জন্য চালকুমড়ো খেতে বলতেন। এতে ক্যালোরি প্রায় নেই বললেই চলে। জলের পরিমাণ প্রায় ৯৭ শতাংশ। তাই শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করতে এই সব্জিটি কার্যকর। শরীরচর্চার পর খুব ক্লান্ত লাগলে চালকুমড়োর রস খাওয়া যেতেই পারে। এতে আছে ভিটামিন বি, সি, আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। মহিলাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতেও উপকারী এই সব্জি। চালকুমড়ো খেলে অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। ফলে বিপাকহারও বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন:
কিন্তু চালকুমড়ো কি সকলেই খেতে পারেন?
চালকুড়োর রস এমনিতে নিরাপদ। কিন্তু সদ্য মা হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই খেতে হবে। অনেকের অ্যালার্জির ধাত থাকে, তাঁদের চালকুমড়ো বুঝেশুনেই খাওয়া ভাল। যদি ঠান্ডার ধাত থাকে, অল্পেই সর্দি-কাশির সমস্যা ভোগায়, তা হলে চালকুমড়ো না খাওয়াই ভাল।
হার্টের সমস্যা থাকলে বা ক্রনিক কিডনির রোগ থাকলে, চালকুমড়ো চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে খাওয়া উচিত হবে না।
রক্তে শর্করার মাত্রা যদি ওঠানামা করে বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া থাকে, তা হলে চালকুমড়ো খাওয়া ঠিক হবে না। কারণ, এই সব্জি রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে।
চালকুমড়োর রস খেলে তা পরিমিতই খাওয়া উচিত। যে কোনও জিনিসই অতিরিক্ত খেলে তার নানা রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।