সারা বছর ফাস্ট ফুড! ‘বর্ষবরণ’ ও ‘জামাইষষ্ঠী’ এলেই ‘বাঙালি’ রান্নার কদর বেড়ে যায়। জামাইরাও এখন বেশি ‘লিবার্যাল’। তাঁরা চান না এই গরমে শাশুড়ি সকাল থেকে সাত পদ রান্না করুন। তার থেকে রেস্তরাঁ থেকে দুপুরে খাবারের ‘পার্সেল’ আনিয়ে নিতে বেশি পছন্দ করেন। সন্ধ্যায় মাল্টিপ্লেক্সে বসে সিনেমা দেখে কাটিয়ে রাতের খাওয়া সারার জন্য পরিবারের সকলকে নিয়ে বেছে নেওয়া ফের রেস্তরাঁর কোনও বড় টেবিল!
হালফিলের এই রেওয়াজ চলছে গত কয়েক বছর ধরে। এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। তবে ওই সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। ফলে জামাইষষ্ঠীর দুপুর থেকেই বহরমপুরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তরাঁতে চোখে পড়ার মতো ভিড় হয়। বসে খাওয়ার জন্য যতটা না, তার চেয়ে বেশি ‘পার্সেল’ নিয়ে যাওয়ার জন্য।
অনেকে ফোন করে অর্ডার দেন কিংবা টেবিল ‘বুক’ করে রাখেন। ষষ্ঠীর দুপুরে বাঙালিয়ানা নিয়ে প্রস্তুত মোহনের মোড়ের এক রেস্তরাঁ। রেস্তরাঁ মালিকদের অন্যতম সাহিদুল হোসেন বলছেন, ‘‘শুরুতেই জামাইদের আমের শরবত দিয়ে বরণ করা হবে। এ ছাড়া থাকবে ইলিশ পাতুরি, সর্ষে ইলিশ, সর্ষে পাবদা, রুই ভাপা, চিংড়ি মালাইকারি, আড় মাছের ঝোল। শেষ পাতে থাকবে মিষ্টি দই, ফিরনি। গাছ পাকা আমও থাকবে।’’
কোনও কোনও হোটেল কর্তৃপক্ষ ইলিশের হরেক রকম পদ রেঁধে খাওয়ানোর প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে এখন থেকেই। কোনও রেস্তোঁরা ট্যাংরা মাছের চচ্চড়ি থেকে তেল-কই রান্না করার কথা ভেবেছে জামাই রসনা তৃপ্তিতে। ইন্দিরা সুপার মার্কেট লাগোয়া রেস্তরাঁ মালিক অরিন্দম মণ্ডল বলছেন, ‘‘দুপুরের মেনুতে থাকছে দম পোলাও, কাশ্মীরি আলুর দম, ধোকার ডালনা, কচুর শাক, লাউ-চিংড়ি, এঁচোড় কোপ্তা, আলু পোস্ত, পোস্তর বড়া। এ ছাড়া থাকছে মৌরলা চচ্চড়ি, পাবদা, রুই পোস্ত, কালিয়া ভাপা, রুই কালিয়া, ভেটকি পাতুরি, চিংড়ির মালাইকারি, ইলিশ ভাপা। শেষ পাতে দই ও গাছপাকা আম।’’
জামাইষষ্ঠীতে কোনও খামতি রাখছেন না লালদিঘির পাড় লাগোয়া হোটেল কাম রেস্তরাঁ মালিক চন্দন সরকার। ষষ্ঠীর দুপুরের মেনুতে শুক্তো, মুড়ো ঘণ্ট, মোচার ঘণ্ট, ছোট মাছের চচ্চড়ি, চিতল মাছের মুইঠ্যা, গা-মাখা মশলা দিয়ে রুই মাছ, তেল কই, পটল দোরমা, স্টাফড্ আলু, চিংড়ির মালাইকারি রয়েছে। শেষ পাতে কাঁচা আম ও আলুবোখরার চাটনি।
বহরমপুরের শিল্পতালুকের মধ্যে গড়ে ওঠা এক হোটেলের ম্যানেজার প্রলয় তেওয়ারি বলছেন, ‘‘ইদ সপ্তাহ উদ্যাপন করছি রেস্তরাঁতে। তার মধ্যে জামাইষষ্ঠীও পড়েছে। ফলে জামাইদের কথা ভেবে মেনুতে কিছুটা হলেও রদবদল হয়েছে।’’ শেফ অনুপ দাস জানাচ্ছেন, গরম আওহাওয়াকে মাথায় রেখে মকটেল ও ককটেল রাখা হয়েছে বিভিন্ন স্বাদের। এ ছাড়া শুরুতে রাখা হয়েছে অমৃতসারি মুর্গ কাবাব, মুর্গ বাবরি কাবাব, ভেটকি মাছের ইরানি ফিস টিক্কা। সর্ষে ইলিশ, চিংড়ি মাছের মালাইকারি, দই-রুই, শুক্তো, মিষ্টি পোলাও। শেষ পাতে আমের চাটনি, মিষ্টি দই, রসগোল্লা, শাহি টুকরা, নলেন গুড়ের আইসক্রিম থাকছে। জামাইষষ্ঠীর সাবেক ছবিটা ক্রমশ বদলে গেলেও বাবাজীবনদের খাতিরদারিতে কিন্তু কমতি নেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy