দীর্ঘ সময় ধরে চলা লকডাউন শিখিয়েছে, প্রায় সব কাজই চেষ্টা করলে শিখে নেওয়া যায়। যে রান্নাঘরে জীবনে ঢোকেনি, সে-ও দিব্যি দম বিরিয়ানি বানিয়ে ছবি পোস্ট করছে, কেউ সুচ-সুতো হাতে ছেঁড়া বোতাম সেলাই করছে, কেউ আবার চুলের ডগা ছাঁটছে।
কিন্তু পার্লারের সব কাজ নিখুঁত ভাবে বাড়ি বসে করা ঝকমারি, বিশেষ করে সেটা যদি ফেশিয়াল হেয়ার রিমুভালের মতো জটিল ব্যাপার হয়। যেমন, ভ্রু-র ক্ষেত্রে শেপ ঠিক রাখা, ভ্রু-র ঠিক নীচের নরম অংশের রোম তোলা, জোড়া ভ্রু ম্যানেজ করা সহজ কথা নয়। তবে ওই যে, চেষ্টায় কী না হয়! গুগল সার্চ করলেই ভ্রু-র শেপ ঠিক রাখার নানা ভিডিয়ো পাওয়া যায়। পার্লারের মতো থ্রেডিং করতে চাইলে আঙুলে সুতো জড়ানোর প্যাঁচও দিব্যি শিখে নেওয়া যায়।
থ্রেডিং
হাতের কাছে রাখতে হবে সামান্য পাউডার, সুতোর রিল, ছোট কাঁচি আর টোনার বা বরফ-জল, তুলো। থ্রেডিং-র সুতোর রিল কিনতে পাওয়া যায়। সুতো এমন হবে, যাতে একটু টান পড়লেই ছিঁড়ে না যায়। আবার খুব কড়াও নয়। সুতো মাপমতো কেটে নিতে হবে। আইব্রো-র ক্ষেত্রে কনুই সমান, আপার লিপের ক্ষেত্রে একটু ছোট হলে ভাল। এ বার সুতোর দুই প্রান্ত একসঙ্গে ধরে গিঁট দিয়ে নিতে হবে। তার পর দু’হাতের প্রথম তিনটে আঙুলে সুতোটাকে জড়িয়ে আয়তক্ষেত্রের মতো টানটান করে রাখতে হবে। এ বার এক দিকের হাত স্থির রেখে অন্য দিকের হাত অন্তত দশ বার ঘুরিয়ে সুতোটাকে পাক খাইয়ে নিতে হবে। এ বার চাই দুই হাতের আঙুলের কেরামতি। পর্যায়ক্রমে দু’হাতের আঙুলগুলো খুলে-বন্ধ করে রোমের উপর দিয়ে টান দিলেই রোম উঠে যাবে। কিন্তু এটা প্র্যাকটিসের ব্যাপার। প্রথমেই সফল হওয়া কঠিন। থ্রেডিংয়ের আগে রোমের উপর একটু পাউডার লাগিয়ে নিতে হবে। আর থ্রেডিং-শেষে তুলোয় গোলাপজল, বা টোনার বা বরফজল নিয়ে ভাল করে লাগিয়ে দিতে হবে। এতে ত্বকের লালচে ভাব কমবে। খোঁচা খোঁচা রোমগুলো ছোট কাঁচি দিয়ে দিব্যি ম্যানেজ করা যায়।
থ্রেডিংয়ের বদলে আইব্রো শেপ-এ আনতে টুইজ়ারও ব্যবহার করা যায়। তবে এতে এক-এক করে রোম তুলতে হয় বলে, অনেকটা সময় লাগে। ঠোঁটের উপরের অংশ, চিবুক, থুতনি বা কপালের হালকা রোম টুইজ়ার দিয়ে পরিষ্কারও হয় না।
শেভিং
রোম পরিষ্কার করতে অনেকে রেজ়ার ব্যবহার করেন। মুখের রোম তোলার জন্য আলাদা সরু ব্লেডের রেজ়ার অনলাইনে পাওয়া যায়। দামও বেশি নয়। তবে মাথায় রাখতে হবে, আমাদের মুখের ত্বক ভীষণ নরম, স্পর্শকাতর। এখানে যে কোনও ধরনের ব্লেড, যতই সূক্ষ্ম হোক না কেন, ব্যবহার করা বিপজ্জনক। বিশেষ করে চোখের নীচের অংশে একদমই নয়। আবার রেজ়ার গোড়া থেকে রোম পরিষ্কার করে না বলে, কিছু দিন পর আবার কিন্তু তা গজিয়ে যায়।
হেয়ার রিমুভিং মেশিন
অনলাইনে এখন হেয়ার রিমুভিং মেশিন কিনতে পাওয়া যায়। এপিলেটর-এর ছোট সংস্করণ। এতে যন্ত্রণা ছাড়াই অনায়াসে রোমের হাত থেকে মুক্তি মেলে। অনেকটা পেন-এর মতো দেখতে ব্যাটারিচালিত যন্ত্রটি সোজা ধরে চক্রাকারে রোমের উপর বোলাতে হয়। তবে এগুলো দেখেশুনে কেনাই ভাল। আর কেনার পর নিয়মগুলো খুঁটিয়ে পড়তে হবে।
ওয়্যাক্সিং
সবচেয়ে কার্যকর ভাবে গোড়া থেকে রোম পরিষ্কার করতে পারে এই পদ্ধতি। গ্রোথও অনেক দিন অবধি কম থাকে। তবে মুখে যে কোনও ওয়্যাক্স ব্যবহার করা যায় না। কেনার সময় দেখে নিতে হবে, সেটা যেন অবশ্যই ফেশিয়াল সফট ওয়্যাক্স হয়। সেন্সিটিভ স্কিন হলে অ্যালো ভেরাযুক্ত ওয়্যাক্স ব্যবহার করা যায়। ওয়্যাক্স করার অভিজ্ঞতা না থাকলে, ওয়্যাক্স স্ট্রিপ কেনা ভাল। এতে ঝক্কি কম। শুধু ব্যবহারের আগে হাতের তালুতে অল্প ঘষে গরম করে নিতে হয়। ত্বক পরিষ্কার করে তোয়ালে দিয়ে ভাল ভাবে মুছে ত্বকের রোমযুক্ত জায়গায় লাগিয়ে হেয়ার গ্রোথের উলটো দিকে একটানে স্ট্রিপটি তুলে নিতে হবে।
রোদে পোড়া বা অ্যাকনে-যুক্ত ত্বকে ওয়্যাক্স ব্যবহার করা উচিত নয়। ত্বকে ট্রিটমেন্ট চলাকালীনও ওয়্যাক্স ব্যবহার করবেন না। ওয়্যাক্স ব্যবহারের আগে অবশ্যই অ্যালার্জি পরীক্ষা করতে হবে। এর জন্য কনুইয়ের কাছে কিছুটা ওয়্যাক্স লাগিয়ে ২৪ ঘণ্টা দেখুন, প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না। তার পর মুখে লাগান।
ঘরোয়া পদ্ধতি
যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা, তাঁরা ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। ঘরে তৈরি ওয়্যাক্স হিসেবে লেবুর রস-চিনি, লেবু-মধু, ওটমিল্ক-কলা, ডিমের সাদা অংশ-কর্নস্টার্চের মিশ্রণ তৈরি করে নেওয়া যায়। এতে বাজারচলতি প্রডাক্টের মতো অল্প সময়ে মোম-মসৃণ ত্বক পাওয়া যায় না, কিন্তু ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy