খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ না থাকলে মুশকিল। ফাইল ছবি।
কোভিডের মরসুমে খাওয়াদাওয়ায় খুব বেশি মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ না থাকলে মুশকিল। কিন্তু যাঁদের খাই খাই ভাব বেশি, তাঁরা তা করে উঠতে পারেন না। গৃহবন্দি থাকার ফলে একঘেয়েমি থেকেও খাওয়া বেড়ে গিয়েছে। ফাস্ট ফুড- জাঙ্ক ফুড খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলেন। কমে যায় রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। বিপদ বাড়ে। কী ভাবে এই বিপদ কাটানো যায়, সে পথ দেখিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আসুন দেখে নেওয়া যাক।
ওবেসিটি জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে জানা গিয়েছে খাবারের মোট ক্যালোরির ২৫ শতাংশ প্রোটিন থেকে এলে ভুলভাল খাবার খাওয়ার প্রবণতা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যায়। কাজেই দিনের প্রতিটি খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিন যেন থাকে, এটি খেয়াল রাখতে হবে।
হরমোন বিশেষজ্ঞ সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘খুব খিদে পেলে ভাজা বা প্রসেসড ফুডের আসক্তি বেড়ে যায়। কাজেই খিদে চেপে রাখবেন না। অল্প খিদে পেলেই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে নেবেন কিছুটা।’’
আরও পড়ুন:কাঁপুনি দিয়ে জ্বর? মূত্রের সংক্রমণ নয় তো? কী কী করতেই হবে জেনে নিন
আসক্তি কাটানোর উপায় কী
• চিউয়িং গাম মুখে রাখলে মিষ্টি এবং নোনতা খাবারের আসক্তি কিছুটা কমে বলছে গবেষণা। তবে তা যেন সুগার–ফ্রি হয়। না হলে ক্যালোরি বেড়ে গিয়ে সমস্যা আসবে। শরীরে জলের ঘাটতি না হলে খাই খাই ভাব একটু কমই হয়। কাজেই দিনে কম করে আড়াই–তিন লিটার জল খান। অল্প করে, বারে বারে।
• ঘুম কম হলে ভাজা বা মিষ্টি খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়তে পারে। কাজেই ভাল করে ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। কখনও যদি কম ঘুমের ক্লান্তি গ্রাস করে চিনি ছাড়া কালো চা বা কফি খান দু–এক কাপ।
•মানসিক চাপ বাড়লে গ্লুকোজসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা হয়। তবে তার স্থায়িত্ব থাকে ৩–৫ মিনিট। সে সময় আড্ডায়-কাজে কাটিয়ে দিতে পারলে বিপদ কমে যায়।
আরও পড়ুন:পা ফাটার সমস্যা? জব্দ করতে কী কী মানতেই হবে
পুষ্টিবিদ প্রিয়াঙ্কা মিশ্রের মত, ‘’বিপদ বাড়ে ঘরে হাই-ক্যালোরি খাবার মজুত করে রাখলে। তীব্র খিদের মুহূর্তে হাতের কাছে খাবার পেলে সামলানো যায় না। কাজেই ওরকম করবেন না। তার চেয়ে বরং কোন খাবারের বদলে কোনটা খেলে খাওয়ার ইচ্ছে কমে অথচ ক্ষতি হয় না, সেটা বুঝে সেই ধরনের খাবার রাখুন ঘরে।’‘
কোনটার বদলে কোনটা
সতীনাথ জানান, কোন খাবারের বদলে কোনটা খাবেন তা জানা খুব জরুরি। যেমন ধরুন, চিনির বদলে সুগার সাবস্টিটিউট খেয়ে ভাবলেন হাই ক্যালোরির ধাক্কা সামলেছেন, আসলে হল ঠিক এর উল্টো। চিনির গ্লুকোজ মস্তিষ্কের উদ্দীপনা নিয়ে আসে বলেই মিষ্টি খেয়ে তৃপ্তি হয়। কিন্তু সুগার সাবস্টিটিউটে তো গ্লুকোজ নেই, ফলে তা খাওয়ার পরও অতৃপ্ত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা।
কোন খাবারের বদলে কী খেলে খাওয়ার ইচ্ছে কমে অথচ ক্ষতি হয় না তা বুঝতে হবে। ফাইল ছবি।
মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে সারাদিন ধরে তাড়া করল। সেই তাড়নায় উল্টো-পাল্টা ক্যালোরি শরীরে ঢুকল অনেক। সে জন্যই যাঁরা চিনি ছাড়া চা–কফি খেতে পারেন না, তাঁদের আমরা সুগার সাবস্টিটিউটের বদলে অল্প করে চিনি দিয়ে খেতে বলি। খুব মোটা মানুষ বা ডায়াবেটিকদেরও। এতে দিনভর মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে কম থাকে।
আরও পড়ুন:ডায়াবিটিসে কী কী খাবার কীভাবে খেতে হবে
এমনভাবে চলতে হয় যাতে খাওয়ার ইচ্ছে মেটে, ক্ষতিও হয় না শরীরের। যেমন–
• চিপ্সের বদলে খান স্বাস্থ্যকর কাজু, চিনেবাদাম বা আখরোট। তাতে মন না ভরলে অল্প করে পপকর্ন খেতে পারেন।
• চকোলেট আসক্তি মাত্রা ছাড়ালে ম্যাগনেসিয়াম-সমৃদ্ধ অ্যামন্ড খেয়ে দেখুন। কাজ না হলে মিল্ক চকোলেটের বদলে খান ৭০ শতাংশ কোকাসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট।
আরও পড়ুন:ইলিশে জব্দ হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোক-স্নায়ু রোগ, আর কোন মাছে জেনে নিন
• ক্যান্ডি বা পেস্ট্রির বদলে খান ফল। কিসমিস বা খেজুর খেলেও কাজ হবে।
সতীনাথ বলেন, ‘‘ঠান্ডা পানীয়ের তেষ্টা মেটাতে তার সঙ্গে জিরো ক্যালোরি অর্ধেক অর্ধেক মিশিয়ে খান। ক্যালোরি কিছুটা কম ঢুকবে, মস্তিষ্কও তৃপ্ত থাকবে। ফলের রস মিশিয়ে স্পার্কলিং ওয়াটার খাওয়া যেতে পারে।‘’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy