Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
midlife crisis

মিডলাইফ ক্রাইসিসে ভুগছেন? সমাধান রয়েছে সহজ দশ উপায়ে

মিডলাইফ ক্রাইসিসকে চিনে, তাকে সামলাতে না জানলে তাই জীবনে সমস্যা বাড়ে। কী করবেন এমন সময়ে?

মিডলাইফ ক্রাইসিস সামলাতে মেনে চলুন কিছু জরুরি বিষয়। ছবি: আইস্টক।

মিডলাইফ ক্রাইসিস সামলাতে মেনে চলুন কিছু জরুরি বিষয়। ছবি: আইস্টক।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ১৬:৪২
Share: Save:

৪০-৫০। কারও কারও ক্ষেত্রে ৫০ পেরিয়ে ৫৫ পর্যন্ত বছর বয়স। জীবনকে মোটামুটি ছকে ফেলে পড়ে ফেলা হয়ে যায় এই বয়সে পৌঁছে। বাকি যেটুকু আকস্মিকতা থাকে, তা নিয়ে স্বপ্ন বা উন্মাদনাও কমতে থাকে। এই বয়সে শরীরে যৌন হরমোন কমে যাওয়ার হাত ধরে অনেক সময় গ্রাস করে হতাশা, মন খারাপ, অবসাদ৷ মনে হয় কিছুই হল না জীবনে৷ বয়স চলে যাচ্ছে, কেউ পাত্তা দিচ্ছে না৷ অসহ্য লাগে সংসারের দৈনন্দিন কাজকর্ম৷ সঙ্গ দেয় খিটখিটে মেজাজ, একঘেয়েমি, একাকিত্ব৷

মানসিক এই সব কষ্ট কমাতে কেউ প্রেমের জন্য মুখিয়ে ওঠেন, কেউ মেতে ওঠেন সাজগোজ–ক্লাব–পার্টি নিয়ে, কেউ ডুবে যান নেশায়, কেউ আবার অন্য কিছুতে৷ সব মিলে তৈরি হয় এক চূড়ান্ত অস্থিরতা৷ যার নাম ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস’৷

অনেকেরই হয়৷ কেটেও যায় ৬ মাস থেকে এক বছরে৷ আবার কেউ বা এ থেকেই শিকার হন নানা অসুখের। এমন সময়েই বিড়ম্বনা বাড়ে। মিডলাইফ ক্রাইসিসকে চিনে, তাকে সামলাতে না জানলে তাই জীবনে সমস্যা বাড়ে। কী করবেন এমন সময়ে?

আরও পড়ুন: পায়ের কড়া খুব জ্বালাচ্ছে? এ সব ঘরোয়া উপায়ে জব্দ করুন সমস্যা

ভাল করে বুঝে নিন, এই সমস্যা একা আপনার হচ্ছে এমন নয়৷ মাঝ বয়সে অনেকেরই হয়৷ জীবনে অনেক কিছু পেয়েছেন এমন মানুষেরও হয় না, এমন নয়৷ কাজে বা সংসারে স্থিতাবস্থা এলে চিন্তা–ভাবনার অবকাশ বাড়ে৷ নতুন করে সবকিছুর মূল্যায়ন করতে বসেন মানুষ৷ আর তখনই মনে হয় কত কিছু পাওয়া হয়নি৷ গ্রাস করে হতাশা, অবসাদ, অস্থিরতা৷ তবে যুক্তি মেনে চললে কেটেও যায়৷ কাজেই অস্থির হবেন না৷ ভেবে দেখুন, কম বয়সের চাহিদায় কিন্তু অনেক সময়ই অবাস্তবতা থাকে৷ যুক্তিহীন চাহিদা যে মেটে না তা বোঝার ক্ষমতা আপনার আছে৷ অতএব বাস্তব পরিস্থিতি মেনে নিন৷ যুক্তিপূর্ণ চাহিদাও মেটেনি? তা-ও হতে পারে৷ হয়তো পরিস্থিতি বিরূপ ছিল, আপনি তাকে সামলাতে পারেননি বা ঘাটতি ছিল নিজের মধ্যেই৷ যে কারণেই না পেয়ে থাকুন, তাকে নিয়ে শোক করে আজ আর কোনও লাভ নেই৷ তার চেয়ে ভেবে দেখুন যে ক্ষতি হয়েছে তা এখন আর কোনও ভাবে পূরণ করা যায় কিনা৷ না চাইতেই যা পেয়েছেন তাকে অবহেলা করছেন না তো? যে যে দায়িত্ব পালন করেছেন সে বাবদ নিজে কোনও সম্মান ফিরে পেয়েছেন? একটু ভাবলেই বুঝবেন যা পেয়েছেন, তাও কিন্তু কম নয়৷ নতুন কিছু শুরু করুন৷ ভাললাগার কাজ৷ এই বয়সে এসে এখন আপনার চাহিদা অনেক বাস্তবসম্মত, অভিজ্ঞতা আছে৷ কাজেই সাফল্যের আশা খুব বেশি৷

আরও পড়ুন: বর্ষায় হানা দেয় পেটের নানা সমস্যা, কী কী করলে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকবে সন্তান?

মানসিক ভাবে তরতাজা থাকতে পরিবারকে সময় দিন।

ভাল থাকার প্রধান অন্তরায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে দূরত্ব বেড়ে যাওয়া৷ আপনার কোনও অবহেলা বা দোষের কারণে তা হলে সে সব বদলান। না হলে মনে রাখুন, সামান্য দূরত্ব মন্দ নয় কিন্তু! বরং ঘাড়ের কাছে সারা ক্ষণ শ্বাস ফেলা সম্পর্কে বিরক্তি আনে। এই পড়ে–পাওয়া দূরত্বের কারণে হাতে যে একটু সময় এসে গিয়েছে, তাকে কাজে লাগান৷ পছন্দের কাজ করুন৷ পড়ুন৷ বেড়াতে যান৷ নিজের মনে থাকুন৷ তাঁদেরও তাঁদের মতো থাকতে দিন৷ সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে৷ ছেলেমেয়ের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশুন৷ সাপোর্ট সিস্টেম জোরদার হবে৷ যুগের হাওয়াও টের পাবেন৷ স্বামী/স্ত্রী–ও কিন্তু সাপোর্ট সিস্টেমের অঙ্গ৷ তাঁকে শ্বাস ছাড়ার অবকাশ দিয়ে, তাঁর সমস্যা বুঝে চললে একাকিত্বের হাত থেকে মুক্তি পাবেন৷ তাঁর সমস্যাও আপনারই মতো৷ একই ক্রাইসিসে ভোগার সম্ভাবনা তাঁরও৷ কাজেই অদ্ভুত আচরণ দেখলে রেগে না গিয়ে সমস্যাটা বোঝার চেষ্টা করুন৷ অভিযোগ বা হিসেবনিকেশ করবেন না৷ দু’জনেরই আগ্রহ আছে, এমন কিছু খুঁজে বার করুন৷ তারপরও একাকিত্ব না ঘুচলে মনোবিদের পরামর্শ নিন৷ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের হদিশ পেলে হা–হুতাশ করে লাভ নেই৷ এই বয়সে হয় এরকম৷ তবে সংসার ভাঙতে কেউই চান না৷ ধৈর্য ধরে, ভালবেসে কাছে টানুন৷ সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ এক বছর পরও সমস্যা না কমলে মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE