শারীরচর্চা মানেই অতিরিক্ত দৌড়াদৌড়ি করতে হবে বা জিমে গিয়ে ভারী ওজন তুলতে হবে, এমন নয়। এগুলোর কোনওটা না করেও ফিট আর ফ্লেক্সিবল থাকার অন্যতম উপায়, স্ট্রেচিং। হরেক রকমের স্ট্রেচিং রয়েছে। তবে তা করার আগে জেনে নিতে হবে কোনটি আপনার জন্য উপকারী। অনেকে ভাবেন স্ট্রেচিংয়ের দ্বারা ওজন কমানো যায় না। এটি ভুল ধারণা। যে কোনও ব্যায়ামের গোড়ার কথা হল স্ট্রেচিং।
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাসের কথায়, ‘‘শরীরের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়াতে স্ট্রেচিংয়ের বিকল্প নেই। এই ব্যায়াম শরীর হালকা করে। মাসল টোনড হয়। অনেক সময়ে আমাদের আলসেমি পেয়ে বসে, তখন কয়েকটা স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ় করলে চনমনে লাগে। স্ট্রেচিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, ছ’সাত বছরের বাচ্চা থেকে বয়স্করাও এগুলো করতে পারেন।’’ স্ট্রেচিংয়ের আরও একটি সুবিধে, এটি বাড়িতেই করা যায়। তবে প্রথম দিকে কোনও বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে নিলে ভাল। কারণ স্ট্রেচিংয়ে শরীরের ভঙ্গি ঠিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি। পশ্চার ভুল হলে চোট লাগার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্ট্রেচিংয়ের মুভমেন্ট ও ভঙ্গিতে সামান্য বদল এনে দেহের বিভিন্ন অংশে আলাদা ভাবে চাপ ফেলা যায়। সৌমেন দাস কয়েকটি সাধারণ স্ট্রেচিং নিয়মিত করার পরামর্শ দিলেন, যেগুলো সব বয়সেই করা যাবে। কমবয়সিরা বেশি সংখ্যায় করবেন, বয়স্করা শরীর বুঝে— পরামর্শ তাঁর।
•মাথার পিছনে দুটো হাত রেখে লক করে নিন। দু’পায়ের মধ্যে ফাঁক থাকবে। কাঁধ সোজা। এ বার শরীরটা একবার ডান দিকে হেলান, একবার বাঁ দিকে। সাইড অ্যাবসে টান পড়বে এতে। ১৬ কাউন্টে তিন বার করুন।
•হাত আর পায়ের পজ়িশন উপরের এক্সারসাইজ়ের মতো রেখেই শরীরটা ডান-বাঁয়ে ঘোরান। এটি পিঠ-কোমরের জন্য ভাল।
•কোমরে সমস্যা না থাকলে ফ্রন্ট বেন্ডিং আর ব্যাক বেন্ডিং করুন। সামনে ঝোঁকার সময়ে হাঁটু ভাঁজ হবে না। হাত দিয়ে পায়ের পাতা স্পর্শ করুন। পিছনে যাওয়ার সময়ে অল্প বেন্ড হলেও চলবে।
•সাইড ক্রসিংয়ের সময়ে দু’পায়ের মধ্যে ফাঁক রেখে দাঁড়ান। হাঁটু ভাঁজ না করে নিচু হয়ে ডান হাত দিয়ে বাঁ পায়ের পাতা আর বাঁ হাত দিয়ে ডান পায়ের পাতা ছুঁতে হবে।
•মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটো বুকের পাশে রেখে ভর দিয়ে শরীরে উপরের অংশ স্ট্রেচ করুন। কনুই ভাঁজ হবে না।
•মেঝেতে বসে একটা পা ছড়িয়ে দিন, একটা পা মুড়ে রাখুন। এ বার হাত দিয়ে পায়ের পাতা ধরার চেষ্টা করুন। মাথাটা হাঁটুতে ঠেকানোর চেষ্টা করবেন। এই অবস্থায় ১০ গুনতে থাকুন। প্রতি পায়ে পাঁচ বার করতে পারেন। একটি স্ট্রেচিং গোটা শরীরে প্রভাব ফেলে।
•লাঞ্জেস খুব ভাল স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ়। থাই, হ্যামস্ট্রিং দু’টিই টোনড হবে। একটি পা সামনে এগিয়ে হাঁটু ভাঁজ করতে হবে, আর একটা পা পিছনে দিয়ে স্ট্রেচ করে বসার মতো করে শরীরটা আপ-ডাউন করতে হবে। কাঁধ যেন সোজা থাকে। এটি প্রথমে ১০টি করে প্রতি পায়ে তিন বার যথেষ্ট।
•হ্যামস্ট্রিংয়ের ব্যায়ামের জন্য চেয়ারের উপরে পা তুলে দিয়ে বেন্ড হয়ে হাত দিয়ে পায়ের পাতা ধরতে হবে। মাথাও যতটা সম্ভব নিচু করতে হবে। মেঝের সমান্তরালে পা একদম সোজা থাকবে চেয়ারে।
•এই দু’টি ব্যায়াম খুব সহজ কিন্তু অত্যন্ত উপকারী। এক পায়ের উপরে দাঁড়িয়ে অন্য পা অল্প তুলে সামনের দিকে এগোন। এ বার পায়ের পাতা ক্লকওয়াইজ় এবং অ্যান্টিক্লকওয়াইজ় ঘোরান। ১৬ বার হয়ে গেলে অন্য পায়ে করুন। বয়স্করা এটি চেয়ারে বসে করতে পারেন। হাতের কব্জিও এ ভাবে ঘোরাতে হবে। দুটো হাত সামনের দিকে ছড়িয়ে হাত মুঠো করে রিস্ট মুভমেন্ট করুন।
উপরের সব ক’টি এক্সারসাইজ় অনায়াসে করা যায়। আরও অনেক ধরনের স্ট্রেচিং হয়, কিন্তু এই বেসিক ক’টিই রোজকার ফিটনেস-ফ্লেক্সিবিলিটির জন্য যথেষ্ট। এর সঙ্গে স্পট জগিং বা লম্বা দূরত্বে হাঁটা গেলে তো সোনায় সোহাগা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy