Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Obesity And Diabetes

স্থূলতা ও ডায়াবিটিস কি সম্পর্কিত?

শিশুবয়স থেকে অতিরিক্ত ওজন কি পরে ডায়াবিটিস ডেকে আনতে পারে, না কি জীবনশৈলী বদলে রুখে দেওয়া যায়?

—প্রতীকী চিত্র।

অরিতা ধারা ভট্ট
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৫:২৪
Share: Save:

ছ’বছরের রিভু বড় ক্লান্ত থাকে আজকাল। মুখ খুলে ঘুম, নাক ডাকাও নতুন যোগ হয়েছে। মা শ্রীতমার প্রশ্ন, এমনিতে তো ঠিকঠাকই খায়। তা হলে এত ক্লান্ত কেন?

সাত বছরের সৃষ্টির ঘাড়ের কাছে, কনুইয়ে কেমন যেন কালচে ছোপ দেখা যাচ্ছে। মা সুমনার প্রশ্ন, রোদে-গরমে ত্বকে কিছু সমস্যা হচ্ছে নাকি?

শিশু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দুটো উপসর্গই ইঙ্গিত করছে স্থূলতার দিকে। বাবা-মায়ের চোখে ছেলেমেয়ের খাওয়ার পরিমাণ কখনও বেশি হয় না। কিন্তু সেই খাবারের ফাঁক গলে ঢুকে পড়ে ওবেসিটির লক্ষণ। স্থূলতার সঙ্গে জীবনশৈলী এবং জিন দুটোরই যোগ গভীর। বাবা-মায়ের ওজন বেশি হলে বা বাইরের খাবার, তেল-মশলা জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকলে তার প্রভাব পড়ে সন্তানের শরীরেও।

—প্রতীকী চিত্র।

পরিমিত আহার জরুরি

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষের পরামর্শ, কম ওজন থাকলেও বাচ্চাকে বেশি খাওয়ানো ঠিক নয়। গ্রোথ চার্ট, বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স)-এর দিকে ছোট থেকে খেয়াল রাখতে হবে। তা না হলে স্থূলতা বাচ্চাকে শ্লথ করে দেবে। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল, ট্রাই-গ্লিসারাইড, হার্টের সমস্যা, ডায়াবিটিস সবই দেখা দিতে পারে এই বয়সে। তাই চর্বিজাতীয় খাবারে নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। ব্যায়াম, খেলাধুলো, সাইকেল চালানো, দৌড়াদৌড়ি সবই করতে দিতে হবে রোজ। চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী বললেন, “ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস এখন শিশুদের স্থূলতা নিয়েই কাজ করছে। তাঁদের ব্যাখ্যা, জিন, জীবনশৈলী, অস্বাস্থ্যকর খাবার— এই তিনটিই মূলত শিশুদের ওবেসিটির কারণ। ‘৫-২-১-০’ মডেল অনুসরণ করতে বলছেন তাঁরা। অর্থাৎ রোজ পাঁচ রকম ফল ও আনাজ, স্ক্রিন টাইম দু’ঘণ্টার বেশি নয়, এক ঘণ্টা কসরত, আর কেনা মিষ্টি পানীয় শূন্য, মানে একেবারেই দেওয়া যাবে না। সুষম খাবারের অভ্যেস করতে হবে ছোট থেকে।”

চিকিৎসকদের পরামর্শ, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মহিলাদের ওবেসিটি না থাকাই কাম্য। সুগার না থাকলেই ভাল। ধূমপানও চলবে না। প্রসবের পরে সন্তানকে ছ’মাস মায়ের দুধ খাওয়ানোই সবচেয়ে ভাল। কারণ ফর্মুলা মিল্ক খেলে বা চার মাসের আগে সলিড খাবার দেওয়া হলে বাচ্চার শরীরে তার প্রভাব পড়ে। ওজন কম থাকলেও বেশি খাওয়ানো এড়িয়ে যেতে হবে। নয়তো পরবর্তীতে হিতে বিপরীত হবে সেটাই। বাচ্চা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নতুন খাবার দিতে হবে। পরিবারের সকলে যেটা খাচ্ছেন সেটা একসঙ্গে বসে খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করাটা জরুরি। আবার স্কুল শুরু হলে টিফিন বাড়ি থেকে বানিয়ে দিতে হবে। কেক, বিস্কিট, চিপসের বদলে সুজি, ফল, আটা, চিঁড়ে দিয়ে রকমারি খাবার বানিয়ে দেওয়া যায়। স্কুলের ক্যান্টিনের খাবারও নিয়মিত খাওয়া যাবে না।

বর্তমানে শারীরিক কসরতের অভাব দেখা যায় ছোটদের মধ্যে। বাড়ির কাছের পার্কে, ছাদে একটু খেলা, দৌড়াদৌড়ি করলে বা ব্যাডমিন্টন, টেবল টেনিস বা ক্যারাটের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া গেলে ডায়াবিটিসের মতো রোগ সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যায়। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে, কেনা খাবারের বদলে বাড়িতে তৈরি খাবার খেলে সুস্থ থাকবে শরীর ও মন দুই-ই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy