— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বছর দুয়েকের পিকুকে চারবেলাই মোবাইল দেখিয়ে খাওয়ায় তার মা। তাতে নাকি দুষ্টুমি কম করে পিকু। ক্লাস সেভেনের মিষ্টির হাতে আবার সারাক্ষণ মোবাইল। কখনও গেমস তো কখনও অনলাইন টিউশন। অবসরের পর টুকটাক সাহিত্য চর্চা করেন আদিত্য। যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খাতা-কলমের বদলে এখন আই-প্যাডেই বেশি স্বচ্ছন্দ তিনি। এ দিকে চাকরির খাতিরে দিনে প্রায় বারো ঘণ্টারও বেশি কম্পিউটারে চোখ রেখে সময় কাটে আকাশের।
দিনের অধিকাংশ সময়টাই গ্যাজেটের দিকে তাকিয়ে কাটান অনেকে। কেউ কাজের খাতিরে, কেউ বা নেহাত সময় কাটাতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিভি, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ, কম্পিউটার মনিটর ইত্যাদি থেকে নির্গত হয় এক ধরনের নীল আলো বা ব্লু রে, যার প্রভাব সরাসরি শরীরে পড়ে। অতিবেগুনি রশ্মির মতোই এই ব্লু রে-র তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম। ফলে চোখের বিভিন্ন কোষগুলি সহজে সেই আলো শুষে নেয়। এতে ক্ষতি হয় চোখের কোষের।
সমস্যা কী হয়?
ব্যতিক্রমও আছে
চোখ, ত্বকের ক্ষতি হলেও, এই নীল আলো কিছু ক্ষেত্রে সুবিধেও দেয়। জেনারেল ফিজ়িশিয়ান ডা. সুবীর মণ্ডল বলছেন, “বইয়ের সাদা কালো একঘেয়ে অক্ষর ক্লান্তি বাড়ায়। কিন্তু ব্লু রে থেকে ডোপামিন অর্থাৎ হ্যাপি হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে, যা শরীর ও মন চাঙ্গা রাখে। আর সে কারণেই কাগজে ছাপানো অক্ষরের বদলে গ্যাজেটের মাধ্যমে কিছু পড়লে তা সহজে মনে থাকে।” তা ছাড়া, হ্যাপি হরমোনের কারণে অবসাদ কেটে যায়, মন ভাল হয়। ডা. দেবার্পিতার কথায়, “সারা দিনে দু’ঘণ্টা (তার বেশি নয়) মোবাইল, টিভি ইত্যাদি দেখা কিন্তু চোখের পক্ষেও ভাল। এতে দূরের পাওয়ার বাড়ার সম্ভাবনা কমে।”
ব্লু রে আই গ্লাস
ডিজিটাল আই স্ট্রেন কমাতে চশমায় বিশেষ ধরনের ব্লু লাইট প্রোটেক্টর গ্লাস ব্যবহার করেন অনেকে। ডা. মণ্ডল সতর্ক করছেন, কেবল ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময়েই কিন্তু সেই চশমা ব্যবহার করবেন। সাধারণ পড়াশোনা, খেলাধুলো, গাড়ি চালানো, অন্যান্য কাজের সময়ে এই লেন্স ব্যবহার করা চোখের পক্ষে ভাল নয়। দেবার্পিতার কথায়, “ব্লু রে আই গ্লাস যে খুব কার্যকর এমনটা প্রমাণিত নয়। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই গ্লাস ব্যবহার না করাই ভাল। তবে এতে ক্ষতির কিছু নেই। বড়রা চাইলে এ ধরনের গ্লাস ব্যবহার করতেই পারেন।”
তবে উপায়?
ছোটখাটো কিছু ভাল দিক থাকলেও, নীল আলোর কারণে চোখের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। গ্যাজেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
নজরে ঘরের আলো
ঘরে লাগানো ঝকঝকে সাদা এলইডি লাইট থেকেও নির্গত হয় এ ধরনের নীল আলো। দীর্ঘ কাল যার ব্যবহারে ক্ষতি হয় চোখের। বরং ঘরে লাগানো যেতে পারে নরম হলুদ আলো বা ওয়ার্ম লাইট। এতে ঘর যেমন সুন্দর দেখাবে, ক্ষতিও কম হবে। বাচ্চার পড়ার ঘরে আলো লাগানোর সময়েও খোঁজখবর করুন।
মেনে চলুন কিছু নিয়ম
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এখন প্রযুক্তি ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। তাই সুস্থ থাকতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে নিজেদেরই।
কথায় আছে, ‘মর্নিং শোজ় দ্য ডে’। কিন্তু আপনার সকাল কেমন হবে, তা স্থির করে দেবে রাতটা কেমন কেটেছে। তাই ঘুমের আগে মোবাইল নয় এবং শরীর থেকে বেশ দূরেই রাখুন যন্ত্রটি। সব রকম সতর্কতা অবলম্বন সত্ত্বেও যদি মাথা ব্যথা, চোখ জ্বালা, জল পড়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়, তবে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মডেল: ঐশিকী বসু
ছবি: অমিত দাস
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy