Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
আপনার পালস রেট কত, তার থেকেই কিন্তু শরীরের অনেক খবর পাওয়া যায়
Pulses

পালসের ওঠানামায় নজর রাখুন

পালস রেট এত গুরুত্বপূর্ণ কেন, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পালস কত থাকা উচিত... সবই জানব

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নবনীতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৭:৪৫
Share: Save:

শরীরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তার দেখাতে গেলেই সবচেয়ে আগে পালস রেট দেখেন চিকিৎসকরা। হাতের কব্জির কাছে নাড়ি ধরে সেই রেট দেখে তবে শুরু হয় চিকিৎসা। পালস রেট এত গুরুত্বপূর্ণ কেন, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পালস কত থাকা উচিত... সবই জানব

একে একে।

পালস রেট কী ভাবে মাপা হয়?

প্রত্যেক মিনিটে হার্ট কত বার বিট করছে, সেটাই মাপা হয় পালস রেটের মাধ্যমে। পালস রেট প্রত্যেকের আলাদা হয়। একজন মানুষের বিশ্রামরত অবস্থায় ও শারীরচর্চার পরেও পালস রেট আলাদা হয়ে থাকে। শারীরচর্চার পরে বা খুব দৌড়ঝাঁপের কাজ করে এলে পালস বেড়ে যায়। সেই রেট দেখে আতঙ্কিত হবেন না। শরীরকে আগে ঠান্ডা হতে দিন। স্বাভাবিক অবস্থায় এসে পালস মাপুন। হৃদ্যন্ত্রের কোনও সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলে অবশ্যই রোজ পালসে নজর রাখা উচিত।

পালস রেট কত থাকা উচিত?

কার্ডিয়োলজিস্ট ডা. সুনীলবরণ রায় বললেন, ‘‘একজন প্রাপ্তবয়স্ত সুস্থ মানুষের পালস রেট ৬০ থেকে ১০০র মধ্যে থাকা উচিত। সত্তরের যত কাছাকাছি পালস রেট থাকে, ততই ভাল। কিন্তু ১০০ ছাড়িয়ে গেলে বুঝতে হবে, শরীরে কোনও সমস্যা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একই ভাবে ৬০-এর নীচে পালস রেট নেমে গেলেও তা চিন্তার। এ প্রসঙ্গে মনে রাখতে হবে শিশুদের কিন্তু পালস রেট বেশি থাকে। শিশুর বয়স যত কম হবে পালস রেট তত বেশি হবে। বয়স এক বছরের নীচে হলে ১২০-১৪০ পালস রেট ওদের জন্য স্বাভাবিক।’’ গর্ভাবস্থায় শিশুর হার্টবিট খেয়াল করলেও এই ঘটনাটা বুঝতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে আর একটি বিষয়ও মনে রাখতে হবে। হার্টবিট অনিয়মিত হয়ে গেলে তাঁদের পালস রেট নির্দিষ্ট ভাবে মাপা একটু কঠিন। তাই তাঁদের পালস রেট দেখতে ইসিজি রিপোর্টে ভরসা রাখাই সবচেয়ে ভাল।

ইসিজি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য

ডা. সুনীলবরণ রায়ের মতে, ইসিজি রিপোর্টে যেহেতু প্রত্যেকটা হার্টবিট ছবির মতো হাতে পাওয়া যায়, তাই ইসিজি (ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাম) রিপোর্ট সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। বাড়িতে অক্সিমিটারে নজর রাখা যায়। তবে অক্সিমিটারের ব্যাটারি ফুরিয়ে গিয়েছে কি না সেটাও দেখা দরকার। না হলে কিন্তু পালস রেট ভুল

দেখাতে পারে।

পালসের ওঠানামা কেন হয়?

সাধারণত কোনও অসুখের কারণেই পালস রেটের হ্রাস-বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়। জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে, থাইরয়েডের সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলে বা ফুসফুসের অসুখ থাকলে পালস রেট বাড়তে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে কমেও যেতে পারে। হার্ট রেট হঠাৎ খুব বেড়ে গেলে সেই অবস্থাকে বলে ট্যাকিকার্ডিয়া। তখন পালস থাকে প্রতি মিনিটে ১০০-র উপরে। বুক ধড়ফড় করা থেকে শুরু করে বুকে ব্যথা অনুভব করতে পারেন রোগী। ট্যাকিকার্ডিয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে। স্ট্রেস, ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালান্স, জ্বর, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মতো বিভিন্ন ফ্যাক্টর কাজ করে। অন্য দিকে হার্ট রেট কমে ৬০-এর নীচে নেমে গেলে তাকে বলে ব্র্যাডিকার্ডিয়া। ট্যাকিকার্ডিয়া বা ব্র্যাডিকার্ডিয়ার মতো উপসর্গ যদি অনেক দিন ধরে দেখা দিতে থাকে, তা হলে সতর্ক হন। এর থেকে পরে সাডেন কার্ডিয়াক অ্যােরস্টও হতে পারে।

এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন কী?

সাধারণত হার্টের ইলেকট্রিসিটি ফ্লো উপরের চেম্বার থেকে নীচের দিকে আসে। এট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে ইলেকট্রিকাল ফ্লো খুব অস্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন হার্টবিট অনিয়মিত হয় এবং অত্যধিক বেড়ে যায়। রক্তও ঠিকমতো পাম্প করতে পারে না। এট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের ফলে এট্রিয়ামে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এই জমাট রক্তই মস্তিষ্কে গিয়ে স্ট্রোক ঘটাতে পারে। তাই অস্বাভাবিক বেশি পালস রেট দেখলে সাবধান হন।

নিয়মিত শারীরচর্চা জরুরি

প্রত্যেক দিন কার্ডিয়োভাসকুলার এক্সারসাইজ় বা নিদেনপক্ষে হাঁটা, সাঁতার, সাইক্লিংয়ের মতো ব্যায়াম করতে পারেন। এতে হার্টের পেশির শক্তি বাড়ে। স্ট্রেস কমাতে হবে। ঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া ও ঘুম দরকার। ধূমপানের মতো বদভ্যেসও ছাড়তে হবে। ব্লাড প্রেশার, সুগার, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

ছোটখাটো এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই সুস্থ থাকবেন। হৃদয়ের গতিও থাকবে নিয়ন্ত্রিত।

অন্য বিষয়গুলি:

Pulses
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy