পড়া মনে রাখার কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।
একটা সময় গরমের ছুটির দুপুর কাটত হাতের লেখার অনুশীলন করে। বই দেখে দেখে পাতার পর পাতা লিখতে হত। ছুটি শেষে স্কুল খুললে হাতের লেখার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর নম্বর দিতেন শিক্ষকেরা। অনলাইন ক্লাসের যুগে অবশ্য হাতের লেখার উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয় না তেমন। পরীক্ষার খাতায় মোগল সাম্রাজ্যের পতনের কারণ কিংবা শিশুশ্রমিকের উপর কয়েকশো শব্দের রচনা লিখে আঙুলের ডগায় ব্যথা হয়ে যাওয়ারও দিন শেষ। কারণ, এখন পরীক্ষা মানেই হয় মৌখিক কিংবা প্রশ্ন থাকে ‘মাল্টিপল চয়েস’-এ।
হাতে লেখা প্রেমপত্র কি এখন আর কেউ পায়? হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট আর মেসেঞ্জারে টেক্সটের কাছে রঙিন কাগজে ভালবাসার শব্দ বুনে, যত্ন নিয়ে লেখা প্রেমের চিঠি তো কয়েক গোল খেয়েছে বটেই। ফোনে খুটখাট আর ল্যাপটপে খটাখট শব্দে টাইপে অভ্যস্ত হাত কি কলম ধরতে ভুলতে বসেছে? কিংবা এখন কি আর কেউ কাউকে কলম উপহার দেয়? সম্প্রতি পুস্তক বিপণি ‘স্টারমার্ক’-এর নয়া উদ্যোগ ‘ইঙ্ক স্টেশন’-এর উদ্বোনে এসে হাতের লেখার সে কাল-এ কাল নিয়ে কথা বললেন ক্যালিগ্রাফি শিল্পী অধ্যাপক কে.সি জনার্দন। হোয়াট্সঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম চ্যাটের জমানায় হাতের লেখা প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে, সে ধারণা একেবারে নস্যাৎ করে দিল এ দিনের আলোচনা। দ্রুতগতির সময়ে পেশাদার হয়ে উঠতে যন্ত্রকে আপন করে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই বলে কলম, কালির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হচ্ছে, এই ভাবনা ভুল। সাদা কাগজের উপর কলমের আঁচড় কেটে যে শান্তি, তা আর অন্য কোথাও নেই।
কলম পেষার অভ্যাস থাক বা ফুরিয়ে যাক, হাতের লেখা নিয়ে নানা ধারণা প্রচলিত আছে। তার মধ্যে অন্যতম হাতের লেখা দেখে মানুষ চেনা! কারও হাতের লেখা দেখে কি সত্যিই বোঝা যায় তিনি কেমন মানুষ? আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল শিল্পীর কাছে। তাঁর উত্তর, ‘‘এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এর আগে কোনও গবেষণা এর স্বপক্ষে যুক্তি দেয়নি। তাই এই বিষয়টিতে বিশ্বাস না রাখাই শ্রেয়।’’
পরীক্ষায় সফল হতে হাতের লেখার গুরুত্ব কতটা, সেটাও উঠে এল এই আলোচনায়। প্রাচীন সময়ে বেদ মনে রাখা হত শুনে শুনে। যুগ বদলেছে, পাল্টে গিয়েছে পড়াশোনার ধরনও। বইয়ের পড়া মনে রাখার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল মুখস্থ করেই সেটি খাতায় লিখে ফেলা। অধ্যাপক জনার্দন বলেন, ‘‘শুধু গড়গড়িয়ে মুখস্থ করে গেলে সব সময় মনে থাকে না। পরীক্ষার সময় আকাশপাতাল ভাবতে হয়। যখন যেটা পড়ছি, সেটা যদি খাতায় লিখে ফেলা যায়, তা হলে মনে থাকে। পড়া শব্দের চেয়েও লেখা শব্দ মনে গেঁথে যায়।’’ অনেক সময় সারা বছর পরিশ্রম করেও, পরীক্ষার ফল আশানুরূপ হয় না। পড়াশোনাতেও চাই বিশেষ ‘স্ট্র্যাটেজি’। লিখে লিখে পড়া হল সবচেয়ে সেরা কৌশল। পড়াশোনা স্মৃতিতে অটুট থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy