ব্যস্ত জীবনযাপনের চাপ এবং রেডিমেড অপশনের ভিড়ে অনেকেই ভরসা করেন নিউট্রিশন বারের উপরে। বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন বার কিংবা এনার্জি বার সহজেই মেলে সুপারমার্কেট, হেলথ স্টোর, জিম কিংবা অনলাইনে। যাঁরা সারা দিন বাইরে কাজ করেন, অথবা যাঁদের কাজের সূত্রে প্রচুর ট্রাভেল করতে হয়, অনেকেই ব্যাগে রাখেন এমন একটি করে বার। খিদে পেলেই কামড় বসানো যায় এতে। বাইরে থেকে অর্ডার করে খাওয়াও এড়ানো গেল, আবার বারের ‘নিউট্রিশন’ও শরীরে পুষ্টির জোগান দিল। তবে সত্যিই কি তাই? মিলের পরিবর্ত কি হতে পারে এনার্জি বার? শর্টকাটে পুষ্টিলাভের সৌজন্যে অতিরিক্ত সুগার কিংবা অবাঞ্ছিত ফ্যাট শরীরে যাচ্ছে না তো?
নিউট্রিশন বার কী?
বিভিন্ন প্রকার হাই এনার্জি ফুডের মিশ্রণে তৈরি হয় এই সাপ্লিমেন্ট বার, যা খুব তাড়াতাড়ি এনার্জির জোগান দেয়। ওটস, গ্র্যানোলা, বার্লি ও নানা সিরিয়াল এবং আমন্ড, পি-নাটের মতো বিভিন্ন বাদামের আধিক্যে তৈরি এই ধরনের ৫০-৮০ গ্রামের এক-একটি বার মোটামুটি ২০০-৩০০ ক্যালরি এনার্জি, ৩-৯ গ্রাম ফ্যাট, ৭-১৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ২০-৪০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেটের জোগান দিতে পারে।
জেনে বুঝে কিনুন
ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট হিনা নাফিস বললেন, নিউট্রিশন বার খাওয়ায় কোনও অসুবিধে নেই, যদি তার উপকরণ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকে। ‘‘কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই মিল স্কিপ করতে বাধ্য হন। তার চেয়ে ব্যাগে একটা নিউট্রিশন বার রাখাটা বুদ্ধিমানের কাজ। এতে খালি পেটে থাকাও হয় না, আবার রাস্তার ফাস্ট ফুডও খেতে হয় না। তবে প্রোটিন বার, হাই-এনার্জি বিস্কিট— যা-ই খান না কেন, তা কেনার আগে ভাল করে উপকরণ ও তার নিউট্রিশনাল ভ্যালু সম্পর্কে জেনে নিন,’’ পরামর্শ দিলেন হিনা। তবে নিয়মিত এই এনার্জি বার খাওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি। যাঁরা হাই ইন্টেন্সিটি ওয়র্ক আউট করছেন বা হাই-প্রোটিন ডায়েট ফলো করছেন, তাঁদের অনেককেই এনার্জি বার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রিফাইনড সুগারের বদলে গুড় কিংবা মধু দিয়ে সেই সব বার প্রস্তুত করার দাবি করা হলেও তা আদৌ কতটা সত্যি, তা যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন।
বার যখন বাড়িতে
ডায়াটিশিয়ান প্রিয়া আগরওয়ালের মতে, বেশির ভাগ বাজারচলতি নিউট্রিশন বারে অতিরিক্ত সুগার কনটেন্ট থাকে। ‘‘এই ধরনের বার স্বাদে মিষ্টি হয় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। সুগার-ফ্রি লেখা থাকলেও অন্য কোনও ফর্মে সুগার কনটেন্ট থাকেই। বাড়িতে তৈরি করা বাদামের লাড্ডু বা ‘গোন্দ কা লাড্ডু’ কিন্তু এর পরিবর্ত হতে পারে,’’ বললেন প্রিয়া। চাইলে বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন তিল, তিসি, বিভিন্ন ধরনের বাদাম আর গুড় দিয়ে লাড্ডু কিংবা বার। গুড়-বাদাম অথবা ওটস/গ্র্যানোলা গুড় মাখিয়ে খেতেও ভাল লাগবে।
এনার্জি বার সাধারণত মানুষ তখনই বেছে নেন, যখন হাতে সময় কম থাকে। তবে একবার বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারলে তা সঙ্গে ক্যারি করতে পারবেন সপ্তাহভর। আর কিনতে হলে, তার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই কিনুন। এ ব্যাপারে কোনও পেশাদারের মতামতও নিতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy