প্রতীকী ছবি।
বেশি চর্বি খেলে ওজন বেড়ে যায়। এই বক্তব্যটি শুধুমাত্র পরিচিত নয়, প্রচলিতও বটে। চর্বির পরিমাণ বেশি এমন খাদ্যই নাকি ওজন বাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ। কিন্তু আসলে, চর্বি খাওয়া মানেই আপনি মোটা হয়ে যাবেন, এমন নয়।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ছাড়া আমাদের শরীর কার্যত অচল। এই পরিপোষকগুলির জন্যেই শরীর সুস্থ থাকে। কাজ করা সম্ভব হয়। মনোযোগ বাড়ানো বা শরীরের সহজাত শক্তির মাত্র ধরে রাখার এমনকি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই সমস্ত ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
ফ্যাট সম্পর্কে আমাদের মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত ধারণা হচ্ছে যে, ফ্যাট শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু এই বিবরণ কখনওই সম্পূর্ণতা পেতে পারে না। এমন বহু ধরনের ফ্যাট আছে, যা স্বাস্থ্যকর। বরং শুধুমাত্র সম্পৃক্ত ফ্যাট ছাড়া প্রায় কোনও ধরনের ফ্যাটই অস্বাস্থ্যকর নয়। ঠিক পরিমাণে এবং সময়মতো খেলে, ফ্যাট আপনার শরীর সুস্থ, সচল আর সক্রিয় করে রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নীচে রইল আটটি ফ্যাটযুক্ত খাদ্য যা আপনার খাদ্য তালিকায় থাকা যথেষ্ট প্রয়োজন।
মাছ: নিঃসন্দেহে মাছ এই তালিকার সবচেয়ে উপরে থাকার যোগ্য। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উত্স হিসাবে মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ। এই ফ্যাটি অ্যাসিডগুলির কারণে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে আসে। এ ছাড়াও, এই অ্যাসিডে প্রোটিন বা অন্যান্য পরিপোষকে সমৃদ্ধ, যা মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বা বার্ধক্যের লক্ষণ কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বীজ জাতীয় খাদ্য: বিভিন্ন ধরনের বীজ, যেমন চিয়া বা সূর্যমুখীর বীজ, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। দু’চামচ এমন বীজ ডায়েটে থাকা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর জন্য বা কোষ্টকাঠিন্য থামানোর জন্য এই অ্যাসিড সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বাদাম: সব রকম বাদাম হার্টের জন্য ভীষণ স্বাস্থ্যকর। প্রত্যেক দিন বাদাম খেলে তা আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও বিভিন্ন ভিটামিনের প্রবেশ নিশ্চিত করে। হার্টের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে ভাল বাদাম হল আখরোট। ২-৩টি আখরোট দিনে খেলে তা বিভিন্ন হার্টের অসুখ রুখতে সাহায্য করে।
ডিম: ডিম শুধুমাত্র প্রোটিন নয়, ফ্যাটেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্স। ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি, বি, আর কোলিনে পরিপূর্ণ। তা লিভার, মস্তিস্ক, বা পেশীর কর্মক্ষমতার জন্য উপযোগী। বলা হয় কুসুম খাওয়া উচিত নয়, কারণ ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরলের মাত্রা খুবই চড়া থাকে। কিন্তু এটি অত্যন্ত ভুল ধারণা। ডিমের কুসুমে শুধুমাত্র ২১২ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে, যা শরীরের দৈনন্দিন পর্যাপ্ত কোলেস্টেরলের চাহিদার ৭১ শতাংশ মাত্র।
বিন্স: সয়াবিন, কিডনি বিন মতো বিনগুলি ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। তা মেজাজ ভাল রাখার জন্য এবং তদুপরি কিডনির ভাল থাকার জন্যে দরকারি। আ্যন্টি-অক্সি়ড্যান্ট, আয়রন বা ফাইবারের জন্য এই সব বিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অলিভ অয়েল: নিজের রান্না আরও স্বাস্থ্যকর করার জন্য, তাতে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দেওয়া যেতে পারে। হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই মূল্যবান একটি উপাদান হল অলিভ অয়েল। কোলেস্টেরল মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ভিটামিন ই-তে পরিপূর্ণ অলিভ অয়েল। বাড়তি ওজন ঝরানোর বা রক্তচাপ কমানোর জন্যও অলিভ অয়েল খুব সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেট এই কারণে প্রচলিত না হলেও, ফ্যাটের উত্স হিসাবে এই ধরনের চকোলেট অত্যন্ত জরুরি। তাই মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হলে, কিন্তু পুষ্টিকর জিনিস খাওয়ার কথা মাথায় রাখা জরুরি। আপনি ডার্ক চকোলেট খেতেই পারেন। ৭০ শতাংশ কোকো থাকে এমন চকোলেট ক্যালসিয়াম বা পটাশিয়ামের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দিয়ে পরিপূর্ণ। ডার্ক চকোলেট হার্টের রোগ কমানোর আর মস্তিষ্কের সক্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দুধ বা দই: দই বা দুধ পরিপোষকে পরিপূর্ণ। চিজও অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি১২, ফসফরাসের পরিমাণ এ রকম সমস্ত খাবারে অত্যন্ত বেশি। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও ভাল দুধ বা দইয়ের মতো খাবার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy