শীতে তুলোর লেপ, উলের কম্বলের পাশাপাশি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে বৈদ্যুতিক কম্বল। —ফাইল চিত্র।
শীতের রাতে আয়েশ করে ঘুমোতে লেপ-কম্বলের উষ্ণ ওম চাই। তাই শীতে তুলোর লেপ, উলের কম্বলের পাশাপাশি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে বৈদ্যুতিক কম্বল। এটা পরিচিত ইলেকট্রিক বেড ওয়ার্মার বা ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট নামেও। বিদ্যুতের ছোঁয়ায় কম্বল গরম থাকে, উষ্ণতা বাড়ানো বা কমানো যায় মর্জিমতো। বৈদ্যুতিক কম্বলের ওজন বেশ কম হওয়ায় ঠান্ডার জায়গায় বেড়াতে গেলে ব্যাগে ভরে নিয়ে যাওয়া যায়।
ইলেকট্রিক আন্ডার ব্ল্যাঙ্কেট, ইলেকট্রিক ওভার ব্ল্যাঙ্কেট, ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট হিটেড থ্রো, সাধারণত এই তিন রকমের বৈদ্যুতিক কম্বল পাওয়া যায়। ইলেকট্রিক আন্ডার ব্ল্যাঙ্কেট বিছানা বা গদির উপরে পেতে শোয়ার জন্য। বিশেষ করে বয়স্কদের এবং যাঁদের ঠান্ডায় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তাঁরা এটা ব্যবহার করতে পারেন। ইলেকট্রিক ওভার ব্ল্যাঙ্কেট গায়ে দেওয়ার জন্য। শীতে যাঁরা ভারী লেপ কম্বল গায়ে দিতে চান না, তাঁরা এই ধরনের ইলেকট্রিক ওভার ব্ল্যাঙ্কেট ব্যবহার করতে পারেন। ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট হিটেড থ্রো দু’ভাবেই ব্যবহার করা যায়। অনেক সময়ে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ে বিশেষ ঠান্ডা থাকে না, কিন্তু রাত যত বাড়ে ঠান্ডা বাড়ে, তখন মনে হয় একটার বদলে দুটো কম্বল হলে ভাল হত। এখানেই বাজিমাত করে বৈদ্যুতিক কম্বল। প্রয়োজন মতো উষ্ণতা বাড়ানো, কমানো যায়।
কতটা সুরক্ষিত
যেহেতু বৈদ্যুতিক এবং শরীরের সংস্পর্শে আসে, তাই প্রশ্ন আসবে এই ধরনের কম্বল কতটা সুরক্ষিত? ভয় থাকে, ঘুমের মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, ফলে তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে আগুন লেগে যাবে বা শট শার্কিট হবে না তো? যে সব সংস্থা এই বৈদ্যুতিক কম্বল তৈরি করে, তারা সর্বাগ্রে সুরক্ষার দিকে জোর দেয়। কম্বলের ভিতর দিয়ে যে বৈদ্যুতিক তার থাকে তা সরাসরি গায়ে লাগে না, তার কভার করা থাকে। প্রতিটি বৈদ্যুতিক কম্বলে অটোমেটিক সেটিং ও ম্যানুয়াল সেটিং থাকে। সাধারণত ১০০ থেকে ১৫০ ওয়াটের মধ্যে হয় বৈদ্যুতিক কম্বলগুলি। এই ধরনের কম্বলের জন্য ১২ থেকে ২৭ ভোল্টেজ যথেষ্ট। এতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর থাকে অটোমেটিক শাট অফ সুইচ। এর ফলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা পর্যন্ত গরম হয়ে থেমে যায়, অনেকটা থার্মোস্ট্যাটের মতো। ফলে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পুড়ে যাওয়া বা আগুন লেগে বিপদ হওয়ার ঘটনা এড়ানো যায়। এ ছাড়া থাকে মাল্টিপল হিট সেটিং এবং টাইমার। কয়েকটি বৈদ্যুতিক কম্বলে প্রি-প্রোগ্রাম অ্যাডভান্স সেটিং থাকে, যা ব্যবহারকারীর শরীরের উষ্ণতা পরিমাপ করে কম্বল গরম করে। অর্থাৎ তাঁর জন্য যতটা উষ্ণতা প্রয়োজন, কম্বল ততটাই গরম হবে। সুরক্ষার কথা ভেবে কেনার সময় দেখে নিতে পারেন ইটিএল (ইলেকট্রিক্যাল টেস্টিং ল্যাবরেটরিজ়) বা ইউএল (আন্ডাররাইটার্স ল্যাবরেটরিজ়)-এর ছাড়পত্র আছে কি না।
সিঙ্গল, ডাবল, কিং ও কুইন ইত্যাদি নানা সাইজের বৈদ্যুতিক কম্বল পাওয়া যায়। বেশ কিছু সংস্থার ডাবল কম্বলে ডুয়াল টেম্পারেচার কন্ট্রোলার থাকে। দু’জন একই কম্বল শেয়ার করলেও, দু’জন তাঁদের প্রয়োজন মতো দু’রকমের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে উষ্ণতা নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না! পলিয়েস্টার, উল ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক কম্বল পাওয়া যায়। এই কম্বল পরিষ্কার করার আগে অবশ্যই ম্যানুয়ালে পরিষ্কার করার পদ্ধতি পড়ে নিতে হবে। আর এই কম্বলও কভার দিয়ে ব্যবহার করা ভাল, এতে ময়লা কম হবে।
সচেতনতা
অটোমেটিক শাট অফ বোতাম বা থার্মোস্ট্যাট যদি না থাকে, তা হলে শোয়ার আগে আনপ্লাগ করে নিন। তার আগে প্রয়োজন মতো কম্বল গরম করে নিন।
বৈদ্যুতিক কম্বলের মধ্যে জলের বোতল নিয়ে শুতে যাবেন না।
ব্যবহারের পরে রোল করে বা সাবধানে ভাঁজ করে তুলে রাখুন।
গর্ভবতী মহিলা, ডায়াবেটিক রোগী, ত্বকের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিরা ও শিশুদের ক্ষেত্রে এই কম্বল ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বয়স্কদের তাপমাত্রা অপারেট করা ভাল করে শিখিয়ে দিন।
হোটেলে এই কম্বল ব্যবহারের আগে দেখে নিন ইলেকট্রিক কানেকশন ঠিক মতো কাজ করে কি না। বিশেষত অপরিচিত জায়গায় এটি ব্যবহার করার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy