সাধারণত ওজন কমাতে বা মেদ ঝরাতেই লো-কার্ব ডায়েটের শরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বেড়ে যায় প্রোটিন খাওয়ার মাত্রা। এতে আখেরে শরীর কতটা সুস্থ থাকে, সেটা কি জানা আছে? লো-কার্ব ডায়েট করার আগে সে সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট করা দরকার।
লো-কার্ব ডায়েট কেন করবেন?
মেদ ঝরানোর জন্য অনেক সময়ে ডায়াটিশিয়ানরা লো-কার্ব ডায়েটের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে সে ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর দেখেই নির্দিষ্ট কিছু দিনের জন্য লো-কার্ব ডায়েট প্রেসক্রাইব করা হয়। যে মানুষটি ডায়েট করবেন, তাঁর শরীরের ওজন, শারীরিক গঠন, কোনও অসুখ আছে কি না, সে সব বিষয় মাথায় রেখেই ডায়েট চার্ট তৈরি করা হয়। এমনকি রোগী কী ধরনের কাজ করেন, তা-ও অন্যতম শর্ত হিসেবে কাজ করে। কর্মসূত্রে কাউকে যদি দিনে আট ঘণ্টা দাঁড়িয়ে বা দৌড়াদৌড়ি করে কাজ করতে হয়, তাঁর ডায়েটে এনার্জির পরিমাণ বেশি প্রয়োজন। অন্য দিকে কেউ যদি সারা দিন বাড়িতেই বসে থাকেন, তা হলে তাঁর ডায়েট হবে আগের ব্যক্তির চেয়ে আলাদা। ফ্যাটি লিভার থাকলে এই ধরনের ডায়েট কার্যকর। কিন্তু অবশ্যই তার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন ক্ষতিকর?
অনেকেই না বুঝে ইন্টারনেট দেখে কিটো বা লো-কার্ব ডায়েট করতে শুরু করে দেন। সে ক্ষেত্রে নিজের শরীরের কোনও ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা বিবেচনাও করেন না। পরে দেখা যায়, শারীরিক ক্ষতি হয়ে গেল। যেমন অস্টিয়োপোরোসিস থাকলে কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে হাই প্রোটিন ডায়েট শুরু করলে ক্যালসিয়ামের ক্ষয় বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ে।
নিরামিষাশী ব্যক্তিদের লো-কার্ব ডায়েট ফলো করার সময়ে বেশি মাত্রায় সচেতনতা জরুরি। যেহেতু মাছ, মাংস খেতে পারেন না, অনেক সময়েই বেশি মাত্রায় টোফু, পনির, ছানা বা সয় প্রোটিন খেয়ে ফেলেন। অতিরিক্ত পরিমাণে সয় প্রোটিন খেলে তা টিউমরে পর্যন্ত পরিণত হতে পারে। এমন উদাহরণও কিন্তু দেখা গিয়েছে।
সারা দিন কায়িক পরিশ্রম বেশি, এ দিকে খাবারে কার্বোহাইড্রেট প্রায় নেই, সে ক্ষেত্রে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও বিরল নয়। তাই লো-কার্ব ডায়েট শুরু করার আগেই ডায়াটিশিয়ানের পরামর্শ নিন।
খেয়াল রাখবেন
• দীর্ঘ দিন ধরে লো-কার্ব ডায়েটে চলা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ঠিক করুন কত দিন এই ডায়েট মেনে চলবেন।
• যাঁরা টানা অনেক দিন লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলেন, তাঁদের আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
• এনার্জির সমস্যা তো থাকেই। আবার সারা দিন দুর্বল ভাব, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরার মতো সমস্যাও নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠতে পারে।
• লো-কার্ব ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের ইনটেক কমাতে রুটির পরিমাণ কমাতে পারেন। ভাতের বদলে ওট্স খেতে পারেন। বাজারে অনেক ধরনের মাল্টিগ্রেন সহজলভ্য। সেগুলি খেতে পারেন। তবে অবশ্যই তার আগে ডায়াটিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে নিন।
• রোজকার ডায়েটে যদি অনেকটা পরিমাণে ফল থাকে, তার থেকেই কিছুটা কার্ব শরীর পেয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে অন্য কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাতে পারেন।
• দীর্ঘ দিন লো-কার্ব ডায়েট মেনে চললে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সেরও ঘাটতি দেখা দেয় শরীরে।
• ডায়েট চলাকালীন প্রয়োজনীয় সাপ্লিমেন্ট নেওয়া দরকার, যা ভিটামিন ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করবে। সে ক্ষেত্রেও ডায়াটিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে নিন।
ডায়েট করতে গেলে আগে প্রয়োজন ঠিক পরিকল্পনা। গোড়াতেই যদি গলদ থেকে যায়, তা হলে কিন্তু পুরো প্রক্রিয়াটিই ভুল হয়ে যাবে।
তথ্য সহায়তা: হিনা নাফিস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy