ছবি: সাটার স্টক
মহিলা হলে, ওজন খুব বেশি হলে, আবার মাঝেমাঝেই ক্র্যাশ ডায়েট বা উপোশ–টুপোশ করে রাতারাতি ওজন কমানোর প্রবণতা থাকলে, আপনি আছেন বিপদসীমার ওপারে৷ তার উপর যদি বয়স বেশি হয়, এই ধরুন ৬০–এর কাছাকাছি, ডায়াবিটিক হন, কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ খান, কম বয়সে গর্ভনিরোধক বড়ি আর ঋতুবন্ধের পর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি–র কবলে পড়ে থাকেন, বিপদের আশঙ্কা যথেষ্ট বেশি৷
এ ক্ষেত্রে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বিপদ বেশি৷ জীবনের নানা পর্যায়ে, এমনকি গর্ভাবস্থাতেও, হরমোনের যে ওঠাপড়া হয়, সে কারণেই তাঁদের গলব্লাডারে পাথর জমার প্রবণতা বাড়ে৷
গলব্লাডারে পাথর হলে অপারেশন ছাড়া যেমন গতি নেই। অপারেশন পরবর্তী জীবনেও খাবারে একটু বিধিনিষেধ থাকে৷ পার্টি–বিয়েবাড়িতে গুরুভোজন করার আগে ভাবতে হয় দু’বার৷ কাজেই যদি এমন খাবার তথা জীবনশৈলীর কথা জানা যায়, যা রোগের ঝামেলাকে একটু হলেও দূরে রাখে, তো মন্দ কী। আসুন, রোগ ঠেকাতে গেলে কী খাবেন আর কী খাবেন না, তা দেখে নিন৷
আরও পড়ুন: জিম ও সাপ্লিমেন্ট ছাড়াই বানান শরীর
রোগ ঠেকান খাবার খেয়ে
• লো–ক্যালোরির সুষম খাবার খান৷ দরকার হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন৷
• খাবারে যেন বৈচিত্র থাকে। রোজ এক ধরনের খাবার না খেয়ে সব রকম খাবার মিলিয়ে মিশিয়ে খান৷
• ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়৷ যেমন, শাক, সব্জি, ফল, হোল গ্রেইন তথা ব্রাউন রাইস, আটা–জোয়ার–বাজরা ইত্যাদির রুটি, ব্রাউন ব্রেড, খোসাওলা ডাল ইত্যাদি৷
• হজম করতে পারলে দিনে ২–৩ সার্ভিং লো–ফ্যাট দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খান৷ এক সার্ভিং–এর মানে হল ২৫০ মিলি দুধ বা এই পরিমাণ দুধে বানানো ছানা, ৫০ গ্রাম চিজ, ১৭৫ মিলিলিটার ইয়োগার্ট বা টক দই৷ ইয়োগার্টে ২ শতাংশের কম ফ্যাট থাকতে হবে৷ লোয়ার ফ্যাট চিজে দুধের প্রোটিন যেন ২০ শতাংশের কম থাকে৷ ক্রিম না খাওয়াই ভাল৷
• দিনে ২–৩ বার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান৷ এক বার খেলে, ৭৫ গ্রাম মাছ–মাংস বা চিকেন, দুটো ডিম, ৩/৪ কাপ বিন্স, শুকনো মটরশুঁটি বা মুসুর ডাল, ১৫০ গ্রাম বা ৩/৪ কাপ টোফু, ২ টেবিল চামচ পি–নাট বাটার, সিকি কাপ বাদাম৷
• মাংস বা চিকেনের যে অংশে চর্বি কম থাকে সেই অংশ খান৷ চিকেনের চামড়া ছাড়িয়ে নেবেন অবশ্যই৷ মাঝেমধ্যে নিরামিষ প্রোটিনও খাবেন৷
• রোজ কিছু না কিছু উপকারী ফ্যাট খান৷ বাদাম, মাছের তেল, অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল তো খাবেনই, ঘি–মাখন বা অন্য তেলও পুরোপুরি বাদ দেওয়ার দরকার নেই৷ কারণ ফ্যাট না খেলে গলস্টোন হয় না, এমন নয়৷ উপকারী ফ্যাট না খেলে বরং নানা রকম সমস্যা হতে পারে৷ তবে তা যেন মাত্রা না ছাড়ায়৷ দিনে ২–৩ টেবিল চামচ বা ৩০–৪৫ মিলি–র বেশি তেল খাবেন না৷ সিকি চামচ ঘি–মাখন খাবেন সপ্তাহে দু–তিনবার৷ সপ্তাহে ৩–৪ বার ২৫ গ্রামের মতো নুনহীন সেঁকা বাদাম খাবেন৷
• চিনির উপকার নেই, উল্টে অপকার আছে বিস্তর৷ কাজেই সব রকম মিষ্টি স্বাদের খাবার খাওয়া বন্ধ করুন৷ ব্যতিক্রম ফল৷ তবে ফলও বেশি খাওয়া ঠিক নয়৷ ফলের রস তো নয়ই৷
• ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয় কম করে খান৷ দিনে বার তিনেক ২৫০ মিলিলিটার কফি খেতে পারেন৷ গর্ভাবস্থায় তা নেমে আসবে দু’কাপে৷ চকলেট বা নরম পানীয়র ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন৷ চা একটু বেশি খাওয়া যায়৷ তবে তা-ও যেন মাত্রা না ছাড়ায়৷
• দিনে একটা ড্রিঙ্ক অর্থাৎ ১৫০ মিলিলিটার ওয়াইন, ৩৬০ মিলিলিটার বিয়ার চলতে পারে৷
• ওজন যাতে না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখুন৷ বেড়ে গেলে রাতারাতি কমানোর চেষ্টা না করে স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে সময় নিয়ে কমান৷
আরও পড়ুন: পরশ্রীকাতরতা অহেতুক স্ট্রেস বাড়ায়, বর্জন করুন, পরামর্শ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকারের
জীবনযাপন
• লো–ক্যালোরির সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন যাতে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরলের প্রকোপ কম থাকে৷
• ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে গর্ভনিরোধক বড়ি খাবেন না৷ ঋতুবন্ধের পর নিতান্ত প্রয়োজন না হলে হরমোন থেরাপি করানোর দরকার নেই৷
• মধ্য বয়সের মানসিক চাপ ও তার হাত ধরে ভুলভাল খাওয়া ও ওজন বৃদ্ধির সমস্যা এড়াতে দরকার রিল্যাক্সেশন থেরাপি৷ নিয়মিত ব্যায়াম, যোগা, মেডিটেশন ও হবির চর্চা সে কাজে সাহায্য করতে পারে৷ প্রয়োজনে কাউন্সেলিং করে হলেও মানসিক চাপ এড়ানোর চেষ্টা করবেন৷ চেষ্টা করবেন ভাল করে ঘুমোতে৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy