Advertisement
E-Paper

রজোনিবৃত্তির আগে কোন পর্যায়ে ওজন বাড়তে থাকে? মেদ জমে পেট-কোমরে, কী ভাবে কমাবেন?

রজোনিবৃত্তির তিন থেকে চার বছর আগে এমন এক পর্যায় আসে, যখন মহিলাদের শরীরে হরমোনের তারতম্য খুব বেড়ে যায়। ওই পর্বেই শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি বাড়ে, মেদ জমতে থাকে পেটে ও কোমরে।

How to deal with perimenopause weight gain

রজোনিবৃত্তির আগে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী করবেন? ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ১১:৫৩
Share
Save

রজোনিবৃত্তির পর্যায়টা খুবই কঠিন। ঋতুচক্র শুরুর যেমন নির্দিষ্ট সময় আছে, তেমনই শেষ হয়ও সময় ধরেই। কারও কিছুটা আগে, কারও পরে। ঋতুচক্র হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায় না, বরং এই পর্বটা আসে ধীরে ধীরে। রজোনিবৃত্তির দুই থেকে তিন বছর আগে এমন এক পর্যায় আসে, যখন মহিলাদের শরীরে হরমোনের তারতম্য খুব বেড়ে যায়। ওই পর্বেই শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি বাড়ে, মেদ জমতে থাকে পেটে ও কোমরে। শরীরের পাশাপাশি মানসিক দিক থেকেও অনেক বদল আসে। চিকিৎসকেরা ওই পর্বটিকে বলেন ‘পেরিমেনোপজ়’। ওই সময়টাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হয়।

এই বিষয়ে মেডিসিনের চিকিৎসক পুষ্পিতা মণ্ডলের মত, রজোনিবৃত্তির তিনটি পর্যায় আছে— ‘পেরিমেনোপজ়’, ‘মেনোপজ়’ এবং ‘পোস্টমেনোপজ়’। পেরিমেনোপোজ় বা রজোনিবৃত্তির ঠিক আগের পর্বে শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ কমতে থাকে। ফলে ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে যায়। এর জেরে এক দিকে যেমন ওজন বাড়ে, তেমনই মেজাজও ঘন ঘন বদলে যেতে থাকে। পাশাপাশি, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়ার সমস্যাও দেখা দেয়।

মহিলাদের শরীরে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ইস্ট্রোজেনের। এই হরমোনের কমবেশি হলে, নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে, যার মধ্যে একটি ‘মেটাবলিক ডিজ়অর্ডার’। যাঁরা ওই পর্বে গিয়ে ঠিকমতো শরীরচর্চা করেন না বা সুষম খাবার খান না, তাঁদের সমস্যা বাড়ে। গ্যাস-অম্বল ভোগায়, পাশাপাশি পেট, কোমর, ঊরুতে মেদ জমতে থাকে। ‘জার্নাল অফ মিড লাইফ হেল্‌থ’-এ এই বিষয়টি নিয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, পেরিমেনোপজ় পর্বে গড়ে দেড় কেজি করে ওজন বাড়তে থাকে মেয়েদের। অনেক সময়েই দেখা যায়, রজোনিবৃত্তি পর্যায়ে গিয়ে ১০ কেজির উপর ওজন বেড়ে গিয়েছে। তাই আগে থেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি।

ওজন কমাতে কী করণীয়?

১) আপনার যদি ধূমপান করার অভ্যাস থাকে, তা অবিলম্বে ত্যাগ করতে হবে। সিগারেটে থাকা নিকোটিন, শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। মদ্যপান কমিয়ে দেওয়াই ভাল।

২) মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারে এড়িয়ে চলা উচিত। এই সময়টাতে হজমের গোলমাল বেশি হয়। বমিভাব থাকে। তাই শর্করা জাতীয় খাবার, বেশি ভাজাভুজি, তেলমশলাদার খাবার না খাওয়াই ভাল।

৩) কফি খাওয়ার অভ্যাসে লাগাম পরাতে হবে। কারণ কফিতে থাকা ক্যাফিন ‘হট ফ্লাশ’-এর প্রবণতা বাড়িয়ে তোলে। দিনভর গা-জ্বালা ভাব, পেটে ব্যথা, নানা কারণে শরীরে প্রদাহ হতে পারে এই সময়। তাই চা-কফি যত কম খাওয়া যায় ততই ভাল।

৪) শরীরচর্চা করতেই হবে। কার্ডিয়ো, স্ট্রেচিংয়ের মতো ব্যায়াম খুবই ভাল। তবে সবচেয়ে ভাল যোগাসন ও প্রাণায়াম। ধনুরাসন করতে পারেন, তাতে পেট-কোমরের মেদ কমবে, শরীরও টানটান থাকবে।

ম্যাটের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই হাঁটু ভাঁজ করে গোড়ালি দুটো নিতম্বের উপর আনুন। এ বার দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি ধরুন। তার পর ধীরে ধীরে সে ভঙ্গিমাতেই ঊরু দুটি উপরের দিকে তুলুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। পিছনের অংশ উঠে যাওয়ার পরে, শরীরের সামনের দিক, অর্থাৎ মুখ থেকে বুক অবধি উপরে তুলুন। পেটের অংশ মাটিতেই থাকবে। শরীর টানটান রাখতে হবে। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকুন। তার পর ধীরে ধীরে আগের ভঙ্গিতে ফিরে যান। এই আসনে ব্যথাবেদনা কমবে। পেশির জোর বাড়বে। মনও ভাল থাকবে।

৫) সবুজ শাকসব্জি, ফল, মাছ, দুধ, ডিম পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। চেষ্টা করতে হবে সিদ্ধ বা কম তেলে রান্না করা খাবার খাওয়ার। ম্যাগনেশিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। কাঠবাদাম, পালং শাক, কুমড়োর বীজ, কলা, চিয়া বীজ, মটরশুঁটি, ঢেঁড়শ, ওট্‌স, ব্রোকোলি, অঙ্কুরিত ছোলা এবং ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে।

Menopause Weight Gain Weight Loss Tips

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}