মানুষকে কী ভাবে স্নান করাবে ওয়াশিং মেশিন, সকলের জন্য কি তা সুরক্ষিত? ছবি: সংগৃহীত।
জামাকাপড় ধুয়ে পরিষ্কার করার ওয়াশিং মেশিন তো আজ ঘরে ঘরে। এ বার ভাবুন তো, মানুষকে ধুয়েমুছে পরিচ্ছন্ন করার কোনও যন্ত্র যদি থাকত? এক বার ভিতরে ঢুকলেই স্নান করিয়ে, গা মুছিয়ে, ক্রিম মাখিয়ে বার করত। না, কোনও অলীক কল্পনা নয়। এমনই যন্ত্র তৈরি করছে জাপান। কিন্তু সেই যন্ত্র কি আদৌ মানুষের জন্য সুরক্ষিত হবে? এই বিষয়ে নানা মুনির নানা মত।
জাপানের একটি সংস্থা সেই মেশিনটি তৈরি করেছে। তাদের দাবি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)পরিচালিত সেই ওয়াশিং মেশিনের ভিতরে ঢুকে পড়তে পারবেন আস্ত একটি মানুষ। তার পর তাঁকে স্নান করিয়ে, গা-হাত-পা ঘষে পরিষ্কার করিয়ে, এমনকি শুকনো করে গা মুছিয়ে তবে বার করবে যন্ত্র। শুধু তা-ই নয়, সেই মানুষটির ত্বকের ধরন বুঝে সেই মতো ময়েশ্চারাইজ়ার দিয়ে তাঁর ত্বকের যত্নআত্তিও করে দেবে। যন্ত্রটির জাপানি নাম ‘মিরাই নিনজ়েন সেন্টাকুকি’। আরও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার পর আগামী বছর সেটি প্রকাশ্যে আনবে বলে জানিয়েছে সেই সংস্থা।
কী ভাবে মানুষকে স্নান করাবে যন্ত্র?
প্রথমে যন্ত্রটির অর্ধেকটা ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ভর্তি করা হবে। তার পর যিনি স্নান করবেন তাঁকে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করা হবে।
অনেকটা বাথটবে স্নান করার মতো সেই মানুষটি তাঁর জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় বসার পরেই জলে বুদবুদ খেলতে শুরু করবে। সেগুলি সাবান ও নানা রকম বডি ওয়াশ দিয়ে তৈরি হবে, যা ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করবে।
যন্ত্রটির ভিতর থাকবে উচ্চ গতির জেট, যা থেকে জল বার হবে। আর থাকবে ৩ মাইক্রোমিটার পরিধির একটি পাইপ, যা থেকে জলের বুদবুদ তৈরি হবে। এমন ভাবে জল দেওয়া হবে, যাতে খুব ভাল ভাবে সারা শরীর ভিজিয়ে স্নান করানো যায়।
জাপানি সংস্থাটি দাবি করেছে, যন্ত্রটি পুরোপুরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত হবে। ভিতরে যিনি স্নান করছেন তাঁর ত্বকের ধরন কেমন, তা বুঝেই সাবান বা বডি ওয়াশ নির্বাচন করা হবে। ভিতরে বন্ধ অবস্থায় স্নান করতে তিনি ভয় পাচ্ছেন কি না অথবা কোনও রকম উদ্বেগে ভুগছেন কি না, তা বুঝে জলের গতি নির্ধারণ করা হবে। যন্ত্রের ভিতরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরির নানা ব্যবস্থাও করবে সেই যন্ত্র।
স্নান করানো শুধু নয়, সঠিক ময়েশ্চারাইজ়ার নির্বাচন করে ভাল করে মালিশও করে দেবে এই যন্ত্র। ভিতরের মানুষটি যাতে মানসিক চাপ-শূন্য হয়ে আনন্দে স্নান করতে পারেন, তার ব্যবস্থাও নাকি থাকবে।
এই বিষয়ে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের মত জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যে কোনও যন্ত্র নিয়ে এলেই হল না, সেটি মানুষের জন্য কতটা সুরক্ষিত তা আগে দেখতে হবে। ধরুন, যদি কারও হার্ট দুর্বল হয় অথবা হাঁপানি বা সিওপিডি-র সমস্যা থাকে, তা হলে তিনি কি ভিতরে ঢুকে উচ্চ গতির জেট পাইপে স্নান করতে পারবেন? আবার ধরা যাক, যাঁর ক্লস্ট্রোফোবিয়া আছে, বদ্ধ জায়গায় দমবন্ধ হয়ে আসে, তাঁর পক্ষেও এমন যন্ত্রের ভিতর ঢুকে স্নান করা প্রায় অসম্ভব। তাই সেটি সকলের হিতের জন্য না-ও হতে পারে।” চিকিৎসকের মত, যন্ত্র যদি বিগড়ে যায় এবং ভিতরে যিনি আছেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন, তা হলে তা ঝুঁকির ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। মানুষ দিন দিন যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছে। যে কোনও কাজেই এখন যন্ত্র চাই। স্নানও যদি যন্ত্রই করিয়ে দেয়, তা হলে কর্মক্ষমতা তো দিন দিন লোপ পাবে।
এমন ‘আলট্রাসনিক স্নান’ আদৌ সম্ভব হবে কি না বা যন্ত্রটি সাফল্যের মুখ দেখবে কি না, তা সময়ই বলবে। যদিও সংস্থার দাবি, বহু বার পরীক্ষার পরেই সেটি বাজারে নিয়ে আসা হবে। ওয়াশিং মেশিনে ঢুকে স্নান করতে হলে কিন্তু আগে থেকে বুক করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy