এ সময়ে প্রয়োজন নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সব সময়েই দরকার৷ কোভিডের মরসুমে আরও দরকার৷ কারণ, সংক্রামক এই অসুখটির অন্যতম কোমর্বিডিটি হল বাড়তি ওজন৷ বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, সেই বাড়তি ওজনের মাত্র ৫ শতাংশ কমালেই কোভিড ও তার জটিলতার আশঙ্কা কমে যায়৷ উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা, ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের প্রকোপও নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ তার হাত ধরেও কমে কোভিডের জটিলতার আশঙ্কা৷ কাজেই ওজন কমান৷ তবে খালিপেটে থেকে নয়৷ কারণ, খিদে চেপে রাখলে খাওয়ার ইচ্ছে বেড়ে যায়, তাতে ভুলভাল খাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে৷ ঘুমের অসুবিধে হয়৷ ফলে ওজন দু’-এক কেজি কমলেও চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়ে৷ অপুষ্টি হতে পারে৷ আবার অপুষ্টি ও কম ঘুমের হাত ধরে কমতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, যা এই মুহূর্তে খুবই বিপজ্জনক৷
“অতএব ওজন কমান পেটভরে খেয়ে৷ ভাজা, মিষ্টি ও অন্যান্য হাই-ক্যালোরি খাবারের বদলে খান ফাইবারসমৃদ্ধ সুষম ঘরোয়া খাবার৷ ফাইবারের সুবিধে হল, কম খেলেও পেট ভরা থাকে৷ তার সঙ্গে মাপ মতো কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও উপকারি ফ্যাট খেলে পুষ্টি, তৃপ্তি দুই-ই হয়৷ ওজনও কমে,” জানালেন পুষ্টিবিদ সুজাতা মুখোপাধ্যায়৷
কী খাওয়া ভাল, কোনটা নয়
· আগে হয়তো একটা গোটা ডিম খাওয়ার অভ্যাস ছিল, এখন কুসুম বাদ দিয়ে ৩-৪টি ডিমের সাদা অংশ সেদ্ধ করে খেতে হবে
· রেডমিট পছন্দ হলে একেবারে ছেড়ে দেওয়ার দরকার নেই৷ চর্বি কাটছাট করে, সেদ্ধ করে জল ফেলে দিয়ে অল্প তেলে রান্না করুন৷ সপ্তাহে এক দিন দু’টুকরো খান
· ফল ছাড়া কোনও মিষ্টি খাবার খাবেন না৷ দিনে একটা কি দুটো কম মিষ্টি গোটা ফল খান
· মিষ্টি পানীয় বাদ৷ ফলের রসও৷ এ সব খেলে পেট ভরে না, এ দিকে একসঙ্গে অনেক ক্যালোরি ও চিনি শরীরে ঢুকে পড়ে৷ মাঝেমধ্যে স্মুদি খাওয়া ভাল৷ ফল দিয়ে রায়তা বানিয়েও খাওয়া যায়
· এক মুঠো ভাত কমিয়ে সে জায়গায় কম ক্যালোরির সব্জি সেদ্ধ খেতে হবে৷ যেমন পটল, ঢেঁড়শ, উচ্ছে, বেগুন ইত্যাদি৷ কম তেলে রান্না করা শাক বা পাঁচমিশালি তরকারিও খেতে পারেন৷ অর্থাৎ, ভাত-রুটি অর্ধেক করে ধাপে ধাপে শাক-সব্জি দ্বিগুণ করে দেওয়া যায়৷ সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস খেলে বেশি ফাইবার মেলে৷ সব্জির খোসা না ছাড়ালেও বেশি ফাইবার পাওয়া যায়
· মূল খাবার খাওয়ার আগে মাখন বা ড্রেসিং ছাড়া ক্লিয়ার সু্প, সব্জি বা চিকেন ব্রথ, ডাল সেদ্ধ বা স্যালাড খেলে কম খাবারে পেট ভরবে
· উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খাওয়া দরকার৷ যেমন বিন, সয়াবিন, রাজমা, ছোলা, মটর, ডাল৷ পেট ভরা থাকবে বেশি ক্ষণ
· ময়দাজাত খাবার বাদ দিতে হবে৷ ন’মাসে-ছ’মাসে এক বার পরোটা খেতে ইচ্ছে হলে হয় ময়দার সঙ্গে সব্জির পুর মেশাতে হবে, নয়তো আটা দিয়েই বানাতে হবে পরোটা৷ সবচেয়ে ভালো হয় বিভিন্ন ধরনের সব্জি মেশানো রুটি খেলে
· তেল-ঘি-মাখন যত কম খাওয়া যায়, ততই ভাল৷ তবে একেবারে বাদ দিলে চলবে না৷ ভিটামিন ডি ও ই-র শোষণ বাড়াতে তেল-ঘি প্রয়োজন৷ এর পাশাপাশি সব রকম বাদাম, বীজ, অ্যাভোক্যাডো, অলিভ অয়েল, তৈলাক্ত মাছ অল্প করে খাওয়া যায়
· বাজারে ‘লো ফ্যাট’ খাবার বলে যা পাওয়া যায়, তা না খাওয়াই ভাল৷ তাতে ফ্যাট কম থাকলেও চিনি থাকে অনেকটা৷ তার জেরে ওজন বাড়ে
· ফাস্ট ফুড ও প্রসেস করা খাবার খাওয়া যাবে না৷ কারণ, তাতে তেল-ঘি-নুন-মিষ্টি সবই বেশি থাকে
· দিনে ৫-৬ বার খেতে হবে৷ পেট ভরে প্রাতরাশ করা দরকার৷ মাঝ সকালে ফল, ঘোল, স্যালাড৷ দুপুরে ও রাতে ডাল, স্যালাড, সব্জির সঙ্গে অল্প ভাত-রুটি ও মাছ, মুরগির মাংস, ডিম আর দই। বিকেলে মুড়ি-বাদাম বা হাল্কা কিছু৷
পাশাপাশি, সকালে খালিপেটে ও রাতে খাওয়ার পরে আধ ঘণ্টা করে হাঁটলে ওজন আরও দ্রুত কমবে৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy