খুবই চেনা বা নামী কোনও ব্র্যান্ডের নামের বানানে সামান্য হেরফের ঘটিয়েই সাইবার অপরাধীরা তৈরি করে ফেলছে ভুয়ো ওয়েবসাইট। সেই সাইটে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করলেই গ্রাহকের ওই অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে সমস্ত টাকা! এ ভাবেই অসংখ্য মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে হোটেল বুকিং বা যে কোনও নামী শপিং সাইটের নাম ভাঙিয়ে ইউআরএল বদলে দিব্যি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা হচ্ছে। তা দেখতেও একেবারেই আসলের মতো। তা হলে আসল আর নকলের পার্থক্য করবেন কী ভাবে?
দেশের জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ জানাচ্ছে, এমন কিছু উপায় আছে, যা দেখে নকল ওয়েবসাইটি আলাদা করে চেনা যাবে। সাধারণ মানুষ সেগুলি জানেন না বলেই সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন, কী কী সেই উপায়?
১) সাইবার অপরাধীরা পরিচিত ব্র্যান্ডের নামের সামান্য হেরফের ঘটিয়ে ‘ডোমেন হোস্টিং’ সংস্থার কাছ থেকে নতুন ওয়েবসাইট কিনে ফেলছে। ওই পরিচিত ব্র্যান্ডের মতোই অবিকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলছে তারা। তার পরে ওই ওয়েবসাইটের লিঙ্ক মেল করে দিচ্ছে বিভিন্ন জনকে। যদি দেখেন আপনার মেলবক্সে অচেনা কোনও আইডি থেকে লিঙ্ক পাঠানো হয়েছে, তা হলে তা ক্লিক করবেন না। যতই প্রলোভন দেখানো হোক, ইমেলে অজানা আইডি থেকে আসা কোনও ওয়েবসাইটের লিঙ্ক খোলা উচিত হবে না।
আরও পড়ুন:
২) যে সাইটটি খুলছেন, তার ইউআরএল-এ ‘এইচটিটিপিএস’ আছে কি না, দেখতে হবে। কোনও ওয়েবসাইটে যদি ‘এইচটিটিপি’-র সঙ্গে ‘এস’ না থাকে, তা হলে বুঝতে হবে, সেই ওয়েবসাইটটি ভুয়ো।
৩) আর্থিক লেনদেন করার আগে ওয়েবসাইটটি ভুয়ো কি না তা দেখতে ইমেলে আসা লিঙ্কটি গুগ্লে সার্চ করলেই বোঝা যাবে। গুগ্লে ওই ওয়েবসাইটের নামের বানান ঠিক আছে কি না প্রশ্ন করবে। কিছু প্রশ্ন করা মানেই সেই ওয়েবসাইটটি সন্দেহজনক।
৪) ভুয়ো ওয়েবসাইটের ইউআরএলে ভুল বানান, স্মাইলি বা কোনও সাঙ্কেতিক চিহ্ন থাকতে পারে। সেটা দেখে নিতে হবে।
৫) এমন অনেক ওয়েবসাইট দেখবেন, যেখানে মোবাইল নম্বর দেওয়া আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে হোটেল বুকিং বা কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সাইট সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজতে গেলে এমন মোবাইল নম্বর দেওয়া ওয়েবসাইট পাবেন। সেগুলি বেশির ভাগই ভুয়ো। সাইবার অপরাধীরা তাদের অ্যালগরিদ্ম দিয়ে এমন নম্বর গ্রাহকদের চোখের সামনে রাখেন, যাতে নম্বরটিতে ফোন করলেই তাদের পাতা ফাঁদে পা দিতে পারেন গ্রাহকেরা।
জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ সতর্ক করে জানাচ্ছে, এখন মোবাইলেই টাকাপয়সার লেনদেন বা অনলাইন শপিং বেশি হয়। আর মোবাইলের ছোট স্ক্রিনে কোনও ওয়েবসাইটের ইউআরএল দেখা বা তার বানান পরীক্ষা করার মতো ধৈর্য কারও থাকে না। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। তাই মোবাইলে কেনাকাটা বা নেট ব্যাঙ্কিং করার সময় সতর্ক থাকতে হবে।