Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

মা-বাবার দায়িত্ব মেয়েরও

বিয়ের পরে মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালন করুন ভালবেসেইবিয়ের পরে দায়িত্ব স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় অনেকখানি।

মডেল: তিলক ভট্টাচার্য, সুস্মেলী দত্ত, তৃষিতা ঘোষাল; ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: চয়ন রায়; 
পোশাক: ইমেজ অ্যান্ড স্টাইল, গড়িয়াহাট; লোকেশন: লাহা বাড়ি, বেচু চ্যাটার্জি স্ট্রিট

মডেল: তিলক ভট্টাচার্য, সুস্মেলী দত্ত, তৃষিতা ঘোষাল; ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: চয়ন রায়; পোশাক: ইমেজ অ্যান্ড স্টাইল, গড়িয়াহাট; লোকেশন: লাহা বাড়ি, বেচু চ্যাটার্জি স্ট্রিট

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক বদলায়। কিন্তু মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক চিরকালীন। বিয়ের পরে মেয়েটির বৃত্তে ঢুকে পড়ে তাঁর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি এবং সেই সুবাদে আরও অনেক কিছু। তা বলে কি বদলে যায় বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব?

বিয়ের আগে-পরে বদল

বিয়ের আগে কলেজের ফর্ম থেকে শুরু করে ইন্টারভিউয়ের টেনশন, প্রোমোশনের আনন্দ... মেয়ের সব অনুভূতি ভাগ করে নেওয়ার মানুষ বলতে মা-বাবাই। মাইনে পেলে মেয়ে বাড়ি ফিরত মা-বাবার জন্য উপহার, মিষ্টি, পছন্দের খাবার কিনে। বিয়ের পরে সেই দৃশ্যপটে বদল আসে। সময়ের অভাবে চাকুরিরত মেয়েটি হয়তো বাপের বাড়ি যায় সপ্তাহান্তে। উপহার নিয়ে যাওয়া যায় তখনই। তবে হাসিমুখে মেয়ের উপস্থিতিই মা-বাবার কাছে সবচেয়ে বড় উপহার।

মেয়ের দায়িত্ব

বিয়ের পরে দায়িত্ব স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায় অনেকখানি। যে মেয়েটি তাঁর রোজগারের কিছুটা অংশ তুলে দিত মায়ের হাতে, বিয়ের পরে সেই দায়িত্বে যেন ভাটা না পড়ে। চাকুরিরত পুত্রবধূর কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য আশা করতেই পারেন শ্বশুর-শাশুড়ি। কিন্তু তাঁদেরও বোঝা প্রয়োজন, পুত্রবধূ হওয়ার আগে সে একটি মেয়ে। ফলে মা-বাবার প্রতি দায়িত্বে যেন তার ত্রুটি না থাকে। মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি— দু’তরফের ব্যালান্স করতে হবে মেয়েটিকেই।

দায়িত্ব মানে শুধু আর্থিক ভারবহন নয়। সময়ে-অসময়ে মা-বাবার পাশে এসে দাঁড়ানোটাও বড় ব্যাপার। বার্ধক্যের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো মা-বাবা হয়তো আর সে ভাবে ব্যাঙ্কের কাজ করে উঠতে পারেন না। টেক-স্যাভি না হওয়ার দরুন স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ এবং সর্বোপরি নিরাপত্তার অভাব... নানা কারণে অল্পেই বড় বিচলিত হয়ে পড়েন। ফলে তাঁদের মানসিক অবস্থা বুঝে, আনুষঙ্গিক বিষয়ে তাঁদের বোঝানোর দায়িত্বও বর্তায় মেয়ের উপরেই। মা-বাবার স্বাস্থ্য নিয়ে শুধু চিন্তা নয়, তাঁদের নিয়মিত মেডিক্যাল চেকআপ করাতে পারেন। পেমেন্ট, রিপোর্ট নেওয়া এবং প্রয়োজনে ডাক্তার দেখানো... পুরো দায়িত্বই নিতে পারেন নিজে।

বাপের বাড়ি যাওয়া মানে শুধুই সারা দিনের ক্লান্তি লাঘব করা বা নিঃস্তব্ধতায় কাটানোর সময় নয়। মেয়েকে বলার মতো হাজারো কথার ঝুড়ি জমে থাকে মা-বাবার মনে। ফলে মেয়ে বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই হয়তো মা-বাবা খুলে বসেন সে সব গল্পের ঝাঁপি। প্রতিবেশীর প্রেম থেকে শুরু করে পাড়ার ক্লাবের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি... কী না থাকে তাতে! বিরক্ত না হয়ে হাসিমুখেই গল্প শুনুন। আপনার অনুপস্থিতিতে তাঁদের একাকিত্ব বাড়ে। ফলে মেয়ে বাড়ি ফিরলে তাঁকে সব বলা চাই-ই।

না বলে হঠাৎ করে মা-বাবার কাছে চলে আসার আনন্দই আলাদা। আপনার আকস্মিক উপস্থিতিতে মা-বাবার ব্যস্ততা, উজ্জ্বল মুখ... এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী আছে? সময় পেলে রেস্তরাঁয় খেতে যাওয়া, একসঙ্গে সিনেমা দেখা, পড়ুয়া বাবার জন্য বই, জার্নাল বা রোজ ডায়েরি লিখতে অভ্যস্ত মাকে ঝর্না কলম দেওয়া... ছোট ছোট আনন্দ ভাগ করে নিলে তা অনেক বড় হয়ে ওঠে।

মা-বাবারাও বুঝুন

মেয়ে মানেই কন্যাদায়— এ ধারণা বদলাচ্ছে। ফলে বিয়ের পরে সন্তান অন্যত্র অচেনা লোকজনের সঙ্গে থাকে, তাকে বোঝার দায়িত্ব কিন্তু মা-বাবারও। সংসারের টানাপড়েনের কথা মেয়ে হয়তো বলেই উঠতে পারে না। বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি— দু’তরফের মন জুগিয়ে চলতে গিয়ে হয়তো মেয়েটিও ক্লান্ত। সে বাড়ি ফিরলেই অনর্গল নিজের কথা না বলে, তাঁর কথাও শুনুন। খুঁটিয়ে প্রশ্ন করতে গিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে পড়বেন না। মেয়ে ধাতস্থ হলে না হয় নিজের ঝুলি উপুড় করবেন!

একা, অথচ একা নন

সিঙ্গল পেরেন্টদের ক্ষেত্রে একা মেয়েকে বড় করে বিয়ে দেওয়ার ঝক্কি কম নয়। মেয়েটিও বিয়ের পরে মা বা বাবার একাকিত্ব নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে। সে ক্ষেত্রে মা বা বাবাকে সময় দিতে হবে আরও বেশি। শ্বশুরবাড়ির তরফেও এ কথা বোঝা প্রয়োজন। নিয়মিত মা বা বাবার কাছে যাওয়া, প্রত্যেক দিন ফোন করার পাশাপাশি তাঁদের সমস্ত খুঁটিনাটি প্রয়োজন মেটানো দরকার।

কর্তব্যের খাতিরে নয়, বিয়ের পরেও মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালন করুন ভালবেসে। তা হলে শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কোনও ভাবে তা বোঝা মনে হবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Relationship Parents Marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy