প্রতীকী ছবি।
কম সময়ে বেশি ঘাম ঝরানো... যে কোনও ব্যায়ামের গোড়ার কথা। সেই উদ্দেশ্য ফলপ্রসূ করার জন্য করা যেতে পারে সার্কিট ট্রেনিং। এটি এক ধরনের বডি-কন্ডিশনিং ওয়ার্কআউট। ওজন ঝরানো, পেশির ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কার্ডিয়োভাসকুলার ফিটনেস বাড়ানোর জন্য মূলত এটি করা হয়।
সার্কিট ট্রেনিং কী?
এই শারীরচর্চায় আট থেকে দশ রকমের এক্সারসাইজ় থাকে, যা খুব কম সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে। একটি ব্যায়াম থেকে অন্যটিতে যাওয়ার অন্তর্বর্তী সময় কয়েক সেকেন্ড। অর্থাৎ খুব কম সময়ের বিশ্রাম নিয়ে প্রায় পরপর কয়েকটি ব্যায়াম করতে হবে। এক একটি ব্যায়ামকে এখানে বলা হয় স্টেশন। একটি সেটের নির্ধারিত স্টেশনগুলি শেষ করলে সম্পূর্ণ হয় একটি সার্কিট।
একটি সার্কিটে কী ভাবে ব্যায়াম বাছা হবে, তা কতকগুলি বিষয়ের উপরে নির্ভর করছে। বিগিনাররা পাঁচ- সাতটি স্টেশনের সার্কিট দিয়েও শুরু করতে পারেন।
উপযোগিতা
এই ওয়ার্কআউটে তিনটি বিষয়ের উপরে জোর দেওয়া হয়। রেজ়িসটেন্স ট্রেনিং বা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, এনডিয়োরেন্স ট্রেনিং বা সহ্যক্ষমতা বাড়ানো এবং হাই-ইনটেনসিটি এরোবিক্স। ব্যায়ামগুলির নির্বাচনও সেই পদ্ধতি মেনে করা হয়। যেমন, রেজ়িসটেন্স এক্সারসাইজ়গুলি হল বডি ওয়েট, ফ্রি ওয়েট, ডাম্বল, কেটল বেলস ইত্যাদি। কার্ডিয়োভাসকুলার এক্সারসাইজ়ের মধ্যে রয়েছে রোয়িং, জগিং, স্টেশনারি সাইকলিং। ৩০ থেকে ৬০ মিনিটের সেশনে কে ক’টা সার্কিট সম্পন্ন করছে, সেটা তার শারীরিক ক্ষমতার উপরে নির্ভর করে।
সময় বেঁধে ব্যায়াম করার ফলে কতটা খাটলে একটি লেভেলে পৌঁছনো যাবে, সেটাও বোঝা যায়।
দেহের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের ব্যায়াম এই একটি ওয়ার্কআউটে হয়ে যায়। তাই রোজ ওয়ার্কআউট করার দরকার পড়ে না।
পেশির ক্ষমতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যায়াম এত দ্রুত হারে করা হয় বলে, হার্ট রেটও বেড়ে যায়। রেজ়িসটেন্স ট্রেনিংয়ের মধ্য দিয়ে পেশির ক্ষমতা বাড়ে। আবার কার্ডিয়োভাসকুলার কর্মক্ষমতাও বাড়ে এই ব্যায়ামে। আলাদা করে কার্ডিয়োভাসকুলার এক্সারসাইজ় করার দরকার হয় না।
এক-একটা সার্কিটে ভাল পরিমাণে ক্যালরি বার্ন হয়। সাধারণ ওয়েট-ট্রেনিংয়ের চেয়ে এখানে ৩০ শতাংশ বেশি ক্যালরি ঝরে। ফলে কার্ডিয়ো ট্রেনিংয়ের সুফল পাওয়া যায়। মিনিটে প্রায় দশ ক্যালরি বার্ন হয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
বাড়িতে সার্কিট ট্রেনিং
সার্কিট ট্রেনিং বাড়িতে করা যায়, আবার জিমেও করা যায়। ওয়েট নিয়ে করা যায়। আবার ওয়েট ছাড়াও করা যায়। অতিমারি আবহে বাড়িতে ওয়েট ছাড়া সার্কিট ট্রেনিংয়েই স্বচ্ছন্দ ফিটনেসপ্রেমীরা। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাস বাড়িতে কী ভাবে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে এই এক্সারসাইজ় করা যায়, তা বলে দিলেন।
• প্রথমে ১০-১৫ বার পুশ আপস।
• তার পরে ১০-১৫ বার স্কোয়াট।
• এর পরে লাঞ্জেস, দু’টি পায়ের প্রতিটির জন্য ১০-১৫ বার।
• তার পরে ১০-১৫ প্ল্যাঙ্কস।
• হাই নি জগিং বা সাধারণ জগিং (১ মিনিট)।
• তার পরে ট্রাইসেপ ডিপস ১০-১৫টি।
• অ্যাবডমিনাল ক্রাঞ্চেস ২০-৩০ বার করে দু’টি সেট।
• শেষে এক মিনিট শুয়ে সম্পূর্ণ বিশ্রাম।
• প্রতিটি ব্যায়ামের মাঝে ১০-১৫ সেকেন্ডের বিরতি।
ওয়েট-সহ সার্কিট ট্রেনিং
• প্রথমে স্কোয়াট জাম্প ১০-১৫টি।
• তার পরে ১০-১৫টি পুশ আপস।
• এর পরে কাফের এক্সারসাইজ়।
• বেঞ্চ প্রেস কয়েক সেট।
• বাইসেপ-প্রেস কয়েক সেট।
• এর পরে স্কোয়াটিং।
ওয়েট নিয়ে করতে গেলে বাড়িতে সেই বন্দোবস্ত থাকতে হবে। জিমে করলেও একটি সার্কিট ট্রেনিংয়ের কাস্টমমেড সেটআপ করে নিলে ভাল। কারণ তা না হলে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে করতেই অনেকটা সময় লেগে যাবে।
ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কয়েকটি উপায়
• বিশ্রামের সময় কমানো: যদি শুরুর দিকে প্রতিটি ব্যায়ামের মাঝে ২ মিনিটের বিরতি থাকে, তা হলে ৩০ সেকেন্ড করে তা ক্রমান্বয়ে কমানো উচিত। এতে শরীরের ক্ষমতাও বাড়বে। কম সময়ে বেশি সার্কিট
করা যাবে।
• ব্যাকওয়ার্ড সার্কিট: একটু ধাতস্থ হয়ে গেলে যে নিয়মে সার্কিটটি করছেন, সেটা উল্টো ভাবে শুরু করা যেতে পারে।
• কঠিন টাস্ক: যদি কোনও কার্ডিয়ো করতে অসুবিধে হয় বা খুব সহজেই হয়ে যায়, সেই মতো ব্যায়াম পরিবর্তন করতে হবে। শরীরের ক্ষমতা বুঝে নতুন কার্ডিয়ো যোগ করা যেতে পারে।
সার্কিট ট্রেনিং করতে শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন। কিন্তু এই ওয়ার্কআউটে কম সময়ে অনেক ধরনের ব্যায়াম করা হয় বলে একঘেয়েমি আসার সম্ভাবনা কম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy