ফাইল চিত্র।
চিন থেকে দ্বিতীয় বিমানটি রবিবার ভারতে ফিরেছে। ফিরিয়ে এনেছে ৩২৩ জন ভারতীয়কে। যাঁরা বিভিন্ন কারণে চিনে বসবাস করতেন। তার আগের দিন ৩২৪ জন চিন থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এদিকে রবিবার ভারতের দ্বিতীয় করোনাভাইরাস আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তিনিও কয়েকদিন আগে চিন থেকে ফিরেছিলেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি শুরু হয়েছে।
চিনের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংক্রমণ আটকাতে তারা নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। সংস্থার পরামর্শ, সংক্রমণ ঠেকাতে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া দরকার। কাশলে বা হাঁচলে নাক-মুখ ঢাকা দেওয়া দরকার। নাক-মুখ ঢাকতে টিসু পেপার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটি ব্যবহারের পরে ফেলে দিতে হবে। তার পর আবার হাত ধুতে হবে। কাশি, জ্বর আছে এমন কারও সরাসরি সংস্পর্শে না আসা ভাল। জ্বর-কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিদেশের ঘোরার কথা চিকিৎসককে জানান। কাঁচা বা সুসিদ্ধ নয় এমন প্রাণিজ খাবার না খাওয়াই ভাল।
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গেই ছড়াচ্ছে নানা ভ্রান্তি। সেগুলো বিভ্রান্ত করছে মানুষকে। সে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যেমন অনেকের জিজ্ঞাসা, পোষ্য প্রাণীর থেকে কি ছড়াতে পারে এই ভাইরাস? কিন্তু এখনও পর্যন্ত পোষ্য থেকে ভাইরাস ছড়ানোর কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে পোষ্যের সঙ্গে খেলা বা সংস্পর্শে আসার পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ভাল। এর ফলে ই-কোলি এবং সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এগুলো প্রাণী থেকে মানবদেহে ছড়ায়। কারও কারও ধারণা, বেশি বয়সিরাই এই নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হন। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, এই ভাইরাস সব বয়সিদেরই একই ভাবে আক্রান্ত করে। যাঁদের হাঁফানি, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে ভাইরাসটি মারাত্মক হতে পারে।
সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে একটা প্রশ্ন ওঠেই। অ্যান্টিবায়োটিক কাজে লাগবে? নতুন করোনাভাইরাসে অ্যান্টিবায়োটিক কোনও কাজে আসবে না। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ঠেকাতে কাজে লাগে। করোনা হল ভাইরাস। তাই এই ভাইরাস ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অনুচিত। তবে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। কারণ ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে অন্য সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যায়। নতুন করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য কিন্তু কোনও ওষুধ নেই এখনও পর্যন্ত। গবেষণা এবং প্রতিষেধকের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চেষ্টা করছে সেই পরীক্ষায় সাহায্য় করতে। তবে রোগ ধরা পড়লে কিছু চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। তাতে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগ সম্পর্কে সচেতনতার পাঠ দেওয়ার সঙ্গেই রোগ নির্ণয় সংক্রান্ত কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, রোগীর দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনা (সোয়াব টেস্টিং) একবার পরীক্ষা করলেই নতুন করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব বোঝা যাবে। আগে এই পরীক্ষা দু’বার করে করা হত। নতুন নির্দেশিকায় দ্রুত পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা সম্ভব হবে বলে মত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।
মার্স, সার্স, ইবোলার মতো নতুন করোনাভাইরাস এখন বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করেছে। চিন ছাড়াও বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে ধরা পড়েছে এই রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্যকর্তারা হঠাৎ করে রোগের ছড়িয়ে পড়ার কারণ খুঁজছেন। সেই সঙ্গে খোঁজ চলছে কী ভাবে এই রোগ কিছু বোঝার আগেই আতঙ্কের পর্যায়ে চলে গেল। যতদিন না বোঝা যাচ্ছে ততদিন সাবধানের মার নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy