Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
চুলের বয়স রুখে ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় হেয়ার বোটক্স। চুলের বৈশিষ্ট্য অটুট রেখেই চুল সুন্দর করে। তবে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে
Hair treatment

প্রাণ আসুক মুক্ত কেশে

এক দিকে চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলে অহেতুক জট পড়ে না। বিশেষত বর্ষায় অনেকের চুলই খুব ফ্রিজ়ি হয়ে যায়।

ছবি: শুভদীপ সামন্ত

ছবি: শুভদীপ সামন্ত

নবনীতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২২ ০৬:৪০
Share: Save:

ত্বকের বয়স ধরে রাখতে অনেকেই সাহায্য নেন স্কিন বোটক্সের। তেমন চুল ভাল রাখতেও হেয়ার বোটক্সের জুড়ি নেই। এক দিকে চুলের গোড়া মজবুত করে, চুলে অহেতুক জট পড়ে না। বিশেষত বর্ষায় অনেকের চুলই খুব ফ্রিজ়ি হয়ে যায়। জট পড়ে। নিয়মিত হেয়ার বোটক্স করালে কিন্তু এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চুলের বাড়বৃদ্ধিও হবে ভাল। তবে মনে রাখতে হবে, স্কিন আর হেয়ার বোটক্স এক নয়।

হেয়ার বোটক্স আসলে কী?

চুলের পুষ্টি বলা যেতে পারে। রূপবিশেষজ্ঞ ব্রিজেট জোনস বললেন, “চুলের এক ধরনের ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট এই হেয়ার বোটক্স। স্কিন বোটক্সের চেয়ে তা অনেকাংশেই আলাদা। ত্বকের বোটক্সে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়, তা হেয়ার বোটক্সে থাকে না। এই ট্রিটমেন্ট মূলত করা হয় চুলের যৌবন ধরে রাখতে। চুলের ডগা ফেটে গেলে, রুক্ষ হয়ে গেলে, চুল বেশি উঠে যেতে শুরু করলে হেয়ার বোটক্স করা হয়। এতে চুলের গোড়া মজবুত হয়, ডগা ফাটে না। আর চুলের ঔজ্জ্বল্যও বাড়ে।”

কেরাটিনের চেয়ে আলাদা

এই চিকিৎসা

চুলে স্ট্রেটনিং বা কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করালে তা চুলের গঠন ভেঙে দেয়। ধরুন কারও চুল কোঁকড়া বা তরঙ্গায়িত। কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বা হেয়ার স্ট্রেটনিং করলে সেই চুল স্ট্রেট হয়ে যায়। চুলের বন্ডিং ভেঙে যায় এই ধরনের ট্রিটমেন্টে। কিন্তু হেয়ার বোটক্সে তা হয় না। ব্রিজেট জানালেন হেয়ার বোটক্স করানোর পরেও চুলে গঠন আগের মতোই থাকে। অর্থাৎ স্ট্রেট চুল যেমন স্ট্রেট থাকবে, কার্লি বা কোঁকড়া চুলও ঠিক তেমনই থাকবে। কিন্তু চুলের টেক্সচার ভাল হয়ে যাবে। কোঁকড়া চুলে আর জট পড়বে না, রুক্ষ দেখাবে না। চুলের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয় না বোটক্সে। এটাই এর ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখা হয়।

কী ভাবে করা হয় হেয়ার বোটক্স?

 প্রথমে ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে েনওয়া হয়। দু’বার শ্যাম্পু করা হয়, যাতে চুলের উপরে জমে থাকা ধুলোময়লা, তেল পুরোটা পরিষ্কার হয়ে যায়। এ ভাবেই হেয়ার বোটক্স চিকিৎসার জন্য গোড়াতেই চুল প্রস্তুত করা হয়।

 এ বার তোয়ালে জড়িয়ে চুলের অতিরিক্ত জল শুকিয়ে নেওয়া হয়। ড্রায়ার বা অন্য কিছু দিয়ে চুল পুরো শোকানোর দরকার নেই। তোয়ালে দিয়ে চুলের অতিরিক্ত জল শুষে নিতে হবে।

 এ বার চুল বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করে নিয়ে চুলের আগা থেকে গোড়া অবধি বোটক্স লাগানো হয়।

 পুরো চুলে প্রডাক্ট লাগানো হয়ে গেলে ৪৫ মিনিট মতো তা চুলে রেখে দেওয়া হয়। সময়টা পার হয়ে গেলে চুলটা একবার হাত দিয়ে দেখে নেওয়া হয় যে তা নরম ও মসৃণ হয়েছে কিনা। সেটা হয়ে গেলে চুলে আবার শ্যাম্পু করা হয়।

 প্রডাক্ট লাগানোর পরে শ্যাম্পু করার সময়ে মনে রাখতে হবে যে, শ্যাম্পু এমন ভাবে করতে হবে যাতে সেই প্রডাক্টের ২০ শতাংশ ধুয়ে ফেলা হয়।

 এ বার চুল আঁচড়ে কোল্ড ব্লাস্ট করা হয় চুলে। এই পদ্ধতিতে একটি টুলের মাধ্যমে খুব কম তাপমাত্রায় চুলের কিউটিকলের ময়শ্চার সিল করে দেওয়া হয়। ব্রিজেট জানালেন, ড্রায়ারের কুল মোডেই এটা করা যায়। এতে চুলের ডগা ফাটার মতো সমস্যা থাকলে সেটাও ঠিক হয়ে যায়। কম তাপমাত্রায় চুলের কিউটিকল অনেক মজবুত হয়ে যায়। তাই একদম শেষে এই চিকিৎসা করা হয়।

খরচ কেমন?

চুলের দৈর্ঘ্যের উপরে নির্ভর করছে খরচ কেমন পড়বে। তবে মোটামুটি একবার হেয়ার বোটক্স করাতে চার-পাঁচ হাজার টাকা থেকে আট হাজার টাকা মতো খরচ হতে পারে। চুলের ঘনত্ব ও দৈর্ঘ্য বাড়লে বা চুলের মান যদি খুব খারাপ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রেও হেয়ার বোটক্সের খরচ বেড়ে যায়। কোন সালঁয় কী ধরনের প্রডাক্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, তার উপরেও নির্ভর করে খরচ। তবে বছরে তিন বার এই চিকিৎসা করালে চুলের জন্য আলাদা করে আর যত্নের প্রয়োজন পড়বে না। বলা যেতে পারে, প্রতি তিন-চার মাসে একবার করে চুলের ‘ম্যাজিক পোশন’-এর ব্যবস্থা করে দেয় হেয়ার বোটক্স। ষোড়শী হলেই সে হেয়ার বোটক্স করাতে পারে বলে জানালেন ব্রিজেট। তাঁর কথায়, “স্কিন বোটক্স যেমন কম বয়সে দরকার পড়ে না। চল্লিশের ঘরে পৌঁছলে বা তার আশপাশে থাকলে স্কিন বোটক্স শুরু করা যায়। হেয়ার বোটক্স তেমন নয়। এটি যেহেতু চুলের পুষ্টি জোগায়, চুল ভাল রাখে ভিতর থেকে, তাই ষোলো-সতেরো বছর বয়স থেকেই কেউ চাইলে এই ট্রিটমেন্ট করতে পারে।”

হেয়ার বোটক্স করার পরে চুলে কী ধরনের শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার লাগাবেন, সেটাও রূপবিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন। তা হলে চুলের স্বাস্থ্য বজায় থাকবে দীর্ঘ দিন। বছরের পর বছর ঘুরলে, বয়স বাড়লেও চুলের সাম্রাজ্যে তার প্রবেশ সহজ হবে না। হেয়ার বোটক্সে না হয় চুলের বয়স ধরা থাকুক যৌবনের গণ্ডিতে। সে না হয় মনে-মনে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবির সেই গানের দু’কলি গুনগুনিয়ে উঠুক, “আমার এ যৌবন...”

মডেল: বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়

মেকআপ: সৈকত নন্দী; হেয়ার: স্বরূপ দাস; পোশাক: ওনলি, কোয়েস্ট মল; বোটক্স ট্রিটমেন্ট ও লোকেশন: জলি চন্দ, স্যাটিন রোজ় সালঁ ; অ্যান্ড স্পা ফুড পার্টনার: বাবু কালচার, ডোভার লেন

অন্য বিষয়গুলি:

Hair treatment Hair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy